শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
রোমান সাম্রাজ্য
রোম্য প্রজাতন্ত্রের অনুসরণে রোম্য সাম্রাজ্যের সময়কাল (২৭ খ্রীষ্টপূর্ব-১৪৫৩ খ্রীষ্টাব্দ) উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
রোমান সাম্রাজ্য (লাতিন: Imperium Rōmānum; ইম্পেরিউম্ রোমানুম্) প্রাচীন রোমান সভ্যতার একটি পর্যায়, সাম্রাজ্যটি একজন সম্রাটের নেতৃত্বে থাকা সরকারের দ্বারা পরিচালিত হত এবং রোমান সাম্রাজ্যের শাসনাধীন অঞ্চলসমূহ ভূমধ্যসাগরের চারিদিকে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। খ্রিঃপূঃ ১০০-৪০০ খ্রিঃ পর্যন্ত রোম পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম নগরী ছিল[৫], এবং রোমান সাম্রাজ্যের জনসংখ্যা ৫০-৯০ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছিল (যা তৎকালীন সময়ে পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় ২০% ছিল)।[৬] এর আগে গৃহযুদ্ধ এবং রাজনৈতিক সংঘাতের ফলে রোমে বিরাজমান ৫০০ বছরের রোমান প্রজাতন্ত্রে চরম অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। অস্থিরতার ঐ সময়ে জুলিয়াস সিজার কে স্থায়ী ডিক্টেটর বা ন্যায়পালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। খ্ৰী:পূ: ৪৪-তে তাকে কয়েকজন ষড়যন্ত্রকারীরা হত্যা করে। ফলস্বরূপ গৃহযুদ্ধ এবং হত্যালীলা অব্যাহত থাকে। সিজারের পোষ্য পুত্র অক্টাভিয়ান খ্রী:পূ: ৩১-এ এক্টিয়ামের যুদ্ধে মার্ক এন্টনী এবং ক্লিওপেট্রাকে পরাজিত করে। এরপর অক্টাভিয়ান অদমনীয় হয়ে উঠে এবং খ্রী:পূ: ২৭-এ রোমান সিনেটে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অসীম ক্ষমতা দেয়ার সাথে আউগুস্তুস উপাধি প্রদান করে যা রোমান সাম্রাজ্যের শুরুর একটি মাইলফলক।
রোমান প্রজাতন্ত্র প্রায় ১৪০০ বছর ধরে প্রচলিত ছিল। এর প্রথম দুই শতক রাজনৈতিক সুস্থরতা এবং সমৃদ্ধির কারণে এদের “রোমান শান্তি”র যুগ হিসেবে অভিহিত করা হয়। অক্টেভিয়ানের বিজয়ের পর রোমান সাম্রাজ্যের পরিসর নাটকীয়ভাবে সম্প্রসারিত হয়। ৪১ সালে কেলিগুলার হত্যার পর সিনেটে পুনরায় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ইতোমধ্যে প্রেইটোরিয়ান দেহরক্ষী বাহিনী ক্লডিয়াসকে সম্রাট ঘোষণা করে। ক্লডিয়াসের নেতৃত্বে রোমানরা ব্রিটানিয়াকে নিজ সাম্রাজ্যের অন্তর্গত করে। অক্টেভিয়ানের পর এটাই ছিল সর্ববৃহৎ রাজ্য বিস্তারের ঘটনা। ক্লডিয়াসের পরবর্তী সম্রাট নীরো ৬৮ সালে আত্মহত্যা করার পর পুনরায় রাজনৈতিক অস্থিরতার উদ্ভব হয়। গৃহযুদ্ধ এবং বিদ্রোহের (ইহুদী-রোমান যুদ্ধ) সময় চারজন সেনাধ্যক্ষক সম্রাট ঘোষণা করা হয়। ৬৯ সালে ভেসপাসিয়ানে বিজয় লাভ করে এবং ফ্লেভিয়ান রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করে। তার পুত্র পরবর্তী সম্রাট টাইটাসে রোমের বিখ্যাত কলোসিয়াম নির্মাণ করে। টাইটাসের অল্প সময়ের রাজত্যের পর তার ভাই ডমিটিয়ান রোমান সিংহাস করে এবং দীর্ঘকাল রাজত্বের পর হত্যার বলি হয়। এরপর সিনেট পাঁচজন সম্রাটকে বাছাই করে। এদ্বিতীয় সম্রাট ট্রাজানের শাসনামলে রোমান সাম্রাজ্র্বোচ্চ শিখরে উন্নীত হয়।
কমডাসরাজত্বকালে অস্থিরতা আর পতনোন্মুখ গতি পুনরায় আরম্ভ হয় এবং ১৯২ সালে তাকে হত্যা করা হয়, পঞ্সম্রাটের শাসনামলে। এরপর সেপ্টিমাস সেভেরাস সম্হয়। ২৩৫ সালে আলেকজান্ডার সেভেরাসের হত্যার পর রোমান রাজনৈতিক ক্ষেত্ৰে প্রবল অস্থিরতা সৃষ্টি হয় এবং রোমান সিনেটে মাত্র ৫০ বলোককে সম্রাট ঘোষণা করে। ডিয়ক্লেটিয়ানের শাসনকালে দেশ চার ভাগে ভাগ করে প্রত্যেকটি অংশে একজন নির্দিষ্ট শাসনকর্তা নিয়োগ করা হয় যার ফলস্বরূপ দেশে পুনরায় সুস্থিরতা আসলেও প্ৰথম কনষ্টেণ্টাইন এর শাসনকালে গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে এর অবসান ঘটে, এবং সকল প্রতিদ পরাভূত করে তিনি একছত্র সম্রাট হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। কনস্টেন্টাইন রোমান রাজধানী বাইজেন্টাইনে স্থানান্তর করেন এবং তার সন্মানার্থে কনষ্টাণ্টিনপল হিসেবে জায়গার নতুন নামাকরণ করা হয়। নগরীর পতন আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এটি ছিল প্রাচ্যের রাজধানী। তিনি খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করার পর রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে এটা গৃহীত হয়। সাম্রাজ্যের পূর্বাঞ্চল(বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য) বিশ্বের এক অগ্রণী শক্তি হিসেবে পরিগণিত হয়। সংযুক্ত রোমান সাম্রাজ্যের শেষ সম্রাট প্রথম থিয়ডসিয়া মৃত্যুর পর ক্ষমতার অপব্যবহার, গৃহযুদ্ধ, বহিরআগ্রাসন, অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা ইত্যাদি কারণে রোমান সাম্রাজ্যের