ইসলামি মৃৎশিল্প
From Wikipedia, the free encyclopedia
মধ্যযুগীয় ইসলামিক মৃৎশিল্প চীনা মৃৎশিল্পের, তারপর ইউরেশীয় উৎপাদনের অবিসংবাদিত নেতাদের, এবং তারপর কনস্ট্যাণ্টিনোপল সাম্রাজ্য এবং ইউরোপের মৃৎশিল্পের মধ্যবর্তী এক ভৌগোলিক অবস্থানে অধিকৃত ছিল। ওই যুগের অধিকাংশ সময়ের জন্যে এটি সঙ্গতভাবেই বলা যায় যে তা নান্দনিক অর্জন এবং প্রভাব এই দুই ক্ষেত্রের মধ্যে সেইসাথে, চীন থেকে ধার করা এবং কনস্ট্যাণ্টিনোপল আর ইউরোপে রপ্তানি এবং প্রভাব ফেলার মধ্যে অবস্থিত ছিল। মদ্যপান এবং খাদ্যগ্রহণের জন্যে সোনা এবং রুপোর পাত্র ব্যবহার করার প্রচলন, এই আদর্শটি প্রাচীন রোম এবং পারস্যে, সেইসাথে মধ্যযুগীয় খ্রিষ্টীয় সমাজে হাদিসের[1] দ্বারা নিষিদ ছিল্ধ, ফলাফল হিসেবে মুসলিম অভিজাতেরা মাটির পাত্র এবং কাচের খাবার পাত্র ব্যবহার করতেন, যেহেতু মাটির পাত্র (কিন্তু কাঁচের পাত্রের পরিমাণ অল্প ছিল) চীনেও ছিল, কিন্তু ইউরোপ এবং কনস্ট্যান্টিনোপলে অনেক বিরল ছিল। একইভাবে ইসলামী বিধিনিষেধ আলঙ্কারিক দেয়াল-চিত্রকে ভীষণভাবে নিরুৎসাহিত করত, স্থাপত্যে আলঙ্কারিক নকশার এবং প্রায়শই জ্যামিতিক-প্যাটার্নের টালির ব্যবহারকে উৎসাহিত করত, যা ইসলামি মৃৎশিল্পের সবচেয়ে স্বতন্ত্র এবং মৌলিক বৈশিষ্ট্য।
ইসলামি মৃৎশিল্পের যুগ ৬২২ সালের দিকে শুরু হয়। ৬৩৩ সাল থেকে, মুসলিম সেনাবাহিনীসমূহ দ্রুত পারস্য, কনস্ট্যাণ্টিনোপল, মেসোপটেমিয়া, আনাতোলিয়া, মিশর এবং পরবর্তী আন্দালুসিয়ার দিকে অগ্রবর্তী হতে থাকে। ইসলামি মৃৎশিল্পের আদি ইতিহাস কিছুটা ধোঁয়াটে এবং জল্পনাকল্পনার বিষয় থেকে যায় যেহেতু অল্পই প্রমাণ টিকে আছে। দালান এবং মসজিদ স্থাপত্যসংক্রান্ত অলংকরণের জন্যে তাদের ব্যবহৃত টালিসমূহ যা ধ্বংসের হাত থেকে বেঁচে গেছে সেগুলো ছাড়া, মধ্যযুগের গোড়ার দিকের অনেক মৃৎশিল্প বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
মুসলিম বিশ্ব মেসোপটেমিয়া, পারস্য, মিশর, উত্তর আফ্রিকা (আফ্রিকান লাল মাটির পাত্র) এবং পরবর্তীতে অন্যান্য এলাকায় উল্লেখযোগ্য মৃৎশিল্প পায়। বস্তুত, চীনামাটির মৃৎশিলের উদ্ভব মিশরে খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে তা চতুর্থ খৃষ্টপূর্বে প্রথম প্রবর্তিত হয়। যাইহোক, এইসব ঐতিহ্যের বেশিরভাগ আলঙ্কারিক নকশার প্রচুর ব্যবহার করত, যা অনেকটাই কমে যায়, যদিও সম্পূর্ণভাবে নয়, ইসলামের অধীনে।