জমিয়তুল আনসার
ভারতে ব্রিটিশ শাসন উৎখাতের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি ভূতপূর্ব সংগঠন / From Wikipedia, the free encyclopedia
জমিয়তুল আনসার (উর্দু: جمعية الأنصار) ভারতে ব্রিটিশদের শাসন ক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য সশস্ত্র আন্দোলন পরিচালনার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি সংগঠন।[1] মাহমুদ হাসান দেওবন্দি তার ছাত্র ও অনুসারীদের নিয়ে ১৯০৯ সালের অক্টোবরে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। উবাইদুল্লাহ সিন্ধি সংগঠনটির প্রথম সচিব ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল পুরনো সংগঠন সামরাতুত তারবিয়াতের একটি নতুন রূপ[2], যার সূচনা হয়েছিল প্রায় ৩০ বছর আগে ১৮৭৮ সালে। সংগঠনটিকে বাহ্যিকভাবে দারুল উলুম দেওবন্দ হতে শিক্ষাপ্রাপ্ত প্রাক্তন ছাত্রদের পুনর্মিলনী সংগঠন এবং এর উদ্দেশ্য আলিগড় ওরিয়েন্টাল কলেজ এবং দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষক ও বিদ্যার্থীদের মধ্যে বন্ধুসদৃশ সম্পর্ক স্থাপন করা বলে অভিহিত করা হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি গঠনের অন্তর্নিহিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল এর মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে একটি মুজাহিদ বাহিনী গঠন করা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া।[3]
جمعية الأنصار | |
পূর্বসূরী | সামরাতুত তারবিয়াত |
---|---|
উত্তরসূরী | নাযারাতুল মাআরিফ আল কুরআনিয়া |
গঠিত | অক্টোবর ১৯০৯ (1909-10) |
প্রতিষ্ঠাতা | মাহমুদ হাসান দেওবন্দি |
বিলুপ্ত | ১৯১৩ (1913) |
আইনি অবস্থা | ধর্মীয় সংগঠন |
উদ্দেশ্য | বাহ্যিক লক্ষ্য ছিল দারুল উলুম দেওবন্দ হতে শিক্ষাপ্রাপ্ত প্রাক্তন ছাত্রদের পুনর্মিলন এবং তাদের সাথে আলিগড় ওরিয়েন্টাল কলেজের শিক্ষক ও বিদ্যার্থীদের মধ্যে বন্ধুসদৃশ সম্পর্ক স্থাপন করা, অন্তর্নিহিত লক্ষ্য ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসন উৎখাতের জন্য একটি সশস্ত্র মুজাহিদ বাহিনী গঠন করা ও তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া |
সদরদপ্তর | দেওবন্দ |
সচিব | উবাইদুল্লাহ সিন্ধি |
মাহমুদ হাসান দেওবন্দির পৃষ্ঠপোষকতা ও উবাইদুল্লাহ সিন্ধির সাচিবিক দায়িত্ব পালনের কারণে এই সংগঠনটি প্রভূত অবদান রাখতে সক্ষম হয়। এ সংগঠনের মাধ্যমে দারুল উলুম দেওবন্দের খ্যাতি ও পরিচিতি উপমহাদেশ সহ বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। মাহমুদ হাসান দেওবন্দি সংগঠনটির মাধ্যমে দারুল উলুম দেওবন্দের প্রাক্তন ছাত্রদের একই মঞ্চের আওতাধীনে আনতে সক্ষম হন। উপমহাদেশের আলেমসহ আফগান, সীমান্ত এলাকা এবং তুর্কীর অনেক আলেমগণ এই মোর্চার অন্তর্ভুক্ত হন। এসময়কালে দারুল উলুমের শিক্ষার প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয় এবং এর পক্ষ হতে উসমানীয় খিলাফতের সহায়তা করা হয়। মুখতার আহমদ আনসারি, মুহাম্মদ আলি জওহর সহ প্রমুখ বিশিষ্ট রাজনীতিবিদদের সাথে সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে সহযোগিতা করা হয়। এগুলোই ছিল জমিয়তুল আনসারের সে সময়কার উল্লেখযোগ্য অবদান। নানা কারণে সংগঠনটি দুর্বল হয়ে যায়। যার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ১৯১৩ সালে উবাইদুল্লাহ সিন্ধি নাযারাতুল মাআরিফ আল কুরআনিয়া প্রতিষ্ঠা করেন।[4]