আধিপত্য ক্ৰমশ হ্রাস পায় বলে মনে করা হয়। রোমান সাম্রাজ্য অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক ক্ষেত্রে সেই সময়কার সবথেকে শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধিশালী সাম্রাজ্যসমূহের অন্যতম ছিল। এটি ছিল প্রাচীন কালের এবং পৃথিবীর বৃহত্তম সাম্রাজ্যসমূহের একটি। ট্রাজানের সময়কালে এর আয়তন ছিল ৫০ লাখ বর্গ কিলোমিটার[২], যা ২১ শতকের ৪৮ টি জাতিগোষ্ঠীর সম পর্যায়ের[৭][৮] এবং প্রায় ৭ কোটি লোকের বসবাস ছিল যা তৎকালীন বিশ্ব জনসংখ্যার ২১% ধারণ করছিল। রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি এবং স্থায়ীত্বই লেটিন এবং গ্রীক ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, আবিষ্কার, স্থাপত্য, দর্শন, আইন এবং সরকার গঠনের বিস্তৃতি এবং স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করেছিল।
Remove ads
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
প্রজাতন্ত্র থেকে সাম্রাজ্যে রূপান্তর
খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে রোমান প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার পরপরই রোম সম্প্রসারণ শুরু করে, যদিও খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী পর্যন্ত ইতালীয় উপদ্বীপের বাইরে সম্প্রসারণ ছিল না। খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দী ছিল রাজনৈতিক ও সামরিক অভ্যুত্থানের সময়। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষভাগ থেকে রোম যখন ইতালির বাইরে তার ক্ষমতা ব্যাপকভাবে প্রসারিত করে তখন দীর্ঘ সিরিজ অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, ষড়যন্ত্র এবং গৃহযুদ্ধের শিকার হয়। ৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে একনায়ক জুলিয়াস সিজার একটি দল দ্বারা নিহত হন। এই দলটি মার্ক এন্টনি এবং সিজারের দত্তক পুত্র অক্টাভিয়ান দ্বারা খ্রিস্টপূর্ব ৪২ সালে ফিলিপির যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং রোম থেকে বিতাড়িত হয়। অ্যান্টনি এবং অক্টাভিয়ানের মধ্যে রোমান বিশ্ব বিভক্ত হয়, তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অ্যাক্টিয়ামের যুদ্ধে অক্টাভিয়ান বাহিনী মার্ক অ্যান্টনি এবং ক্লিওপেট্রার বাহিনীকে পরাজিত করে। ২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সেনেট তাকে অগাস্টাস ("পূজনীয়") উপাধি দেয় এবং তাকে প্রকন্সুলার ইম্পেরিয়াম সহ প্রিন্সেপস ("প্রধান") বানিয়ে দেয়, এইভাবে প্রিন্সিপেট শুরু হয়। যদিও প্রিন্সিপেট প্রজাতন্ত্র নামে দাঁড়িয়েছিল, অগাস্টাসের সমস্ত অর্থপূর্ণ কর্তৃত্ব ছিল। তার মৃত্যুর পর, টাইবেরিয়াস তার স্থলাভিষিক্ত হন নতুন ডি ফ্যাক্টো রাজা হিসেবে।
প্যাক্স রোমানা
অগাস্টাসের শাসনের সাথে শুরু হওয়া ২০০ বছরকে ঐতিহ্যগতভাবে প্যাক্স রোমানা ("রোমান শান্তি") হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রদেশগুলিতে বিদ্রোহ বিরল ছিল । রাজবংশের উত্তরাধিকারের নীতি প্রতিষ্ঠায় অগাস্টাসের সাফল্য ছিল।
বর্বর রাজ্য এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য
বর্বর আক্রমণগুলি প্রধানত প্রাচীন জার্মানিক জনগণের আন্দোলন । ঐতিহাসিকভাবে, এই ঘটনাটি প্রাচীনত্ব এবং মধ্যযুগের মধ্যে পরিবর্তনকে চিহ্নিত করে। সেভেরান রাজবংশ ছিল অশান্ত; রাজত্ব নিয়মিতভাবে হত্যা বা মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে শেষ হত এবং পতনের পর সাম্রাজ্য তৃতীয় শতাব্দীর সংকট, আক্রমণ, গৃহযুদ্ধ, অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা এবং প্লেগ দ্বারা আচ্ছন্ন হয়। অরেলিয়ান, সাম্রাজ্যকে সামরিকভাবে স্থিতিশীল করেন এবং ডায়োক্লেটিয়ান ২৮৫ সালে পুনর্গঠিত এবং অনেকাংশ পুনরুদ্ধার করেন,ডায়োক্লেটিয়ান সাম্রাজ্যকে চারটি অঞ্চলে বিভক্ত করেছিলেন, প্রত্যেকটি পৃথক টেট্রার্ক দ্বারা শাসিত হত। কিন্তু টেট্রার্কি ভেঙে পড়ে। শেষ পর্যন্ত কনস্টানটাইন দ্য গ্রেটের দ্বারা আদেশ পুনরুদ্ধার করা হয়, যিনি খ্রিস্টধর্মে রূপান্তরিত প্রথম সম্রাট এবং পূর্ব সাম্রাজ্যের নতুন রাজধানী হিসাবে কনস্টান্টিনোপল প্রতিষ্ঠা করেন।
কনস্টান্টিনোপল এবং রোমে দ্বৈত শক্তি কেন্দ্র ছিল। জুলিয়ান, তার উপদেষ্টা মার্ডোনিয়াসের প্রভাবে ধ্রুপদী রোমান এবং হেলেনিস্টিক ধর্ম পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করেন। প্রথম থিওডোসিয়াস , পূর্ব ও পশ্চিম উভয়ের উপর শাসন করা শেষ সম্রাট, খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম করার পর ৩৯৫ সালে মারা যান।
পশ্চিমের পতন
