কন্নড় সাহিত্য
কন্নড় ভাষার সাহিত্য / From Wikipedia, the free encyclopedia
কন্নড় সাহিত্য হল প্রধানত দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে কথিত এবং কন্নড় লিপিতে লিখিত দ্রাবিড় কন্নড় ভাষায় রচিত সাহিত্য।[1]
এই সাহিত্যকে দেড় হাজার বছরের প্রাচীন এক সাহিত্যধারা মনে করা হয়।[2][3][4][5][6] খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দী থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত সমৃদ্ধ পাণ্ডুলিপি প্রথায় নির্দিষ্ট কিছু কন্নড় সাহিত্যকর্ম এখনও সুলভ।[7] কন্নড় ভাষা তিনটি ভাষাগত পর্যায়ে বিভক্ত: প্রাচীন (৪৫০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ), মধ্য (১২০০-১৭০০ খ্রিস্টাব্দ) ও আধুনিক (১৭০০-বর্তমান);[8] এবং আধুনিক যুগে উত্তরণের পূর্বাবধি এই সাহিত্যকে জৈন, লিঙ্গায়েত ও বৈষ্ণব —এই তিন শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা হয়, কারণ এই তিনটি মতবিশ্বাসই কন্নড় ভাষার ধ্রুপদি সাহিত্যকে রূপদান করেছিল।[9][10][11] অষ্টাদশ শতাব্দীর আগের সাহিত্য প্রধানত ধর্মীয় সাহিত্য হলেও সেই যুগে কিছু ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্যও রচিত হয়েছিল।[12][13]
কবিরাজমার্গ (আনুমানিক ৮৫০ খ্রিস্টাব্দ) থেকে শুরু করে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত কন্নড় সাহিত্য প্রায় সম্পূর্ণতই জৈন সাহিত্যিকদের রচনা। এঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন চালুক্য, গঙ্গ, রাষ্ট্রকূট, হৈসল[14][15] ও যাদব রাজারা।[16] রাজা অমোঘবর্ষের রাজত্বকালে রচিত কবিরাজমার্গ কন্নড় সাহিত্যের প্রাচীনতম প্রাপ্ত সাহিত্য নিদর্শন হলেও আধুনিক গবেষকেরা সর্বসম্মতভাবেই মনে করেন যে এই ভাষায় গদ্য, কাব্য ও ব্যাকরণের ঐতিহ্য তার আগেও বিদ্যমান ছিল।[17][18][19]
দ্বাদশ শতাব্দীতে লিঙ্গায়েত আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট সাহিত্য জৈন সাহিত্যের সঙ্গে সঙ্গেই বিকাশ লাভ করতে শুরু করে।[20] চতুর্দশ শতাব্দীতে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের যুগে জৈন প্রভাব হ্রাস পেতে থাকে এবং পঞ্চদশ শতাব্দীতে এক নতুন বৈষ্ণব সাহিত্যের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে। এই যুগে হরিদাস সন্তদের ভক্তি আন্দোলন ছিল একটি যুগান্তকারী ঘটনা।[21]
ষোড়শ শতাব্দীতে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতনের পরে মহীশূরের ওডেয়ার ও কেলাডির নায়ক সহ বিভিন্ন রাজবংশ কন্নড় সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করতে থাকে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে গদ্য আখ্যান, উপন্যাস, ছোটোগল্পের মতো কয়েকটি ধারার উদ্ভব ঘটে ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাবে। আধুনিক কন্নড় সাহিত্য সুপরিচিত ও বহুল স্বীকৃত: বিগত অর্ধশতাব্দীকালে কন্নড় ভাষার ৮ জন সাহিত্যিক জ্ঞানপীঠ পুরস্কার, ৬৩ জন সাহিত্যিক সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার এবং ৯ জন সাহিত্যিক সাহিত্য অকাদেমি ফেলোশিপ পেয়েছেন।[22][23][24]