শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

মহাজনপদ

ভারতীয় উপমহাদেশের রাজ্যসমূহ (আনুমানিক ৩৪৫ - ৬০০ খ্রিস্টপূর্ব ) উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

মহাজনপদ
Remove ads

মহাজনপদ-এর আভিধানিক অর্থ "বিশাল সাম্রাজ্য" (সংস্কৃত "महा"-মহা = বিশাল/বৃহৎ, "जनपद"-জনপদ = মনুষ্যবসতি = দেশ)। বৌদ্ধ গ্রন্থে বেশ কয়েকবার এর উল্লেখ পাওয়া যায়। বৌদ্ধ গ্রন্থ অঙ্গুত্তরা নিকায়া,[] মহাবস্তুতে ১৬টি মহাজনপদের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তারের পূর্বে ভারতের উত্তর-উত্তর পশ্চিমাংশে উত্থিত এবং বিস্তৃত হয়।

Thumb
৬০০ খ্রীষ্টপূর্বে ভারতের মানচিত্র

মহাজনপদ সমূহ

Thumb
এই বিশদ চিত্রে ভারতীয় প্রাচীন গ্রন্থসমূহে উল্লিখিত রাজ্যসমূহের অবস্থান দেখানো হয়েছে
  1. অবন্তী - বর্তমান মধ্য প্রদেশের অন্তর্গত মালব ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এই রাজ্যটি অবস্থিত ছিল। রাজ্যটি দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। উত্তরাংশে রাজধানী ছিল উজ্জয়িনী। দক্ষিণ অংশের রাজধানী মাহিম্মতী (নর্মদা নদীর তীরবর্তী বর্তমান মান্ধাতা)।
  2. অশ্মক রাজ্য - এই রাজ্যটি গোদাবরী নদীর তীরে অবস্থিত ছিল। প্রতিষ্ঠান (বর্তমান মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদ জেলার পৈঠান ) ইহার রাজধানী ছিল।
  3. অঙ্গ - মগধের পূর্বদিকে এই রাজ্য অবস্থিত ছিল। চম্পা (বর্তমান বিহারের অন্তর্গত ভাগলপুরের সন্নিকটে) এই রাজ্যের রাজধানী ছিল। বিম্বিসার এই রাজ্যকে মগধের অন্তর্ভুক্ত করেন।
  4. কম্বোজ - কম্বোজের অবস্থান ছিল সম্ভবত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে, কারণ সাহিত্য ও শিলালিপিতে প্রায়ই গান্ধারের সঙ্গে একত্রে কম্বোজের উল্লেখ দেখা যায়।
  5. কাশী - এর রাজধানী ছিল বারাণসী। প্রথমে মহাজনপদ গুলির রে কাশী সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী রাজ্য ছিল, কিন্তু পরে কোশল সমধিক শক্তিশালী হয়ে উঠে।
  6. কুরু - এই রাজ্যের রাজধানী ছিল ইন্দ্রপ্রস্থ (দিল্লির নিকটে)। অপর একটি প্রধান নগর ছিল হস্তিনাপুর । খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে এই রাজ্যের বিশেষ রাজনৈতিক গুরুত্ব ছিল না।
  7. কোশল - মোটামুটি ভাবে বর্তমান অযোধ্যাকে (উত্তর প্রদেশের অংশ) আমরা কোশল রাজ্য বলিয়া চিহ্নিত করিতে পারি। কোশলের রাজধানী ছিল শ্রাবস্তী (বর্তমান উত্তর প্রদেশের গোন্দ৷ জেলার অন্তর্গত সাহেত মাহেত)। অপর দুইটি প্রধান নগরী ছিল আযোধ্যা ও কপিলাবস্ত। খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্য ভাগে কাশী কোশল রাজ্যের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়।
  8. গান্ধার - কাশ্মীর ও তক্ষশীলা অঞ্চল ইহার অন্তর্ভুক্ত ছিল। রাজধানী ছিল তক্ষশীলা (পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি জেলায় অবস্থিত)।
  9. চেদি রাজ্য - _বর্তমান মধ্য প্রদেশের বুন্দেলখণ্ড ও সন্নিহিত অঞ্চলে এই রাজা অবস্থিত ছিল। ইহার রাজধানী ছিল শুক্তিমতী (বর্তমান উত্তর প্রদেশের বান্দার নিকট)।
