কালিয়া জীউ মন্দির
দিনাজপুর শহরে অবস্থিত একটি মন্দির / From Wikipedia, the free encyclopedia
কালিয়া জীউ মন্দির কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে নিবেদিত বাংলাদেশের দিনাজপুর শহরে অবস্থিত একটি মন্দির। দিনাজপুর রাজবাড়ির পশ্চিমে মন্দিরটির অবস্থান।[1][2][3]
দিনাজপুর রাজবাড়িতে দুর্গা মন্দিরের উত্তর দিকে ঠাকুরবাড়ি মহলে কালিয়াজিউ মন্দির অবস্থিত।[4] এই মন্দিরটি ১৭০০ শতকে নির্মিত । জন্মাষ্টমীর দুদিন আগে ষষ্ঠীতে কান্তজিউ মন্দিরের রুক্মিণীকান্ত বিগ্রহকে এই মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। অতীতে ময়ূরপঙ্খী নৌকায় চড়ে ঢেপা নদী হয়ে সড়কপথে পদব্রজে চতুর্দোলায় জাঁকজমকপূর্ণ শোভাযাত্রা করে বিগ্রহ আনা হত। বর্তমানে এই প্রথা প্রচলিত থাকলেও সেই বিশেষ ময়ূরপঙ্খী নৌকার কোনও অস্তিত্ব নেই। দুর্গাপুজোর সময় ভক্তহৃদয় রাজবাড়িতেই কান্তজিউ বিগ্রহ দর্শন করতে পারে। প্রথানুযায়ী এই বিগ্রহকে তিনমাস রাজবাড়িতে রেখে রাসপূর্ণিমার দুইদিন পূর্বে ত্রয়োদশী তিথিতে পুনরায় পদব্রজে চতুর্দোলায় জাঁকজমকপূর্ণ শোভাযাত্রা করে কান্তজিউ মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্গাপুজোর কয়েকদিন দেবী দুর্গার পাশাপাশি দেবী চামুণ্ডা, কালিয়াজিউ বিগ্রহ ও কান্তজিউ বিগ্রহকে দুপুরে বিভিন্ন প্রকারের ফল, লুচি-পুড়ি, ছানা-ক্ষীর, দধি-মাখন-সন্দেশ, মিষ্টি-মিষ্টান্ন এবং রাতে নানাপ্রকারের ব্যঞ্জনাদিসহ অন্ন ও ঘৃতান্ন ভোগ দেওয়া হত। অন্নভোগ তৈরি করা হতো সুগন্ধি কাটারিভোগ আতপ-চাল দিয়ে। এরপর এসব ভোগ পরিবেশিত হতো কাঁসার থালা-বাটিতে। সঙ্গে রূপা ও কাঁসার গ্লাসে পরিবেশন করা হত জল। প্রতিদিনের ভোগের প্রসাদ মহারাজা-মহারানি ও রাজকুমার-রাজকুমারীদের নিকটে পাঠানো হত। প্রতিমা-বিগ্রহাদির ভোগরাগের পর উপস্থিত সাধারণ ভক্ত-দর্শনার্থীরা ছাউনিযুক্ত সারি-সারি ঘরগুলোতে অবস্থান করে ভোগের প্রসাদ ও চরণামৃতের স্বাদ নিতে।