মানব বিবর্তন
মানুষের অভিব্যক্তির ধারা / From Wikipedia, the free encyclopedia
মানব বিবর্তন বলতে প্রাইমেটদের ধারাবাহিক বিবর্তন এর মাধ্যমে অন্যান্য হোমিনিড থেকে একটি আলাদা প্রজাতি হিসেবে হোমো স্যাপিয়েন্স-দের (মানুষ) উদ্ভব বা বিবর্তনীয় ইতিহাসকে বোঝায়। বিবর্তনের এই ধারায় বানর ও বনমানুষও রয়েছে। এর ফলে মানুষের দ্বিপদতা (দু’পায়ে ভর করে চলা), দক্ষতা ও জটিল ভাষার মতো বৈশিষ্ট্যগুলো ধীর ও পর্যায়ক্রমিকভাবে উন্নতি লাভ করেছে বলে মনে করা হয়।[1] সেই সাথে হোমিনিড এর উপপ্রজাতিগুলোর (যেমনঃ আফ্রিকান হোমিনিড উপপ্রজাতি) আন্তঃপ্রজনন[2] ইঙ্গিত করে যে মানুষের বিবর্তন সরল রৈখিক নয়, বরং জালের মতো ছড়ানো।[3][4][5][6] এই বিষয়টি নিয়ে অধ্যয়ন করতে হলে শারীরিক ও বিবর্তনীয় নৃবিজ্ঞান, জীবাশ্মবিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব ও জিনতত্ত্বসহ বিজ্ঞানের অনেক শাখার সাহায্য নিতে হয়।[7][8]
প্রাইমেটরা অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি বছর আগে ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষের দিকে প্যালিওসিন যুগে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।[9] তাদের প্রথমদিকের জীবাশ্মগুলি প্রায় সাড়ে ৫ কোটি বছর পূর্বেকার। প্রাইমেটরা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন গ্রুপের প্রজাতি বা প্রজন্ম সৃষ্টি করে যা এপ (বনমানুষ) সুপারফ্যামিলিতে নিয়ে যায় এবং শ্রেণিবিন্যাসগত দিক থেকে হোমিনিডস এবং গিবন পরিবারের জন্ম দেয়। বিভক্তির এই সময়কাল ছিল প্রায় ১.৫ থেকে ২ কোটি বছর পূর্বের। আফ্রিকান এবং এশিয়ান হোমিনিডস্ (যেমন: ওরাং ওটাং) এর বিভক্তি ঘটেছে প্রায় ১.৪ কোটি বছর আগে। গরিলিনি উপজাতি (গরিলা) থেকে হোমিনিনস (যেমন: অস্ট্রালোপিথেসিন ও প্যানিনা উপজাতি) দের বিচ্ছিন্ন হয়েছিল প্রায় ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ বছর পূর্বে; আর অস্ট্রালোপিথেসাইন (যেমন: মানুষের বিলুপ্ত দ্বিপদ পূর্বপুরুষ) ৪০-৭০ লক্ষ বছর আগে গণপ্যান (শিম্পাঞ্জি ও বোনোবোস) থেকে পৃথক হয়েছিল।[10] হোমো গণের অস্থিত্ব প্রায় ২০ লক্ষ বছর আগে হোমো হ্যাবিলিস (প্রজাতি) এর উপস্থিতি দ্বারা প্রমাণিত হয়, যেখানে শারীরবৃত্তীয়ভাবে আধুনিক মানুষের আবির্ভাব প্রায় ৩,০০,০০০ (৩ লক্ষ) বছর আগে আফ্রিকাতে হয়েছিল।