  10. বজ্জি অথবা বৃজি - আটটি খন্ডজাতিগুলির অধিকৃত অঞ্চল সম্মিলিত করে এই যুক্তরাষ্ট্র সংগঠিত হয়েছিল। খন্ড জাতিগুলির মধ্যে বৃজি কুল, বৈদেহী কুল, লিচ্ছবি কুল ও জ্ঞাতৃক কুল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। বৃজি ও লিচ্ছবিকুলের এবং সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ছিল বৈশালী (বর্তমান বিহারের মুজাফরপুর জেলার অন্তর্গত বসার ও বখিরা)। কোন কোন আধুনিক ঐতিহাসিকের মতে, লিচ্ছবিগণ ছিল মোঙ্গল বংশোদ্ভূত। বৈদেহী কুলের রাজধানী ছিল মিথিলা (বর্তমান নেপালের অন্তর্গত জনকপুর)। জৈন গুরু মহাবীর জ্ঞাতৃক কুলে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন । জ্ঞাতৃকগণ বৈশালী নগরীর প্রান্তস্থিত কুন্দপুর ও 'কোল্লাগা অঞ্চলে বাস করিত।
  11. বংশ বা বৎস রাজ্য - অবস্তীর উত্তর-পৃর্বে, যমুনা নদীর তীরে, বৎস রাজ্য অবস্থিত ছিল। ইহার রাজধানী ছিল কৌশাম্বী (বর্তমান এলাহাবাদের নিকটবর্তী কোশম)।
  12. পাঞ্চাল - বর্তমান উত্তর প্রদেশের রোহিলখণ্ড ও গঙ্গা-যমুনা দোয়াবের মধ্যভাগে পাঞ্চাল রাজা অবস্থিত ছিল। গঙ্গা নদী দেশটিকে ছুই ভাগে বিভক্ত করিয়াছিল - উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চল। উত্তরাঞ্চলের রাজধানী ছিল অহিচ্ছত্র (বর্তমান উত্তরপ্রদেশের বেরেলি জেলার রামপুর) এবং দক্ষিণাঞ্চলের রাজধানী ছিল কাম্পিল্য৷
  13. মগধ - বর্তমান বিহার রাজ্যের পাটনা ও গয়া জেলা নিয়ে এই রাজ্যটি গঠিত ছিল। প্রথমে গয়ার নিকটবর্তী পর্বত শ্রেণীর মধ্যে অবস্থিত, রাজগিরের নিকটবর্তী, গিরিব্রজ এই রাজ্যের রাজধানী ছিল। পরে রাজধানী রাজগৃহে স্থানান্তরিত হয়। সর্বশেষে রাজধানী হয় পাটলিপুত্র।
  14. মৎস্য রাজ্য - এই রাজ্যের রাজধানী ছিল বিরাটনগর (বর্তমান রাজস্থানের জয়পুরের সন্নিকটে বৈরাট)।
  15. মল্ল রাজ্য - মল্লদের রাজ্য সম্ভবতঃ বৃজি রাষ্ট্রের উত্তরে অবস্থিত ছিল। ইহা দুইটি প্রধান অংশে বিভক্ত ছিল - এক অংশের রাজধানীর নাম কুশীনারা (উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত); অপর অংশের রাজধানী ছিল পাবা (কুশীনারার সন্নিকটে)। বৃজি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যায় এই রাজ্যেও অভিজাততন্ত্র (Oligarchy)) প্রচলিত ছিল, তবে গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাবের পূর্বে ইহা ছিল রাজ তন্ত্র শাসিত।
  16. শূরসেন রাজ্য - ইহার রাজধানী ছিল মথুরা
Remove ads

পটভূমি

প্রাচীন ইন্দো-আর্য্য রাজনৈতিক গঠনের সূত্রপাত হতে শুরু করে 'জন' (অর্থ-প্রজা/ব্যক্তি:উচ্চারণ-জনো) নামীয় অর্ধ যাযাবর গোত্রসমূহের মাধ্যমে। প্রাচীন বৈদিক পুস্তকসমূহে আর্যদের বিভিন্ন জন বা গোত্রের কথা পাওয়া যায়, যারা অর্ধযাযাবর গোত্রীয় কাঠামোতে বসবাস করত এবং নিজেদের ও অন্যান্য অনার্যদের সাথে গরু, ভেড়া ও সবুজ তৃণভূমি নিয়ে মারামারি করত। এই সূচনালগ্নের বৈদিক 'জন' নিয়েই মহাকাব্যীয় যুগের জনপদ গঠিত হয়।

Remove ads

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads