আফিমজাত ঔষধ
আফিম থেকে প্রাপ্ত ব্যথানাশক ও মাদকজাতীয় ঔষধের শ্রেণী / From Wikipedia, the free encyclopedia
ঔষধবিজ্ঞানের আলোচনায় আফিমজাত ঔষধ (ইংরেজি: opiate) বলতে চিরায়তভাবে আফিম থেকে প্রাপ্ত বা উদ্ভূত পদার্থকে বোঝায়। অন্যদিকে আফিম-সদৃশ ঔষধ একটি অপেক্ষাকৃত আধুনিক পরিভাষা, যা দিয়ে মানুষের মস্তিষ্কের আফিম-সদৃশ ঔষধ গ্রাহকগুলির সাথে আবদ্ধ হয়, এমন যেকোনও প্রাকৃতিক বা মানবনির্মিত কৃত্রিম পদার্থকে বোঝানো হয়।[1] আফিমজাত ঔষধগুলি হল এমন কিছু ক্ষারসদৃশ যৌগ যেগুলি আফিম গাছে (Papaver somniferum) প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যমান।[2] আফিম গাছ থেকে যে চিত্তপ্রভাবকারী যৌগগুলি পাওয়া যায়, তাদের মধ্যে মরফিন, কোডিন এবং থেবেইন উল্লেখ্য। খ্রিস্টীয় ৮ম শতক বা হয়ত তার আগে থেকেই ব্যথানাশক হিসেবে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় আফিমজাত ঔষধগুলি ব্যবহৃত হয়ে আসছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।[3] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুষম নিয়ন্ত্রিত পদার্থসমূহ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের বিভিন্ন পদার্থ নিয়ন্ত্রণ তফসিলের আফিমজাত ঔষধগুলিকে মধ্যম থেকে উচ্চ পর্যায়ে অপব্যবহারের সম্ভাবনাবিশিষ্ট ঔষধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
২০১৪ সালে ১ কোটি ৩০ লক্ষ থেকে ২ কোটি মানুষ বিনোদনের জন্য আফিমজাত ঔষধ সেবন করত (যা ১৫-৬৫ বছর বয়সী বিশ্ব জনসংখ্যার ০.৩% থেকে ০.৪%)।[4] মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের ভাষ্যমতে এইসব মাদক সেবনকারী ব্যক্তির মধ্যে ৪৭ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ ব্যক্তি ২০০০-২০১৪ সময়সীমায় মৃত্যুবরণ করে।[5] ২০১৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশ করে যে বিশ্বে প্রায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ লোক আফিমজাত ঔষধ অপব্যবহারজনিত রোগে ভুগছে। তারা ২০১৫ সালে আরও প্রকাশ করে যে ২০১৫ সালে বিশ্বে ঔষধ ব্যবহারের কারণে যে সাড়ে চার লক্ষ ব্যক্তির মৃত্যু হয়, তাদের এক-তৃতীয়াংশ বা অর্ধেকই আফিমজাত ঔষধ সেবনের কারণে ঘটেছিল।[6]