পশ্চিমী রোমান সাম্রাজ্য ৫ম শতকের গোড়ার দিকে ভেঙে যেতে শুরু করে। রোমানরা সমস্ত আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল [৯] , কিন্তু রোম সাম্রাজ্য এত বেশি জার্মানিক লোককে আত্মীকরণ করেছিল যে সাম্রাজ্য নিজেই ভেঙে পড়তে শুরু করেছিল। ৪৭৬ সালে যখন ১৫ বছর বয়সী রোমিউলাস অগাস্টাস জার্মানিক যুদ্ধবাজ ওডোএসারের কাছে ত্যাগ করতে বাধ্য হয়, পশ্চিমী রোমান সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে।[১০]
ওডোএসার যেন পশ্চিম সাম্রাজ্যের অবসান ঘটান। শেষ রোমান সম্রাট কনস্টানটাইন একাদশ প্যালাওলোগোসের রাজত্বকাল পর্যন্ত পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যকে পরবর্তী ইতিহাসবিদরা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য বলে অভিহিত করেন। তিনি ১৪৫৩ সালে কনস্টান্টিনোপল অবরোধের সময় সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদ এবং তার অটোমান বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে মারা যান। দ্বিতীয় মেহমেদ সিজার উপাধি গ্রহণ করেন।
Remove ads
ভৌগোলিকতা ও জনসংখ্যা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
রোমান সাম্রাজ্য ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ সাম্রাজ্য ছিল, যার সংলগ্ন অঞ্চল বিস্তৃত ছিল ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে।[১১] লাতিন শব্দগুচ্ছ imperium sine fine (“শেষহীন সাম্রাজ্য”[১২]) এই আদর্শ প্রকাশ করে যে, সময় বা স্থান কোনোটাই এই সাম্রাজ্যকে সীমাবদ্ধ করতে পারত না। Virgil-এর Aeneid গ্রন্থে, বলা হয়েছে রোমানদের এই সীমাহীন সাম্রাজ্য দেবতা জুপিটার কর্তৃক প্রদান করা হয়েছিল।[১৩] এই সার্বভৌমতার দাবি ৪র্থ শতকে খ্রিস্টান শাসন আসার পর নবায়িত হয়েছিল।[ক]
রোমানরা শুধুমাত্র বড় বড় অঞ্চল দখল করেনি, বরং তাদের ভৌগোলিক পরিবেশকেও বদলে দিয়েছিল, যেমন পুরো বনভূমি কেটে ফেলা।[১৫]
রোমান সম্প্রসারণ মূলত প্রজাতন্ত্র আমলে সম্পন্ন হয়েছিল, যদিও ১ম শতকে উত্তর ইউরোপের কিছু অংশ দখল করা হয় এবং ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার উপর রোমান নিয়ন্ত্রণ সুদৃঢ় হয়। Augustus শাসনের সময়, রোমে "পরিচিত বিশ্বের বৈশ্বিক মানচিত্র" প্রথমবারের মতো সর্বসাধারণের জন্য প্রদর্শিত হয়, এবং সেই সময়েই অ্যান্টিক যুগ থেকে টিকে থাকা সবচেয়ে বিস্তৃত রাজনৈতিক ভূগোল, Strabo-র Geography রচিত হয়।[১৬] Augustus-এর মৃত্যুর সময় তাঁর কীর্তির বিবরণ (Res Gestae)-এ সাম্রাজ্যের ভৌগোলিক তালিকাভুক্তি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল।[১৭] ভূগোল ও সূক্ষ্ম লিখিত নথিপত্র ছিল রোমান সাম্রাজ্যিক প্রশাসনের মূলভিত্তি।[১৮]

সাম্রাজ্য তার সর্বোচ্চ বিস্তৃতি লাভ করে Trajan-এর শাসনে (শা. 98–117),[১৯] মোট এলাকা ছিল ৫ মিলিয়ন কিমি²।[২][২০] প্রচলিত অনুমান অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ছিল ৫৫–৬০ মিলিয়ন,[২১] যা তৎকালীন বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-ষষ্ঠাংশ থেকে এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত ছিল[২২], এবং এটি ছিল পশ্চিম বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক সত্তা, যা ১৯শ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত অক্ষুন্ন ছিল।[২৩] সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় জনসংখ্যা ৭০ মিলিয়ন থেকে ১০০ মিলিয়নেরও বেশি হতে পারে।[২৪] সাম্রাজ্যের তিনটি বৃহত্তম শহর — রোম, Alexandria, এবং Antioch — ১৭শ শতকের শুরুতে ইউরোপের যেকোনো শহরের তুলনায় দ্বিগুণ আকারের ছিল।[২৫]
ইতিহাসবিদ ক্রিস্টোফার কেলি এভাবে বর্ণনা করেছেন:
তখন সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল Hadrian's Wall থেকে, বৃষ্টিভেজা উত্তর ইংল্যান্ড পর্যন্ত; সিরিয়ার Euphrates নদীর রোদপোড়া তীরে; ইউরোপের উর্বর সমতলভূমি জুড়ে প্রবাহিত Rhine ও Danube নদী পদ্ধতি থেকে শুরু করে, উত্তর আফ্রিকার উপকূলীয় সমভূমি এবং মিশরের নাইল উপত্যকার সবুজ ফাটল পর্যন্ত। পুরো Mediterranean-কে ঘিরে রেখেছিল এই সাম্রাজ্য... বিজয়ীরা একে বলত mare nostrum — 'আমাদের সাগর'।[২১]

Trajan-এর উত্তরসূরি Hadrian সাম্রাজ্য সম্প্রসারণ নয়, বরং স্থিতিশীল রাখার নীতি গ্রহণ করেন। সীমান্ত (fines) চিহ্নিত করা হয় এবং ফ্রন্টিয়ার (limites) টহল দেওয়া হতো।[১৯] সবচেয়ে সুদৃঢ় সীমান্তগুলোই ছিল সবচেয়ে অস্থিতিশীল।[২৭] Hadrian's Wall — যা রোমান বিশ্বের সীমান্তকে চিহ্নিত করত এবং বর্বর হুমকির প্রতীক ছিল — এর অস্তিত্ব আজও টিকে আছে, যা সেই সময়কার নিরাপত্তা নীতির প্রতিচ্ছবি।[২৮]
Remove ads
ভাষা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
