শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
কুতুব শাহি রাজবংশ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
কুতুব শাহি রাজবংশ (উর্দু: سلطنت قطب شاهی, তেলুগু: కుతుబ్ షాహి రాజవంశము) ছিল ভারতের একটি তুর্কমেন বংশোদ্ভূত শিয়া মুসলিম রাজবংশ।[৩][৪] এই রাজবংশ তুর্কমেনিস্তানের কারা কোয়ুনলু রাজবংশের সাথে সম্পর্কিত ধরা হয়। রাজবংশের সদস্যর কুতুব শাহি নামে পরিচিত ছিলেন। বর্তমান ভারতের কর্ণাটক,অন্ধ্রপ্রদেশ,তেলেঙ্গানা অন্তর্গত এলাকা তৎকালীন গোলকুন্ডা সালতানাত তারা শাসন করেছেন।[৫] আদিল শাহি এবং নিজাম শাহিদের সাথে গোলকুন্ডা সালতানাতের সংঘর্ষ বিরতিহীনভাবে চলছিল।[৬] ১৬৩৬ সালে সম্রাট শাহজাহান কুতুব শাহিদেরকে মুঘলদের সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে বাধ্য করেন।[৬] ১৬৮৭ সাল পর্যন্ত এই অবস্থা বজায় ছিল। এরপর সম্রাট আওরঙ্গজেব গোলকুন্ডা সালতানাত জয় করেন।[৭][৮]
কুতুব শাহী পারস্য শিয়া সংস্কৃতির মহান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন[৮], অবশেষে এটি দাক্ষিণাত্যের আঞ্চলিক সংস্কৃতিও গ্রহীত হয়েছিল (তেলুগু সংস্কৃতি, ভাষা এবং উর্দুর সদ্য বিকশিত ডেকানি উপভাষায়)। কুতুব শাহীরা তাদের ধর্মনিরপেক্ষ শাসনের জন্য পরিচিত ছিল।[৯]
Remove ads
ইতিহাস


১৬শ শতাব্দীতে রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা সুলতান কুলি কুতুব-উল-মুলক তার চাচা আল্লাহ-কুলি, কিছু আত্মীয় ও বন্ধুর সাথে দিল্লি আসেন। এরপর তিনি দক্ষিণে চলে যান এবং বাহমানি সুলতান মুহাম্মদ শাহর অধীনে চাকরি নেন।[১০] বাহমানি রাজ্য দক্ষিণাত্যের পাঁচটি সালতানাতে বিভক্ত হওয়ার পর তিনি গোলকুন্ডা জয় করেন।[১০] শীঘ্রই তিনি বাহমানিদের কাছ থেকে নিজের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি কুতুব শাহ উপাধি ধারণ করেন এবং গোলকুন্ডার কুতুব শাহি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৫৪৩ সালে তার নিজের পুত্র জামশেদ কুলি কুতুব শাহ তাকে হত্যা করে সুলতান হন।[১০] পরে ১৫৫০ সালে জামশেদ ক্যান্সারে মারা যান।[১১] জামশেদের তরুণ পুত্র এক বছর শাসন করেছেন। এরপর অভিজাতরা ইবরাহিম কুলিকে সুলতান হিসেবে ক্ষমতায় বসায়।[১১] মুহাম্মদ কুলি কুতুব শাহর শাসনামলে মুসলিম ও হিন্দুদের মধ্যে সম্পর্ক মজবুত ছিল। অনেক হিন্দু রাষ্ট্রীয় উচ্চপদ লাভ করে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মন্ত্রী মদন্ন ও আক্কান্ন।
গোলকুন্ডা ও পরবর্তীকালে হায়দ্রাবাদ সালতানাতের রাজধানী ছিল।[১০] এই দুইটি শহর কুতুব শাহি সুলতানরা শোভিত করেছেন। এই রাজবংশ ১৭১ বছর গোলকুন্ডা শাসন করেছে। এরপর মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব ১৬৮৭ সালে সালতানাত জয় করেন।[১২]
