সৃষ্টাব্দ
পঞ্জিকা সাল / From Wikipedia, the free encyclopedia
সৃষ্টাব্দ (লাতিন: Anno Mundi, পৃথিবী সৃষ্টির অব্দ; হিব্রু ভাষায়: לבריאת העולםপৃথিবী সৃষ্টির শুরুতে), হল আদিপুস্তকে উল্লেখিত পৃথিবীর সৃষ্টির বাইবেলীয় বর্ণনা ও ইতিহাস ভিত্তিক একটি পঞ্জিকা সাল। ইংরেজিতে সৃষ্টাব্দকে লাতিন শব্দ ব্যবহারের রীতি মেনে অ্যানো মুন্ডি ও এর সংক্ষিপ্ত রূপ এএম (AM) ব্যবহৃত হয়।[1] ঐতিহাসিকভাবে এই জাতীয় দুটি পঞ্জিকা সাল ব্যবহৃত হয়েছে:
- মধ্যযুগ থেকে হিব্রু বর্ষপঞ্জী বাইবেলের মেসোরেটীয় উৎস থেকে প্রাপ্ত পৃথিবী সৃষ্টির বছরের রাব্বাইনীয় হিসাবের উপর ভিত্তি করে চলছে। এই বর্ষপঞ্জী ইহুদি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উদ্দেশ্যের জন্য ব্যবহৃত হওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলের জাতীয় বর্ষপঞ্জী। হিব্রু বর্ষপঞ্জীতে নতুন দিবস সূর্যাস্তে শুরু হয়। এই বর্ষপঞ্জি যুগ পৃথিবী সৃষ্টির তারিখের উপর ভিত্তি করে প্রস্তুতকৃত যা জুলীয় বর্ষপঞ্জিতে ৩৭৬১ খ্রিস্টপূর্ব সালের ৬ অক্টোবর (গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির ৬ সেপ্টেম্বর) তারিখের সূর্যাস্তে পড়ে।[2] এই পঞ্জিকায় নতুন বছর ৫৭৮৪ সৃষ্টাব্দের ১ তিশ্রেই তথা রোস হাসানাহ দিবসে শুরু হয়েছে (যার অর্থ পৃথিবী সৃষ্টির ৫৭৮৪ তম বছরে) যা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির সূর্যাস্ত, ২ অক্টোবর ২০২৪ – দিবাবসান, ৪ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে পড়ে।[3]
- পূর্ব রোমক সাম্রাজ্যে বাইজেন্টাইন বর্ষপঞ্জী ব্যবহৃত হত এবং বিভিন্ন সনাতনী খ্রিস্টান দেশ ও পূর্ব সনাতনী মণ্ডলীগুলো বাইবেলের সপ্ততি উৎস ভিত্তিক ছিলো। এই বর্ষপঞ্জীর সাথে জুলীয় বর্ষপঞ্জীর সাদৃশ্য রয়েছে শুধু পার্থক্য পঞ্জিকা যুগে যা জুলীয় বর্ষপঞ্জীতে ১ সেপ্টেম্বর ৫৫০৯ খ্রিস্টপূর্বে শুরু হয়েছে। সেই হিসেবে ২০২১ সালে সৃষ্টির ৭৫৩০ তম বছর চলছে।
দুটো বর্ষপঞ্জী পৃথিবী সৃষ্টির বছরের হিসাব মেনে চললেও তাদের হিসাবের পার্থক্যের কারণ হলো বাইবেলের সংস্করণ (বাইবেলের গ্রিক অনুবাদ তথা সপ্ততিতে পৃথিবীর সৃষ্টির সাল ৫৫০০ খ্রিস্টপূর্বের দিকে, অন্যদিকে হিব্রু মেসোরেটীয় সংস্করণে ৩৭৬০ খ্রিস্টপূর্ব সালে)। দুটি পঞ্জিকার ১,৭৩২ বছরের পার্থক্য মূলত আদিপুস্তকের দুটি সংস্করণের জন্য হয়েছে। আদম থেকে আব্রাহামের পিতা তেরাহ পর্যন্ত বলা হচ্ছে গ্রিক সপ্ততির অনুসারে প্রত্যেকের সন্তান হওয়ার সময় তাদের হিব্রু সংস্করণের চেয়ে বয়স একশো বছরের বেশি ছিলো।[4][5][6] দুটি আদিপুস্তকীয় ঘটনার মাঝে ১৪৬৬ বছরের পার্থক্য বিদ্যমান।
বাইবেলীয় ও ঐতিহ্যগত তারিখ এবং গবেষণাকৃত তারিখের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে, যেমন প্রথম মন্দিরের ধ্বংস।