লাতিন ও গ্রিক ছিল রোমান সাম্রাজ্যের প্রধান ভাষা।[খ] লাতিন ভাষা খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে বিশেষত পশ্চিম প্রদেশগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যদিও পূর্বাঞ্চলে ততটা নয়।[৩০] পূর্বাঞ্চলে গ্রিক ভাষার আধিপত্য ছিল, যা হেলেনিস্টিক যুগের প্রভাব হিসেবে সাম্রাজ্যের আগেই প্রতিষ্ঠিত ছিল।[৩১][৩২]Treadgold (1997), পৃ. 5–7}} তবে সাম্রাজ্যটি ইচ্ছাকৃতভাবে বহুভাষিক ছিল।[৩৩] Andrew Wallace-Hadrill বলেন, "রোমান সরকারের প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল নিজেদের বোধগম্য করে তোলা"।[৩৪]
সাম্রাজ্যের শুরুর সময়ে, গ্রিক ভাষাজ্ঞান ছিল শিক্ষিত অভিজাত শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এবং লাতিন ভাষাজ্ঞান ছিল সামরিক, প্রশাসন বা আইনি ক্যারিয়ারের জন্য অপরিহার্য।[৩৫] দ্বিভাষিক শিলালিপি দুই ভাষার পারস্পরিক ব্যবহার প্রমাণ করে।[৩৬]
লাতিন ও গ্রিকের পারস্পরিক ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক প্রভাব অত্যন্ত জটিল।[৩৭] সাম্রাজ্যের প্রাথমিক যুগেই লাতিন ভাষায় গ্রিক শব্দ ঢুকে পড়ে, বিশেষত সামরিক, প্রশাসনিক, ও বাণিজ্যিক প্রসঙ্গে।[৩৮] পাশাপাশি গ্রিক ব্যাকরণ, সাহিত্য, কাব্য ও দর্শন লাতিন ভাষা ও সংস্কৃতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।[৩৯][৪০]

সাম্রাজ্যে লাতিন ভাষার ব্যবহার কখনো বাধ্যতামূলক ছিল না, তবে এটি উচ্চ মর্যাদার প্রতীক ছিল।[৪২] সাহিত্যের আবির্ভাবের সাথে সাথে Latinitas বা পরিশীলিত লাতিন গঠিত হয়।[৪৩] রোমানদের নমনীয় ভাষানীতি একটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করে, যেখানে গ্রিকের প্রভাব ঠেকাতে Latinitas একটি প্রতিরক্ষামূলক রূপ নেয়।[৪৪] ধীরে ধীরে লাতিন ভাষার ব্যবহার ক্ষমতা ও উচ্চ সামাজিক অবস্থানের চিহ্ন হয়ে ওঠে।[৪৫][৪৬]
Justinian পর্যন্ত অধিকাংশ সম্রাট দ্বিভাষিক ছিলেন, তবে রাজনৈতিক কারণে পাবলিক ক্ষেত্রে লাতিনের প্রতি পক্ষপাত দেখাতেন। এই রীতি পিউনিক যুদ্ধ থেকে শুরু হয়।[৪৭] যদিও কিছু সম্রাট প্রশাসনে লাতিন প্রয়োগের চেষ্টা করেন, প্রাথমিক সাম্রাজ্যে ভাষাগত সাম্রাজ্যবাদ চালু ছিল না।[৪৮]
খ্রিস্টীয় ২১২ সালে সকল স্বাধীনজন্ম নাগরিককে নাগরিকত্ব দেওয়ার পর অনেকেই লাতিন জানতেন না।[৪৯] Koine Greek-এর ব্যাপক ব্যবহার খ্রিস্টধর্ম ছড়াতে সহায়ক হয় এবং এটি মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের lingua franca হিসেবে পরিচিত ছিল।[৫০] Diocletian-এর সংস্কারের পর পশ্চিমে গ্রিক জ্ঞানে পতন আসে।[৫১] খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে পশ্চিম সাম্রাজ্যের পতনের পরে কথ্য লাতিন ভেঙে রোমান্স ভাষাসমূহে রূপান্তরিত হয়।[৫২]
সুশিক্ষিতদের মধ্যে লাতিন ও গ্রিকের আধিপত্য অন্যান্য স্থানীয় ভাষার অস্তিত্ব আড়াল করেছিল।[৫৩] কথ্য লাতিন বা Vulgar Latin ধীরে ধীরে সেল্টিক ও ইটালিক ভাষাগুলোকে প্রতিস্থাপন করে।[৫৪][৫৫] ব্যাখ্যাকারীদের উল্লেখ স্থানীয় ভাষার ধারাবাহিক ব্যবহার নির্দেশ করে, বিশেষত মিশরে কপ্টিক এবং রাইন ও দানিউব সীমান্তে সেনাবাহিনীতে। আইন এবং শপথ বোঝাতে রোমান আইনজ্ঞরা পিউনিক, গলীয় ও আরামাইক ভাষার গুরুত্ব বুঝতেন।[৫৬] আফ্রিকায়, লিবিকো-বারবার ও পিউনিক ভাষার ব্যবহার দ্বিতীয় শতাব্দী পর্যন্ত ছিল।[৫৩] সিরিয়ায়, পালমিরার সৈন্যরা আরামাইকের স্থানীয় রূপ ব্যবহার করতেন, যা সামরিক ক্ষেত্রে লাতিন ভাষার ব্যতিক্রমী ব্যবহারের দৃষ্টান্ত।[৫৭]
গলীয় ভাষার শেষ উল্লেখ ৫৬০ থেকে ৫৭৫ সালের মধ্যে পাওয়া যায়।[৫৮][৫৯] পরবর্তীতে গল-রোমান্স ভাষাসমূহ গলীয় প্রভাব পায়।[৬০] প্রোটো-বাস্ক বা অ্যাকুইটানিয়ান ভাষা লাতিন ঋণশব্দ নিয়ে আধুনিক বাস্ক ভাষায় রূপান্তরিত হয়।[৬১] থ্রেসীয় ভাষাসহ আনাতোলিয়ার অনেক বিলুপ্ত ভাষা সাম্রাজ্যের সময়ে শিলালিপিতে সংরক্ষিত রয়েছে।[৫০][৫৩]
মিশরের হাথর মন্দিরের উত্তর প্রবেশদ্বারে Domitian ও Trajan-এর ফটক এবং ডোমিশিয়ানকে মিশরের ফেরাউন হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, যার পাশে রয়েছে মিশরীয় হায়ারোগ্লিফ।[৬২]
Remove ads
সমাজ
সারাংশ
প্রসঙ্গ

রোমান সাম্রাজ্য ছিল অসাধারণভাবে বহুসংস্কৃতির, যেখানে বিভিন্ন জাতির মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি একটি সম্মিলিত পরিচয় গঠনের "আশ্চর্য সংহতিশীল ক্ষমতা" ছিল।[৬৩] সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত পাবলিক স্মৃতিস্তম্ভ ও সাম্প্রদায়িক স্থান—যেমন ফোরাম, অ্যাম্ফিথিয়েটার, রেসট্র্যাক এবং স্নানাগার—"রোমানত্ব"-এর অনুভূতি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল।[৬৪]
