![cover image](https://wikiwandv2-19431.kxcdn.com/_next/image?url=https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/52/Scale_drawing_underwater.jpg/640px-Scale_drawing_underwater.jpg&w=640&q=50)
অন্তর্জলীয় প্রত্নতত্ত্ব
From Wikipedia, the free encyclopedia
অন্তর্জলীয় প্রত্নতত্ত্ব বলতে পানির নিচে সম্পাদিত প্রত্নতত্ত্ব প্রাসঙ্গিক যেকোনো বিষয় বা কার্যক্রমকে বোঝায়।[1] প্রত্নতত্ত্বের অন্যান্য শাখার মতোই এর উৎপত্তি হয়েছে সেই প্রাগৈতিহাসিক কালে ও ধ্রুপদী সভ্যতার স্বর্ণযুগে, যার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ঐতিহাসিক যুগ ও শিল্পযুগের বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। মানুষের জন্য পানির নিচে গমন ও মুক্তভাবে চলাচলে প্রতিকূলতা থাকার দরুন এবং জাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারকারীদের দ্বারা প্রাথমিকভাবে অন্তর্জলীয় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান সমূহে গমন ও ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির উদ্ভব হওয়ার কারণে এর গ্রহণযোগ্যতা আপেক্ষিকভাবে বেশ দেরিতে উন্নতির মুখ দেখে।[2] তার ফলস্বরূপ অন্তর্জলীয় প্রত্নতত্ত্ব প্রাথমিকভাবে প্রকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য বেশ চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এসেছে।[3] এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে যখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই বিষয়ের উপর পড়াতে শুরু করে এবং তাত্ত্বিক এবং ব্যাবহারিক উভয় দিক দিয়েই উপ-বিষয় হিসেবে এটি দৃঢ়রূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আর গত শতাব্দীর আশির দশকে ব্যাপক আকারে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার পর থেকে বর্তমানে অন্তর্জলীয় প্রত্নতাত্ত্বিক বিষয়েই বেশ কয়েকটি শাখা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যেমন, সামুদ্রিক প্রত্নতত্ত্ব: সমুদ্র, নদী ও নদীর মোহনার পানির মধ্যে, উপরে অথবা এর আশেপাশে অতীতে মানুষের পরিচালিত কর্মকাণ্ড, জীবন, আচরণ, সংস্কৃতি ইত্যাদির বিষয়ের উপর বিজ্ঞান নির্ভর গবেষণা।[4] সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্তর্জলীয় প্রত্নতাত্ত্বিক ক্ষেত্রগুলি এবং পানির নিচে নিমজ্জিত ধ্বংসপ্রাপ্ত বিমানের গবেষণা অন্তর্জলীয় বিমান প্রত্নতত্ত্ব রূপে মূল ধারার প্রত্নতাত্ত্বিক কর্মকাণ্ড হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে।[5]
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/52/Scale_drawing_underwater.jpg/640px-Scale_drawing_underwater.jpg)
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/f/ff/LakeMurray_rockhouse_overview.jpg/640px-LakeMurray_rockhouse_overview.jpg)
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/0/07/Kaubalaeva_%22E._Russ%22_vrakk.jpg/640px-Kaubalaeva_%22E._Russ%22_vrakk.jpg)
