ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ
হিন্দুধর্মের অন্যতম প্রধান পুরাণ এবং বৈষ্ণব ধর্মগ্রন্থ / From Wikipedia, the free encyclopedia
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ (সংস্কৃত: ब्रह्मवैवर्त पुराण) হল একটি বৃহদায়তন সংস্কৃত ধর্মগ্রন্থ এবং হিন্দুধর্মের অন্যতম প্রধান পুরাণ।[1] এটি একটি বৈষ্ণব ধর্মগ্রন্থ। এই পুরাণের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন কৃষ্ণ ও রাধা। এটিকে অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালে রচিত পুরাণগুলির অন্যতম মনে করা হয়।[2][3][4]
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ | |
---|---|
তথ্য | |
ধর্ম | হিন্দুধর্ম |
রচয়িতা | বেদব্যাস |
ভাষা | সংস্কৃত |
অধ্যায় | ২৭৬ |
শ্লোক | ১৮,০০০ |
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ গ্রন্থের ভিন্ন একটি পাঠ সম্ভবত খ্রিস্টীয় ১ম সহস্রাব্দের শেষভাগে প্রচলিত ছিল। তবে এই গ্রন্থের অধুনা-প্রচলিত পাঠটি সম্ভবত খ্রিস্টীয় ১৫শ বা ১৬শ শতাব্দীতে ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলা অঞ্চলে লিখিত হয়।[1][2][3] ব্রহ্মকৈবর্ত পুরাণ নামে পরিচিত একটি প্রায় সমোচ্চারিত শিরোনামবিশিষ্ট গ্রন্থেরও অস্তিত্ব রয়েছে। এটি সম্ভবত দক্ষিণ ভারতের কোনো অঞ্চলে পরিমার্জিত হয়।[2] এই পুরাণের অনেকগুলি পাঠ পাওয়া যায়। পাঠভেদে এই পুরাণের অধ্যায়সংখ্যা ২৭৪ বা ২৭৬। সব কটি পাঠকেই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ বা ব্রহ্মকৈবর্ত পুরাণ গ্রন্থের অংশ বা পাণ্ডুলিপি বলে দাবি করা হয়।[5]
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ গ্রন্থের বৈশিষ্ট্য হল এই যে, এই পুরাণে কৃষ্ণকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর বলা হয়েছে এবং বিষ্ণু, শিব, ব্রহ্মা, গণেশ প্রমুখ দেবতাদের একই দেবতার বিভিন্ন রূপ এবং কৃষ্ণের অবতার বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[6] এছাড়া এই পুরাণে রাধা, দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, সাবিত্রী প্রমুখ দেবীদের ‘প্রকৃতি’র অবতার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মহাভারত ও দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থদুটিতে প্রাপ্ত কিছু উপাখ্যানও এই পুরাণে সংযোজিত হয়েছে।[7] ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ গ্রন্থের আরও একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল, এই পুরাণে রাধার মাধ্যমে নারীসত্ত্বাকে গৌরবোজ্জ্বল করা হয়েছে। এই পুরাণ নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈষম্য না রেখেই বলেছে যে, সকল নারী ব্রহ্মাণ্ডসৃষ্টির সহায়িকা শক্তি পরমাপ্রকৃতির অংশস্বরূপ এবং একজন নারীকে অপমান করা প্রকারান্তরে রাধাকেই অপমান করার নামান্তর।[2][8]
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ও ভাগবত পুরাণ গ্রন্থদুটির পৌরাণিক কাহিনিগুলি হিন্দুধর্মের কৃষ্ণ-উপাসক সম্প্রদায়গুলিতে তথা রাসলীলা প্রভৃতি নৃত্য ও শিল্পকলায় বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছে।[9][10][11]