রোমান সমাজে একাধিক ও ওভারল্যাপিং সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস ছিল।[৬৫] অগাস্টাসের পূর্বের গৃহযুদ্ধ সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল,[৬৬] কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে সম্পদ ও সামাজিক ক্ষমতার পুনর্বন্টন ঘটায়নি। নিম্ন শ্রেণির দৃষ্টিকোণ থেকে, সামাজিক পিরামিডের শীর্ষে মাত্র একটি নতুন স্তর যোগ করা হয়েছিল।[৬৭] ব্যক্তিগত সম্পর্ক—পৃষ্ঠপোষকতা, বন্ধুত্ব (amicitia), পরিবার, বিবাহ—রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে থাকত।[৬৮] নেরো-এর সময়ে, একজন মুক্তিপ্রাপ্ত দাসকে একজন স্বাধীন নাগরিকের চেয়ে ধনী বা একজন ইকুয়েস্ট্রিয়ান-কে একজন সেনেটরের চেয়ে বেশি ক্ষমতাশালী পাওয়া অস্বাভাবিক ছিল না।[৬৯]
প্রজাতন্ত্রের কঠোর শ্রেণিবিন্যাসের অস্পষ্টতা সামাজিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করেছিল,[৭০] যা অন্যান্য প্রাচীন সমাজের তুলনায় বেশি ছিল।[৭১] নারী, মুক্তিপ্রাপ্ত দাস ও দাসদের জন্য লাভের ও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়েছিল।[৭২] সামাজিক জীবন, বিশেষত যাদের ব্যক্তিগত সম্পদ সীমিত ছিল, স্বেচ্ছাসেবী সংঘ ও ভ্রাতৃত্বমূলক সংস্থা (collegia এবং sodalitates)-এর মাধ্যমে আরও উন্নত হয়েছিল: পেশাদার ও বাণিজ্যিক গিল্ড, সেনাবাহিনীর ভেটেরানদের দল, ধর্মীয় সংঘ, পানাহার ও ভোজের ক্লাব,[৭৩] অভিনয় দল,[৭৪] এবং সমাধি সমিতি।[৭৫]
- আইনি অবস্থা
আইনবিদ গাইয়াসের মতে, রোমান "ব্যক্তি আইন"-এর মূল পার্থক্য ছিল যে সব মানুষ হয় মুক্ত (liberi) বা দাস (servi)।[৭৬] মুক্ত ব্যক্তিদের আইনি অবস্থান তাদের নাগরিকত্ব দ্বারা আরও সংজ্ঞায়িত ছিল। বেশিরভাগ নাগরিকের সীমিত অধিকার ছিল (যেমন ius Latinum, "ল্যাটিন অধিকার"), কিন্তু তাদের আইনি সুরক্ষা ও বিশেষাধিকার ছিল যা অ-নাগরিকরা ভোগ করত না। নাগরিক হিসেবে বিবেচিত না হওয়া মুক্ত মানুষ, যারা রোমান বিশ্বে বাস করত, তারা ছিল peregrini, অ-রোমান।[৭৭] ২১২ সালে, Constitutio Antoniniana সাম্রাজ্যের সব স্বাধীন বাসিন্দাকে নাগরিকত্ব প্রদান করে। এই আইনি সমতা নাগরিক ও অ-নাগরিকদের মধ্যে পার্থক্যকারী বিদ্যমান আইনগুলির ব্যাপক সংশোধন প্রয়োজন করেছিল।[৭৮]
- রোমান আইনে নারী
বাম: একটি লালচে কিশোরী পাঠ্য পড়ার ফ্রেস্কো, পম্পেইয়ান চতুর্থ শৈলী (৬০–৭৯ খ্রিস্টাব্দ), পম্পেই, ইতালি
ডান: একটি যুবতী পড়ার ব্রোঞ্জ মূর্তি (১ম শতাব্দী খ্রিস্টাব্দ), হেলেনিস্টিক মূলের উপর ভিত্তি করে
ডান: একটি যুবতী পড়ার ব্রোঞ্জ মূর্তি (১ম শতাব্দী খ্রিস্টাব্দ), হেলেনিস্টিক মূলের উপর ভিত্তি করে
স্বাধীন জন্মগ্রহণকারী রোমান নারীদের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হত, কিন্তু তারা ভোট দিতে, রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত হতে বা সামরিক বাহিনীতে কাজ করতে পারত না। একজন মায়ের নাগরিক অবস্থা তার সন্তানদের অবস্থা নির্ধারণ করত, যেমন ex duobus civibus Romanis natos ("দুই রোমান নাগরিকের সন্তান") বাক্যাংশ দ্বারা নির্দেশিত।[গ] একজন রোমান নারী তার নিজের পারিবারিক নাম (nomen) জীবনভর রাখতেন। সন্তানেরা সাধারণত পিতার নাম গ্রহণ করত, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া।[৮১] নারীরা সম্পত্তির মালিক হতে, চুক্তি করতে এবং ব্যবসায় জড়িত হতে পারতেন।[৮২] সাম্রাজ্য জুড়ে শিলালিপিগুলিতে নারীদের জনসাধারণের কাজে অর্থায়নের জন্য পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সম্মানিত করা হয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে তারা উল্লেখযোগ্য সম্পদের মালিক হতে পারতেন।[৮৩]
প্রাচীন manus বিবাহ, যেখানে নারী তার স্বামীর কর্তৃত্বের অধীন ছিল, তা সাম্রাজ্য যুগে মূলত পরিত্যক্ত হয়েছিল, এবং একজন বিবাহিত নারী বিবাহের সময় যে কোন সম্পত্তি নিয়ে এসেছিলেন তার মালিকানা বজায় রাখতেন। প্রযুক্তিগতভাবে তিনি তার পিতার আইনি কর্তৃত্বের অধীনে থাকতেন, এমনকি যদি তিনি তার স্বামীর বাড়িতে চলে যান, কিন্তু তার পিতা মারা গেলে তিনি আইনত মুক্ত হয়ে যেতেন।[৮৪] এই ব্যবস্থাটি রোমান নারীদের স্বাধীনতার মাত্রার একটি কারণ ছিল, যা আধুনিক সময় পর্যন্ত অনেক সংস্কৃতির তুলনায় বেশি ছিল:[৮৫] যদিও তাকে আইনি বিষয়ে তার পিতার কাছে জবাবদিহি করতে হত, দৈনন্দিন জীবনে তিনি তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান থেকে মুক্ত ছিলেন,[৮৬] এবং তার স্বামীর তার উপর কোন আইনি ক্ষমতা ছিল না।[৮৭] যদিও "এক পুরুষের নারী" (univira) হওয়া গর্বের বিষয় ছিল, যিনি কেবল একবার বিয়ে করেছিলেন, তবুও তালাক বা বিধবা বা তালাকের পর দ্রুত পুনর্বিবাহের সাথে সামান্য কলঙ্ক জড়িত ছিল।[৮৮] মেয়েরা ছেলেদের মতো সমান উত্তরাধিকার অধিকার ভোগ করত যদি তাদের পিতা উইল ছাড়াই মারা যেত।[৮৯] একজন মায়ের সম্পত্তির মালিকানা ও নিষ্পত্তি করার অধিকার, তার উইলের শর্তাবলী নির্ধারণ সহ, তার পুত্রদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত তাদের উপর বিশাল প্রভাব ফেলত।[৯০]

