কলকাতা বন্দর
ভারতের বন্দর / From Wikipedia, the free encyclopedia
আনুষ্ঠানিকভাবে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পোর্ট ট্রাস্ট নামে পরিচিত কলকাতা বন্দর (কেপিটি) ভারতের একমাত্র নদীতীরস্থ প্রধান বন্দর।[9] বন্দরটি সমুদ্র থেকে প্রায় ২০৩ কিলোমিটার (১২৬ মাইল) অভ্যন্তরে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরে হুগলী নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত।[10] এটি ভারতের প্রাচীনতম সক্রিয় বা কার্যক্ষম বন্দর[11] এবং বন্দরটি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দ্বারা নির্মিত হয়েছিলে।[12] কলকাতা একটি সাধু বা মিষ্টি জলের বন্দর এবং জলে লবণাক্ততার কোনও পরিবর্তন বা প্রকরণ নেই।[13] বন্দরের দুটি স্বতন্ত্র ডক ব্যবস্থা রয়েছে — কলকাতায় কলকাতা ডক ব্যবস্থা ও হলদিয়ার হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সে একটি গভীর জলের ডক।
কলকাতা বন্দর | |
---|---|
অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
অবস্থান | খিদিরপুর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ |
স্থানাঙ্ক | ২২.২৩° উত্তর ৮৮.২৪° পূর্ব / 22.23; 88.24 |
ইউএন/লোকোড | আইএনসিসিইউ[1] |
বিস্তারিত | |
চালু | ১৮৭০; ১৫৪ বছর আগে (1870) |
পরিচালনা করে | কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ |
মালিক | কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ, জাহাজ মন্ত্রক, ভারত সরকার |
পোতাশ্রয়ের ধরন | নদী বন্দর, গভীর সমুদ্র বন্দর |
উপলব্ধ নোঙরের স্থান | কলকাতা ডক ব্যবস্থা: ৩৪ টি[2] হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স: ১৭ টি |
জেটি | ৮৬ টি |
পোতাশ্রয়ের গভীরতা | কলকাতা: ৯.২ মিটার (৩০ ফু)[2] হলদিয়া: ১২.২ মিটার (৪০ ফু) |
জাহাজের ড্রাফট (গড়) | কলকাতা ৭.১ মিটার (২৩ ফু) হলদিয়া: ৮.৫ মিটার (২৮ ফু) |
পরিসংখ্যান | |
জলযানের আগমন | ২,৯৫৭ (২০২১–২২)[3] |
বার্ষিক কার্গো টন | ৬৫.৬৬ মিলিয়ন টন (২০২২–২৩)[4] |
বার্ষিক কন্টেইনারের আয়তন | ৬,৮৭,৯৪০ টিইইউ (২০২০–২০২১)[5][6] |
যাত্রী গমনাগমন | ৩৯,৫৫২ |
বার্ষিক আয় | ₹ ২,৬২২ কোটি (US$ ৩২০.৪৯ মিলিয়ন) (২০২০-২০২১)[7] |
মোট আয় | ₹ ১০৪.০৮ কোটি (US$ ১২.৭২ মিলিয়ন) (২০২০-২০২১)[8][7] |
প্রধান আমদানি দ্রব্য | যন্ত্রপাতি, খনিজ তেল, রাসায়নিক সার, কাঁচা সুত, ইস্পাত, অটোমোবাইল প্রভৃতি |
প্রধান রপ্তানি দ্রব্য | পাট ও পাট জাতদ্রব্য, সুতির বস্ত্র, চর্ম, লৌহ খনিজ, কয়লা, ম্যাঙ্গানিজ, ফ্লাইস ওস প্রভৃতি |
ডক | ৩ টি (খিদিরপুর ডক, নেতাজি সুভাষ ডক ও হলদিয়া ডক) |
কলকাতা বন্দর ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ ভারতের প্রধান বন্দর ছিল। দাস ব্যবস্থা ১৮৩৩ সালে বিলুপ্ত হওয়ার পরে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে আখের চাষের শ্রমিকদের উচ্চ চাহিদা ছিল। ব্রিটিশরা ১৮৩৮ সাল থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত বন্দরটিকে মাধ্যমে সমগ্র ভারত থেকে অর্ধ মিলিয়ন ভারতীয়কে পরিবহন করার জন্য ব্যবহার করেছিল — বেশিরভাগ হিন্দি বলয় (বিশেষত ভোজপুর ও অবধ) থেকে — এবং তাদেরকে মরিশাস, ফিজি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ত্রিনিদাদ এবং টোবাগো, গায়ানা, সুরিনাম এবং অন্যান্য ক্যারিবিয়ান দ্বীপগুলি সহ সারা বিশ্বের জুড়ে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক হিসাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সমগ্র বিশ্বে লক্ষ লক্ষ ইন্দো-মরিশিয়ান, ইন্দো-ফিজিয়ান ও ইন্দো-ক্যারিবিয়ান মানুষ রয়েছে।
ভারতের স্বাধীনতার পরে, বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭), পশ্চাৎভূমির আয়তন হ্রাস ও পূর্ব ভারতে অর্থনৈতিক স্থবিরতা সহ অন্যান্য কারণে বন্দরের গুরুত্ব হ্রাস পায়।
এটির পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর পূর্ব পার্বত্য রাজ্য এবং নেপাল ও ভুটান নামক দুটি ভূমিবেষ্টিত প্রতিবেশী দেশ, এবং এছাড়াও তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল (চীন) সহ সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে গঠিত বিস্তীর্ণ পশ্চাদভূমি রয়েছে। একবিংশ শতাব্দীর পালাক্রমে, পণ্য পরিবহনের পরিমাণ আবার ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের সালের মার্চ পর্যন্ত, বন্দরটি বার্ষিক ৬,৫০,০০০ টি কনটেইনার প্রক্রিয়াকরণ করতে সক্ষম, যার বেশিরভাগই নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি থেকে আসে। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের তথ্য অনুযায়ী, কলকাতা বন্দর বিশ্বের ৮৫তম ব্যস্ত বন্দর (বাল্ক পণ্যের হিসাবে)।