যদিও প্রায়শই এটি ভুলবসত মনে করা হয়, তবে অন্তর্জলীয় প্রত্নতত্ত্ব কেবল জাহাজের ভগ্নাংশ ও ধ্বংসাবশেষ অধ্যয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। স্থানীয় ভূমিকম্পন-সংক্রান্ত ঘটনা যেমন, পোর্ট-রয়্যাল এবং আলেকজান্দ্রিয়া বিধ্বস্তকারী ভূমিকম্প বা মহাদেশীয় পর্যায়ে আরও ব্যাপক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র স্তরের পরিবর্তনের ফলস্বরূপ কোনো এক কালে মানব বসতি ছিল এমন শুকনো স্থলভাগ এখন পানির তলায় ডুবে গেছে।[6][7] শেষ বরফ যুগের শেষের দিকে, উত্তর সাগর একটি বৃহৎ সমভূমি ছিল এবং নৃতাত্ত্বিক বিভিন্ন উপাদানের পাশাপাশি ম্যামথের মতো প্রাণীর দেহাবশেষ কখনও কখনও মাছ ধরার ট্রলারের সাহায্যে পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। এছাড়াও, যেহেতু মানব বসতিগুলি সর্বদা জলের ব্যবহার করে চলেছে, কখনও কখনও শুকনো জমির চিহ্নগুলি হারিয়ে যাওয়ার পরে পানির নিচে তৎকালীন বসতিগুলোর দ্বারা নির্মিত এই কাঠামোগুলির অবশেষ এখনও রয়েছে (যেমন ক্র্যানোগ,[8] পোতাশ্রয় এবং সেতুগুলির ভিত্তি সমূহ,)। ফলস্বরূপ, অন্তর্জলীয় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলি বৃহৎ পরিসরে বিস্তৃত রয়েছে: ডুবে থাকা আদি বসতি এবং এমন জায়গাগুলি যেখানে লোকেরা একসময় বসবাস করত বা ভ্রমণ করেছিল যেগুলি পরবর্তীকালে সমুদ্রের স্তর বাড়ার কারণে পানির নিচে ঢাকা পড়েছিল; কুয়ো, সিনোতে, ধ্বংসাবশেষ (জাহাজ ও বিমানের ধ্বংসাবশেষ); জলে তৈরি কাঠামোর অবশেষ (যেমন ক্র্যানোগ, সেতু বা পোতাশ্রয়); অন্যান্য বন্দর সম্পর্কিত কাঠামো; যেমন, আবর্জনা বা ধ্বংসাবশেষের জায়গাগুলি যেখানে লোকেরা তাদের বর্জ্য, আবর্জনা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র যেমন জাহাজ, বিমান, অস্ত্রশস্ত্র এবং যন্ত্রপাতি জলে ফেলে দিয়ে ফেলেছিল।
অন্তর্জলীয় প্রত্নতত্ত্ব প্রায়শই স্থলজগতের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার পরিপূরক হয় কারণ প্রত্নতত্ত্বের এই দু'টি শাখা প্রায়শই বিভিন্ন উপাদান দ্বারা সংযুক্ত থাকে; যেমন, ভৌগোলিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য আরো অনেক উপাদান। ফলস্বরূপ, একটি অন্তর্জলীয় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান সংক্রান্ত অধ্যায়নে বিভিন্ন বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করতে হয় যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন হয়; যেমন, প্রাগৈতিহাসিক বিষয়াদি, ঐতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ব, সামুদ্রিক প্রত্নতত্ত্ব এবং নৃবিজ্ঞান সহ বিভিন্ন শাখা থেকে অনেক বিশেষজ্ঞের অন্তর্ভুক্ত প্রয়োজন হয় একটি বহুপক্ষীয় পদ্ধতির অধ্যয়ন চলমান থাকতে পারে। এর অনেক উদাহরণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হ'ল ভি.ও.সি. জাহাজ জুয়েডর্প্প ১৭১১ সালে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া উপকূলে হারিয়ে গিয়েছিল, যেখানে বেশ কিছু নাবিক বেঁচে গিয়েছিলেন এবং নিজেদেরকে উপকূলে প্রতিষ্ঠিত করার পরে ওই অঞ্চলের আদিবাসী উপজাতির সাথে পারস্পরিকভাবে বসবাস করে মিলিত হয়েছিল বলে যথেষ্ট জল্পনা-কল্পনা চলছে।[9] এই সাইটের প্রত্নতাত্ত্বিক স্বাক্ষরটি এখন আঞ্চলিক মানুষ এবং ইউরোপীয় যাজকবাদীদের মধ্যে যারা ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগে এই অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল তাদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ায় প্রসারিত হয়েছে।[10]