অগাস্টাসের ঐতিহ্যবাহী নৈতিকতা ও সামাজিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের কর্মসূচির অংশ হিসেবে, নৈতিক আইন "পারিবারিক মূল্যবোধ" প্রচারের একটি উপায় হিসেবে আচরণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিল। ব্যভিচার অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়েছিল,[৯১] এবং এটি একটি নাগরিক পুরুষ ও একজন বিবাহিত নারীর মধ্যে বা একজন বিবাহিত নারী ও তার স্বামী ছাড়া অন্য কোন পুরুষের মধ্যে অবৈধ যৌন ক্রিয়া (stuprum) হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। অর্থাৎ, একটি দ্বৈত মানদণ্ড বিদ্যমান ছিল: একজন বিবাহিত নারী কেবল তার স্বামীর সাথে যৌন সম্পর্ক করতে পারতেন, কিন্তু একজন বিবাহিত পুরুষ ব্যভিচার করেনি যদি তিনি একজন পতিতা বা প্রান্তিক অবস্থানের ব্যক্তির সাথে যৌন সম্পর্ক করেন।[৯২] সন্তান জন্মদানকে উৎসাহিত করা হয়েছিল: যে নারী তিনটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তাকে প্রতীকী সম্মান ও বৃহত্তর আইনি স্বাধীনতা (ius trium liberorum) প্রদান করা হয়েছিল।[৯৩]
- দাস ও আইন
অগাস্টাসের সময়ে, রোমান ইতালির ৩৫% মানুষ দাস ছিল,[৯৪] যা রোমকে পাঁচটি ঐতিহাসিক "দাস সমাজ"-এর মধ্যে একটি করে তুলেছিল যেখানে দাসরা জনসংখ্যার অন্তত এক পঞ্চমাংশ গঠন করেছিল এবং অর্থনীতিতে একটি প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল।[ঘ][৯৪] দাসপ্রথা একটি জটিল প্রতিষ্ঠান ছিল যা ঐতিহ্যবাহী রোমান সামাজিক কাঠামোকে সমর্থন করেছিল এবং অর্থনৈতিক উপযোগিতায় অবদান রাখত।[৯৫] শহুরে পরিবেশে, দাসরা শিক্ষক, চিকিৎসক, রাঁধুনি এবং হিসাবরক্ষক হিসাবে পেশাদার হতে পারত; বেশিরভাগ দাস প্রশিক্ষিত বা অদক্ষ শ্রম প্রদান করত। কৃষি ও শিল্প, যেমন মিলিং ও খনন, দাসদের শোষণের উপর নির্ভর করত। ইতালির বাইরে, দাসরা গড়ে আনুমানিক ১০ থেকে ২০% জনসংখ্যা ছিল, রোমান মিশরে কম কিন্তু কিছু গ্রীক অঞ্চলে বেশি ঘনীভূত। চাষযোগ্য জমি ও শিল্পের রোমান মালিকানার সম্প্রসারণ প্রদেশগুলিতে বিদ্যমান দাসপ্রথার অনুশীলনকে প্রভাবিত করেছিল।[৯৬] যদিও ৩য় ও ৪র্থ শতাব্দীতে দাসপ্রথা হ্রাস পেয়েছে বলে মনে করা হয়, এটি ৬ষ্ঠ ও ৭ম শতাব্দীতে জটিল সাম্রাজ্যিক অর্থনীতির পতনের সাথে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হওয়া পর্যন্ত রোমান সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল।[৯৭]

দাসপ্রথা সম্পর্কিত আইন "অত্যন্ত জটিল" ছিল।[৯৮] দাসদের সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হত এবং তাদের কোন আইনি ব্যক্তিত্ব ছিল না। তাদের উপর শারীরিক শাস্তির এমন রূপ প্রয়োগ করা যেত যা সাধারণত নাগরিকদের উপর প্রয়োগ করা হত না, যৌন শোষণ, নির্যাতন, এবং সংক্ষিপ্ত শাস্তি। একজন দাসকে আইনত ধর্ষণ করা যায়নি; একজন দাসের ধর্ষককে Aquilian আইন-এর অধীনে সম্পত্তির ক্ষতির জন্য মালিক দ্বারা মামলা করতে হত।[৯৯] দাসদের conubium নামক আইনি বিবাহের অধিকার ছিল না, কিন্তু তাদের মিলন কখনও কখনও স্বীকৃত হত।[১০০] প্রযুক্তিগতভাবে, একজন দাস সম্পত্তির মালিক হতে পারত না,[১০১] কিন্তু একজন দাস যিনি ব্যবসা পরিচালনা করতেন তাকে একটি পৃথক তহবিল (peculium) দেওয়া যেতে পারে যা তিনি ব্যবহার করতে পারতেন, মালিক ও দাসের মধ্যে আস্থা ও সহযোগিতার মাত্রার উপর নির্ভর করে।[১০২] একটি পরিবার বা কর্মক্ষেত্রে, দাসদের মধ্যে একটি শ্রেণিবিন্যাস থাকতে পারে, যেখানে একজন দাস অন্যদের মালিক হিসেবে কাজ করত।[১০৩] প্রতিভাবান দাসরা তাদের মুক্তির জন্য যথেষ্ট বড় peculium জমা করতে পারত, বা প্রদত্ত সেবার জন্য মুক্তি পেতে পারত। মুক্তি প্রদান এত ঘন ঘন হয়েছিল যে ২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে একটি আইন (Lex Fufia Caninia) একজন মালিককে তার উইলে কতজন দাসকে মুক্তি দিতে পারতেন তা সীমিত করেছিল।[১০৪]
প্রজাতন্ত্রের সার্ভাইল যুদ্ধগুলির পরে, অগাস্টাস ও তার উত্তরসূরিদের অধীনে আইন প্রণয়ন কর্মদলের আকার সীমিত করে এবং পলাতক দাসদের শিকার করার মাধ্যমে বিদ্রোহের হুমকি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি চালিকা উদ্বেগ দেখায়।[১০৫] সময়ের সাথে সাথে দাসরা তাদের মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার অধিকার সহ বৃদ্ধি আইনি সুরক্ষা লাভ করেছিল। একটি বিক্রয় বিলে একটি ধারা থাকতে পারে যা নির্দিষ্ট করে যে দাসকে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ করা যাবে না, কারণ প্রাচীন রোমে পতিতারা প্রায়শই দাস ছিল।[১০৬] ১ম শতাব্দীর শেষের দিকে খোজা-দের মধ্যে বিকাশমান বাণিজ্য আইন প্রণয়নকে প্ররোচিত করেছিল যা "কাম বা লাভের" জন্য একজন দাসের ইচ্ছার বিরুদ্ধে খোজাকরণ নিষিদ্ধ করেছিল।[১০৭]
রোমান দাসপ্রথা জাতি-এর উপর ভিত্তি করে ছিল না।[১০৮] সাধারণত, ইতালিতে দাসরা আদিবাসী ইতালীয় ছিল,[১০৯] সংখ্যালঘু বিদেশী (দাস ও মুক্তিপ্রাপ্ত দাস উভয়ই) রাজধানীতে তাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল, যেখানে মোট জনসংখ্যার ৫% হিসাবে অনুমান করা হয়েছিল। বিদেশী দাসদের স্থানীয়দের তুলনায় উচ্চ মৃত্যুহার ও কম জন্মহার ছিল এবং কখনও কখনও তাদের গণবহিষ্কারের সম্মুখীন হতে হত।[১১০] রোম শহরের দাসদের জন্য রেকর্ডকৃত গড় মৃত্যুর বয়স ছিল সতেরো বছর পাঁচ মাস (পুরুষদের জন্য ১৭.২; মহিলাদের জন্য ১৭.৯)।[১১১]
প্রজাতন্ত্রের সম্প্রসারণবাদী সময়ে যখন দাসপ্রথা ব্যাপক হয়ে উঠেছিল, যুদ্ধবন্দীরা দাসদের একটি প্রধান উৎস ছিল। রোম যুদ্ধে পরাজিত সেনাবাহিনীর জাতিগত পরিসর কিছুটা দাসদের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছিল, এবং গ্রিসের বিজয় অনেক দক্ষ ও শিক্ষিত দাস নিয়ে এসেছিল। দাসদের বাজারে বিক্রি করা হত এবং কখনও কখনও জলদস্যুদের দ্বারা বিক্রি করা হত। শিশু পরিত্যাগ ও দরিদ্রদের মধ্যে স্ব-দাসত্ব অন্য উৎস ছিল।[১১২] Vernae, বিপরীতে, "ঘরোয়া" দাস ছিল যারা পরিবার, এস্টেট বা খামারে মহিলা দাসদের থেকে জন্মগ্রহণ করেছিল। যদিও তাদের কোন বিশেষ আইনি অবস্থা ছিল না, একজন মালিক যিনি তার vernae-দের সাথে দুর্ব্যবহার করতেন বা তাদের দেখাশোনা করতে ব্যর্থ হতেন তিনি সামাজিক অনুমোদনের সম্মুখীন হতেন, কারণ তারা পরিবারের অংশ হিসেবে বিবেচিত হত এবং কিছু ক্ষেত্রে পরিবারের মুক্ত পুরুষদের সন্তান হতে পারত।[১১৩]
- মুক্তিপ্রাপ্ত দাস

রোম গ্রিক নগর-রাষ্ট্রগুলি থেকে আলাদা ছিল যে এটি মুক্তিপ্রাপ্ত দাসদের নাগরিক হতে দিত; একজন মুক্তিপ্রাপ্ত দাসের কোন ভবিষ্যত সন্তান মুক্ত জন্মগ্রহণ করত, নাগরিকত্বের পূর্ণ অধিকার সহ। মুক্তি পাওয়ার পরে, একজন দাস যিনি একজন রোমান নাগরিকের ছিলেন তিনি সক্রিয় রাজনৈতিক স্বাধীনতা (libertas) ভোগ করতেন, ভোট দেওয়ার অধিকার সহ।[১১৪] তার প্রাক্তন মালিক তার পৃষ্ঠপোষক (patronus) হয়ে যেতেন: দুজনের মধ্যে রীতিনীতি ও আইনি বাধ্যবাধকতা অব্যাহত থাকত।[১১৫][১১৬] একজন মুক্তিপ্রাপ্ত দাস সরকারী অফিস বা সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরোহিত পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার অধিকারী ছিল না, কিন্তু তিনি একটি পুরোহিত ভূমিকা পালন করতে পারতেন। তিনি একজন সেনেটরিয়াল পরিবারের মহিলাকে বিয়ে করতে পারতেন না, বা নিজে বৈধ সেনেটরিয়াল পদমর্যাদা অর্জন করতে পারতেন না, কিন্তু প্রাথমিক সাম্রাজ্যের সময়ে, মুক্তিপ্রাপ্ত দাসরা সরকারী আমলাতন্ত্রের মূল পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, এতটাই যে হাদ্রিয়ান আইন দ্বারা তাদের অংশগ্রহণ সীমিত করেছিলেন।[১১৬] সফল মুক্তিপ্রাপ্ত দাসদের উত্থান—রাজনৈতিক প্রভাব বা সম্পদের মাধ্যমে—প্রাথমিক সাম্রাজ্যিক সমাজের একটি বৈশিষ্ট্য। মুক্তিপ্রাপ্ত দাসদের একটি উচ্চ-অর্জনকারী গোষ্ঠীর সমৃদ্ধি সাম্রাজ্য জুড়ে শিলালিপি দ্বারা প্রমাণিত।
- জনগণনা পদমর্যাদা
লাতিন শব্দ ordo (বহুবচন ordines) ইংরেজিতে বিভিন্নভাবে ও অসম্পূর্ণভাবে "শ্রেণি, ক্রম, পদমর্যাদা" হিসাবে অনুবাদ করা হয়েছে। রোমান জনগণনার একটি উদ্দেশ্য ছিল নির্ধারণ করা যে একজন ব্যক্তি কোন ordo-এর অন্তর্গত।[১১৭] রোমে দুটি সর্বোচ্চ ordo ছিল সেনেটরিয়াল ও ইকুয়েস্ট্রিয়ান। রোমের বাইরে, শহর বা উপনিবেশগুলি ডেকুরিয়ন দ্বারা নেতৃত্ব দেওয়া হত, যাদের curialesও বলা হত।[১১৮]
"সেনেটর" নিজেই প্রাচীন রোমে একটি নির্বাচিত অফিস ছিল না; একজন ব্যক্তি সেনেটে ভর্তি হতেন নির্বাচিত হওয়ার পর এবং কমপক্ষে এক মেয়াদ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর। একজন সেনেটরকে ১ মিলিয়ন sestertii-এর একটি ন্যূনতম সম্পত্তির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হত।[১১৯] সকল পুরুষ যারা ordo senatorius-এর জন্য যোগ্য ছিলেন তারা সিনেটে আসন নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি, যার জন্য রোমে আইনি বাসস্থান প্রয়োজন ছিল। সম্রাটরা প্রায়শই ৬০০-সদস্যের সংস্থায় শূন্য পদগুলি নিয়োগ দ্বারা পূরণ করতেন।[১২০] একজন সেনেটরের পুত্র ordo senatorius-এর অন্তর্গত ছিলেন, কিন্তু তাকে সিনেটে ভর্তির জন্য নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে যোগ্যতা অর্জন করতে হত। একজন সেনেটরকে নৈতিক মান লঙ্ঘনের জন্য অপসারণ করা যেতে পারে।[১২১]
নেরোর সময়ে, সেনেটররা এখনও প্রধানত ইতালি থেকে ছিলেন, কিছু আইবেরীয় উপদ্বীপ ও দক্ষিণ ফ্রান্স থেকে; ভেস্পাসিয়ানের অধীনে পূর্বের গ্রিক-ভাষী প্রদেশগুলি থেকে পুরুষদের যোগ করা শুরু হয়েছিল।[১২২] পূর্বতম প্রদেশ, কাপ্পাডোসিয়া থেকে প্রথম সেনেটর মার্কাস অরেলিয়াসের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন।[ঙ] সেভেরান রাজবংশ (১৯৩–২৩৫) দ্বারা, ইতালীয়রা সিনেটের অর্ধেকেরও কম গঠন করেছিল।[১২৪] ৩য় শতাব্দীর সময়, রোমে বাসস্থান অবাস্তব হয়ে উঠেছিল, এবং শিলালিপিগুলি এমন সেনেটরদের সাক্ষ্য দেয় যারা তাদের স্বদেশে (patria) রাজনীতি ও জনহিতৈষণায় সক্রিয় ছিলেন।[১২১]
সেনেটররা ঐতিহ্যগতভাবে শাসক শ্রেণি ছিল যারা cursus honorum-এর মাধ্যমে উঠেছিল, রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ট্র্যাক, কিন্তু ইকুয়েস্ট্রিয়ানরা প্রায়শই বেশি সম্পদ ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী ছিল। ইকুয়েস্ট্রিয়ান অর্ডারের সদস্যপদ সম্পত্তির উপর ভিত্তি করে ছিল; রোমের প্রাথমিক দিনগুলিতে, equites বা অশ্বারোহী যোদ্ধারা তাদের অশ্বারোহী যোদ্ধা হিসেবে কাজ করার ক্ষমতা দ্বারা স্বতন্ত্র ছিল, কিন্তু সাম্রাজ্যে অশ্বারোহী সেবা একটি পৃথক ফাংশন ছিল।[চ] ৪০০,০০০ সেস্টার্টিসের একটি জনগণনা মূল্যায়ন এবং তিন প্রজন্মের মুক্ত জন্ম একজন পুরুষকে ইকুয়েস্ট্রিয়ান হিসাবে যোগ্যতা অর্জন করেছিল।[১২৬] ২৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের জনগণনা বিপুল সংখ্যক যোগ্য পুরুষকে উন্মোচন করেছিল, এবং ১৪ খ্রিস্টাব্দে, এক হাজার ইকুয়েস্ট্রিয়ান ক্যাডিজ এবং পাডুয়াতে নিবন্ধিত হয়েছিল।[ছ][১২৮] ইকুয়েস্ট্রিয়ানরা একটি সামরিক ক্যারিয়ার ট্র্যাক (tres militiae) এর মাধ্যমে উঠে সাম্রাজ্যিক প্রশাসনের মধ্যে উচ্চপদস্থ প্রিফেক্ট এবং প্রোকুরেটর হয়ে উঠেছিল।[১২৯]
প্রাদেশিক পুরুষদের সেনেটরিয়াল ও ইকুয়েস্ট্রিয়ান অর্ডারে উত্থান প্রাথমিক সাম্রাজ্যে সামাজিক গতিশীলতার একটি দিক। রোমান অভিজাতত্ব প্রতিযোগিতার উপর ভিত্তি করে ছিল, এবং পরবর্তী ইউরোপীয় অভিজাতদের বিপরীতে, একটি রোমান পরিবার কেবল বংশগত উত্তরাধিকার বা জমির মালিকানার মাধ্যমে তার অবস্থান বজায় রাখতে পারে না।[১৩০] উচ্চ ordines-এ ভর্তি সম্মান ও বিশেষাধিকার নিয়ে আসে, কিন্তু দায়িত্বও। প্রাচীনকালে, একটি শহর জনসাধারণের কাজ, ইভেন্ট ও পরিষেবা (munera) তহবিলের জন্য তার নেতৃস্থানীয় নাগরিকদের উপর নির্ভর করত। নিজের পদমর্যাদা বজায় রাখার জন্য বিশাল ব্যক্তিগত ব্যয় প্রয়োজন ছিল।[১৩১] ডেকুরিয়নরা শহরগুলির কার্যকারিতার জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে পরবর্তী সাম্রাজ্যে, যখন শহর কাউন্সিলের পদগুলি হ্রাস পেয়েছিল, যারা সিনেটে উঠেছিলেন তাদের তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে উৎসাহিত করা হয়েছিল, নাগরিক জীবনকে টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টায়।[১৩২]
অসম ন্যায়বিচার

প্রজাতন্ত্রের নাগরিকদের আইনের সামনে সমতার নীতি ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে, উচ্চ শ্রেণীর প্রতীকী ও সামাজিক বিশেষাধিকারগুলি রোমান সমাজকে অনানুষ্ঠানিকভাবে দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছিল - যারা অধিকতর সম্মান অর্জন করেছিল (honestiores) এবং সাধারণ জনগণ (humiliores)। সাধারণভাবে, honestiores ছিল তিনটি উচ্চতর "অর্ডার"-এর সদস্য, সাথে কিছু সামরিক অফিসার।[১৩৩] ২১২ সালে সর্বজনীন নাগরিকত্ব প্রদান করা হলে উচ্চ শ্রেণীগুলির মধ্যে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছিল, বিশেষ করে বিচার ব্যবস্থার মধ্যে।[১৩৪] রায় নির্ভর করত বিচারকের বিবেচনার উপর যে বিবাদীর আপেক্ষিক "মূল্য" (dignitas) কতটুকু: একজন honestior একটি অপরাধের জন্য জরিমানা দিতে পারত যার জন্য একজন humiliorকে চাবুকের শাস্তি দেওয়া হত।[১৩৫]
মৃত্যুদণ্ড, যা প্রজাতন্ত্রের অধীনে মুক্ত পুরুষদের জন্য একটি বিরল আইনি শাস্তি ছিল,[১৩৬] honestiores-দের জন্য দ্রুত ও অপেক্ষাকৃত বেদনাহীন হতে পারত, যখন humiliores-রা দাসদের জন্য পূর্বে সংরক্ষিত নৃশংস মৃত্যুর সম্মুখীন হত, যেমন ক্রুশবিদ্ধকরণ এবং পশুর সামনে নিক্ষেপ।[১৩৭] প্রাথমিক সাম্রাজ্যে, যারা খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হত তারা তাদের honestiores মর্যাদা হারাতে পারত, বিশেষ করে যদি তারা ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকার করত, এবং এইভাবে এমন শাস্তির সম্মুখীন হত যা শহীদত্বের শর্ত সৃষ্টি করত।[১৩৮]
Remove ads
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads