আনুষ্ঠানিক কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ বিজয়ী দলের তালিকা
উইকিমিডিয়ার তালিকা নিবন্ধ / From Wikipedia, the free encyclopedia
কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসভিত্তিক কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের মধ্যকার প্রথম-শ্রেণীর লীগ প্রতিযোগিতাবিশেষ। সাংবার্ষিকভিত্তিতে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে লীগ আয়োজিত হয় ও মৌসুম শেষে লীগের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানীয় দলকে চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা প্রদান করা হয়। এসেক্স দল বর্তমান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাধারী দল। দলটি ২০১৯ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করে।
কাউন্টি ক্রিকেট প্রচলনের প্রথম আনুষ্ঠানিক সূত্রে দেখা যায় যে, অষ্টাদশ শতকের শুরুতে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে ব্যাপকভাবে খেলা হতো। তখন কেন্ট, মিডলসেক্স, লন্ডন ও সারে দল একে-অপরের বিপক্ষে নিয়মিতভাবে খেলায় অংশ নিতো।[1] এরপর থেকেই দ্রুত ক্রিকেট খেলা দেশের বাদ-বাকী অংশে ছড়িয়ে পড়ে। অষ্টাদশ শতকের শেষে দেশের সর্বত্র খেলা আয়োজিত হতে থাকে।[2] ১৭৪৪ সালে কেন্ট অল ইংল্যান্ড দলের মুখোমুখি হয় ও এক উইকেটে জয়লাভের মাধ্যমে প্রথম ইংরেজ ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে আবির্ভূত হয়।[3][4] পরবর্তী শতাব্দীগুলোয় ক্লাব ও কাউন্টি পর্যায়ের উভয় ক্ষেত্রে সমানতালে ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হতে থাকে। তবে, কেবলমাত্র ১৮৭০-এর দশক থেকে কাউন্টি ক্রিকেট নিয়মিতভাবে ও ধারাবাহিকভাবে শুরু হয়। তন্মধ্যে, ১৮৭০ সালে ২২টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে দশ বছর পর খেলা আয়োজনের সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ১৮৮।[5]
১৮২৬ সাল থেকে চ্যাম্পিয়ন কাউন্টির শিরোপার পুরস্কার বিরামহীনভাবে প্রদান করা শুরু হয়। তন্মধ্যে, ১৮৫২ সালের পূর্ব-পর্যন্ত কেন্ট, সারে কিংবা সাসেক্স দল ভিন্ন অন্য কোন দল চ্যাম্পিয়নের মর্যাদা পায়নি।[6] ১৮৭৩ সালে খেলায় অংশগ্রহণের নিয়ম-কানুন প্রবর্তন করা হয়। দীর্ঘদিন এভাবে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ চালু হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে, চ্যাম্পিয়ন কাউন্টি পুরস্কারের বিষয়টি ১৮৮৬ সালের শেষদিক পর্যন্ত অনিয়মিতভাবে চলতে থাকে। এ বছরেই ক্রিকেট ম্যাগাজিন সারে দলকে আনুষ্ঠানিকভাবে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করে। তবে, অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থা একমত হয়ে নটিংহ্যামশায়ারকে এ মর্যাদার অধিকারী বলে মত প্রকাশ করে।[7] ১৮৮৯ সালে প্রধান ক্লাবগুলোর সম্পাদকগণ সভায় বসেন ও দলগুলোর অবস্থানের বিষয়ে একমত হন। ১৮৯০ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়।[8] প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে সারে দল শিরোপা লাভ করে। দলটি চৌদ্দটি খেলার মধ্যে নয়টিতে জয় পেয়েছিল।[9] চ্যাম্পিয়নশিপের আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে ও ১৯০৫ সালের মধ্যে ক্লাবের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ১৬ ক্লাবের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯২১ সালে গ্ল্যামারগন দল প্রতিযোগিতায় যোগদান করে। দলটি একমাত্র ইংরেজ কাউন্টি ক্লাববিহীন দলের মর্যাদা পায়। সাম্প্রতিককালে ১৯৯২ সালে ডারহাম এ প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয়।
সারে ও ইয়র্কশায়ার - প্রত্যেকেই প্রথম তেরোটি চ্যাম্পিয়নশিপের মধ্যে ছয়টিতে বিজয়ী হয়। তবে, এরপর থেকে চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা বিভিন্ন দলের মধ্যে ভাগাভাগির পর্যায়ে চলে যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব-পর্যন্ত প্রবর্তনকালীন দুই সদস্য বাদে সকলেই শিরোপা পায়। উভয় যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে ইয়র্কশায়ার দল একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করে। এ সময়ে ২১ মৌসুমের মধ্যে ১২টিতেই শিরোপা পেয়েছিল দলটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সারে দল দীর্ঘকাল প্রাধান্য বিস্তার করে। ১৯৫০-এর দশকে দলটি একাধারে সাত বছর শিরোপা জয় করেছিল। এরপর ইয়র্কশায়ার দশটি শিরোপার সাতটিতে শিরোপা পায়। এরপর থেকে কোন কাউন্টিই এ পর্যায়ে নিজেদেরকে উপস্থাপন করতে পারেনি।[10] ২০০০ সালে প্রতিযোগিতাটি দুইটি বিভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। প্রথম বিভাগের দলটির শিরোপাধারী দলকে কাউন্টি চ্যাম্পিয়ন নমে ঘোষণা করেন উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকের সম্পাদক গ্রেইম রাইট। কেননা সেখানে কিছুসংখ্যক অর্থবিহীন খেলা অনুষ্ঠিত হতো।[11]
ইয়র্কশায়ার দল সর্বাধিক চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের রেকর্ডর অধিকারী। দলটি এ পর্যন্ত ৩২ বার একক শিরোপাসহ ১৯৪৯ সালে যৌথভাবে মিডলসেক্সের সাথে শিরোপা জয় করেছিল। এরপরই রয়েছে লন্ডনভিত্তিক দল - সারে ও মিডলসেক্স। দল দুটি যথাক্রমে ১৯ (ও একবার যৌথভাবে) এবং ১১ (ও দুইবার যৌথভাবে)বার শিরোপা লাভ করে।