Remove ads
সংস্কৃতি
কুতুব শাহি সুলতানরা স্থাপত্য এবং শিক্ষার অনুরাগী ছিলেন।[১৩] দরবারে ফার্সি সংস্কৃতি ও সাহিত্যের কদর করা হত।[৬] সুলতান মুহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ দক্ষিণী উর্দু, ফার্সি ও তেলুগু ভাষায় কবিতা রচনা করেছেন। তিনি বিপুল কাব্যের সংগ্রহ রেখে গেছেন।[১৩] পরবর্তী কবি ও লেখকরা ফার্সি, হিন্দি ও তেলুগু শব্দ ব্যবহার করে উর্দুতে রচনাকর্ম সম্পাদন করেছেন।[১৩] ১৫৩৫ সাল নাগাদ কুতুব শাহি সুলতানরা রাজস্ব ও বিচারিক ক্ষেত্রে তেলুগু ভাষার ব্যবহার শুরু করেন।[১৪]
প্রাথমিক পর্যায়ে কুতুব শাহি সুলতানরা ফার্সি সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা করলেও পরবর্তীকালে দক্ষিণাত্যের স্থানীয় সংস্কৃতিকে গ্রহণ করেন। তেলুগু ভাষা এবং উর্দুর নবগঠিত দক্ষিণী শৈলী প্রধান হয়ে উঠে। কুতুব শাহি সুলতানদের মাতৃভাষা তেলুগু না হওয়া সত্ত্বেও তারা তেলুগু ভাষায় কথা বলতে ও লিখতে পারতেন।[১৩] তেলুগুর পৃষ্ঠপোষকতার কারণে তারা তেলুগু সুলতান নামে আখ্যায়িত হয়েছিলেন।[১৫]
কুতুব শাহি স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যগতভাবে ছিল ইন্দো-ফার্সি। এতে হিন্দু, মুরিশ, মুঘল ও ফার্সি স্থাপত্যের সংমিশ্রণ ঘটেছে।[১৬] গোলকুন্ডার কিছু ইন্দো-ফার্সি স্থাপত্যের উদাহরণ হল গোলকুন্ডা দুর্গ, কুতুব শাহি সমাধি, চারমিনার, চার কামান, মক্কা মসজিদ ও তুলি মসজিদ।[১৬]
Remove ads
ধর্ম
কুতুব শাহি সুলতানরা শিয়া মতাবলম্বী ছিলেন। জুমার খুতবায় বারো জন শিয়া ইমাম এবং সাফাভিদের নাম উল্লেখ করা হত।[১৭] তবে ১৬৩৬ সালে শাহজাহান আধিপত্য স্থাপনের পর এই প্রথা বন্ধ হয়ে যায়।[১৭] শিয়া হলেও রাজ্যে সুন্নি ও হিন্দুদের প্রতি সহিষ্ণুতা দেখানো হত।[১৭]
সুলতানগণ
কুতুব শাহি বংশে আটজন সুলতান শাসন করেছেন:
- সুলতান কুলি কুতুব-উল-মুলক (১৫১৮-১৫৪৩)
- জামশেদ কুলি কুতুব শাহ (১৫৪৩-১৫৫০)
- সুবহান কুলি কুতুব শাহ (১৫৫০)
- ইবরাহিম কুলি কুতুব শাহ (১৫৫০-১৫৮০)
- মুহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ (১৫৮০-১৬১২)
- সুলতান মুহাম্মদ কুতুব শাহ (১৬১২-১৬২৬)
- আবদুল্লাহ কুতুব শাহ (১৬২৬-১৬৭২)
- আবুল হাসান কুতুব শাহ (১৬৭২-১৬৮৬)
সমাধি

কুতুব শাহি সুলতানদের সমাধি গোলকুন্ডা থেকে এক কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এসকল স্থাপনাকে খোদাই করা পাথর দিয়ে সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে এবং তা বাগান দ্বারা ঘেরা।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads