দূরদৃষ্টি
From Wikipedia, the free encyclopedia
দূরদৃষ্টি (ইংরেজি: hypermetropia/hyperopia) বা দীর্ঘদৃষ্টি হলো চোখের একটি অবস্থা যেখানে দূরের বস্তু পরিষ্কারভাবে দেখা যায় কিন্তু কাছের বস্তু ঝাপসা লাগে। অক্ষিকাচের উপযোজন ক্ষমতা কমে যাওয়ায় আগত আলোকরশ্মি অক্ষিপট বা রেটিনায় আপতিত না হয়ে এর পশ্চাতে হয়।[6] তরুণদের ক্ষেত্রে হালকা দূরদৃষ্টির সমস্যা থাকলে অক্ষিকাচের উপযোজন ক্ষমতার কারণে তাদের দৃষ্টিশক্তিতে কোনো ত্রুটি প্রতীয়মান হয় না।[2] তবে দীর্ঘক্ষণ পড়লে চোখে টান অনুভব হতে পারে।[2] দূরের বস্তু স্পষ্ট দেখা গেলেও কাছের বস্তু ঝাপসা লাগে তাই এটি দূরদৃষ্টি নামে পরিচিত।[7] তবে দূরদৃষ্টির সমস্যা প্রকট হলে দূর ও নিকট উভয় বস্তু দেখতেই সমস্যা হবে।[2] এছাড়া অভিযোজনজনিত ত্রুটি, দ্বিনেত্রজনিত ত্রুটি, অ্যামব্লিয়োপিয়া, তির্যক দৃষ্টি প্রভৃতি সমস্যাও হতে পারে।[3] নবজাতকদের দূরদৃষ্টি থাকে, তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এটি কমে যায়।[6]
দূরদৃষ্টি | |
---|---|
প্রতিশব্দ | দীর্ঘদৃষ্টি, হাইপারমেট্রোপিয়া, হাইপারওপিয়া[1] |
দূরদৃষ্টি, লেন্সব্যতীত (শীর্ষে) ও লেন্সসহ (নিচে)। | |
বিশেষত্ব | চক্ষুবিজ্ঞান, দৃষ্টিমিতি |
লক্ষণ | কাছের বস্তু ঝাপসা দেখা, দূরের ও কাছের বস্তু ঝাপসা, চোখে টান অনুভব[2] |
জটিলতা | অভিযোজনজনিত সমস্যা, দ্বিনেত্র দৃষ্টিজনিত সমস্যা, অ্যামব্লিয়োপিয়া, তির্যক দৃষ্টি।[3] |
কারণ | অক্ষিগোলকের অক্ষীয় দৈর্ঘ্য কমে হওয়া, অক্ষিকাচ অথবা অচ্ছোদপটল বা কর্নিয়া অপেক্ষাকৃত সমতল হওয়া, আফেকিয়া বা অক্ষিকাচের অনুপস্থিতি।[2] |
ঝুঁকির কারণ | বয়োবৃদ্ধি হওয়া, বংশীয়[2] |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | চক্ষু পরীক্ষা |
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয় | অ্যামব্লিয়োপিয়া, রেট্রোবালবার অপটিক নিউরোপ্যাথি, রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা[4] |
চিকিৎসা | চশমা, কন্ট্যাক্ট লেন্স, প্রতিসরণমূলক অস্ত্রোপচার, চক্ষু মধ্যস্থিত লেন্স স্থাপন[2] |
সংঘটনের হার | ~৭.৫% (যুক্তরাষ্ট্র)[5] |
দীর্ঘদৃষ্টির অনেক কারণ রয়েছে। এটি হতে পারে যখন অক্ষিগোলকের অক্ষীয় দৈর্ঘ্য বা ব্যাসার্ধ কমে যায় অথবা লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা কমে যায় বা ফোকাস দূরত্ব বেড়ে যায় বা লেন্স বা কর্নিয়া স্বাভাবিকের তুলনায় সমতল হয়।[2] অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে অক্ষিকাচের প্রতিসরণাঙ্ক, অক্ষিকাচের অবস্থানের পরিবর্তন অথবা অক্ষিকাচের অনুপস্থিতি।[2] ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে এই রোগের পারিবারিক ইতিহাস, বহুমূত্র, কিছু ওষুধ ও চোখের আশে পাশে অর্বুদ বা টিউমার হওয়া।[4][5] এটি চোখের একধরনের প্রতিসরণজনিত দৃষ্টিত্রুটি।[5] চক্ষু পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়।[5]
চশমা, কন্ট্যাক্ট লেন্স অথবা কর্নিয়ার শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।[2] চশমা ব্যবহার করা অপেক্ষাকৃত সহজ তবে কন্ট্যাক্ট লেন্স প্রশস্ততর দৃষ্টিক্ষেত্র প্রদান করে।[2] শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে আকৃতির পরিবর্তন করা হয়।[5] প্রাথমিকভাবে অল্পবয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা থাকে, ৬ বছর বয়সে ৮% ও ১৫ বছর বয়সে ১%।[8] তারপর ৪০ বছর বয়সের পরে এই সমস্যা আবারও দেখা দেয় যা চালশে নামে পরিচিত। প্রায় অর্ধেক ব্যক্তিই এই সমস্যায় আক্রান্ত থাকে।[4] আফেকিয়া বা অক্ষিকাচ না থাকার কারণে হাইপারমেট্রোপিয়া হলে ইন্ট্রাঅকুলার লেন্স স্থাপন করতে হয়।[2] অন্যান্য দৃষ্টিত্রুটিগুলো হলো নিকটদৃষ্টি, বিষমদৃষ্টি ও চালশে।[9]