আদি-বিশ্বায়ন
বিশ্বায়নের ইতিহাসের একটি পর্যায় / From Wikipedia, the free encyclopedia
আদি বিশ্বায়ন বা প্রারম্ভিক আধুনিক বিশ্বায়ন হল বিশ্বায়নের ইতিহাসের একটি পর্যায়বিশেষ, যার ব্যপ্তি ছিল মোটামুটি ১৬০০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১৮০০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রাচীন বিশ্বায়নের পরবর্তী সময়কাল। এর প্রথম সংজ্ঞা দেন ইতিহাসবিদ এ. জি. হপকিন্স এবং ক্রিস্টোফার বেইলি; এ সংজ্ঞা দ্বারা উত্তরোত্তর বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের সময়কাল নির্দেশ করা হয়, যা উনিশ শতকের তথাকথিত "আধুনিক বিশ্বায়ন"-এর পূর্ববর্তী সময়কাল।[1]
আধুনিক বিশ্বায়ন ও আদি বিশ্বায়নের সময়কালের পার্থক্য করা হয় আঞ্চলিক বিস্তার (expansionism) দ্বারা, যা ছিল বৈশ্বিক বাণিজ্যকে নিয়ন্ত্রণ করার একটি প্রক্রিয়া; এর আরেকটি পার্থক্য হল তথ্যের আদান-প্রদান বৃদ্ধি। আদি বিশ্বায়নের সময়কালটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মত সংস্থাসমূহের বাণিজ্যিক অভিযানের জন্য পরিচিত। এ সময় বিশ্বের নেতৃত্ব চলে আসতে থাকে পশ্চিম ইউরোপের জাতিসমূহের নিকট; এবং শক্তিশালী জাতিদের মধ্যে বৃহৎ পরিসরে যুদ্ধ ও সংঘাত দেখা দেয়, যেমন: ত্রিশ বছরব্যপী যুদ্ধ (Thirty Years War)। এবং অভিনব বাণিজ্যিক পণ্যের উদ্ভব ঘটে, বিশেষকরে দাস-বাণিজ্য। ত্রিভুজ বাণিজ্য ("The Triangular Trade", ইউরোপ-আফ্রিকা-আমেরিকার মধ্যবর্তী বাণিজ্য, যার কতৃত্ব ছিল ইউরোপের হাতে)-এর দ্বারা ইউরোপীয় জাতিসমূহ পশ্চিম গোলার্ধের বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের কর্তৃত্ব পেয়ে যায়। এ মহাদেশগুলোর মধ্যে নানান প্রকার উদ্ভিদ, প্রাণী ও রোগ-জীবাণুর আদান প্রদান, যাকে আলফ্রেড কসবি কলম্বিয়ান আদান-প্রদান (Columbian Exchange) নামে আক্ষায়িত করেন, এসময়কার ঘটনাবলীতে বিস্তর প্রভাব ফেলে। আদি বিশ্বায়নের সময়কার বাণিজ্য ও যোগাযোগব্যবস্থা প্রভাব ফেলে ইউরোপীয়, মুসলিম বিশ্ব, ভারতীয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় ও চীনের বিপুল জনগণের ওপর, বিশেষ করে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এর ব্যপক প্রভাব পড়ে।
আদি বিশ্বায়ন থেকে আধুনিক বিশ্বায়নে উত্তরণের একটি নির্দেশক হল এসময়কার জটিলাকার যোগাযোগব্যবস্থা, যার মূলভিত্তি ছিল পুঁজিবাদী ও প্রযুক্তিগত আদান-প্রদান; তবে এর ফলশ্রুতিতে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান উল্লেখযোগ্যভাবে রহিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]