কালীগঞ্জ উপজেলা, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহ জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ঝিনাইদহ জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সদর উপজেলা বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। এগারোটি ইউনিয়ন নিয়ে এই উপজেলা গঠিত। এই এগারোটি ইউনিয়নে ১৯৮ গ্রামে ৬৭,৮৪১ টি পরিবার (খানা) রয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা লোকসংখ্যা ২,৮২,৩৬৬ এর বেশি।[2]
কালীগঞ্জ | |
---|---|
উপজেলা | |
উপর থেকে: কালীগঞ্জ মুবারকগঞ্জ সুগারমিল,কালীগঞ্জ ঝিনাইদহ গলাকাটা মসজিদ, , জোড় বাংলা মসজিদ | |
মানচিত্রে কালীগঞ্জ উপজেলা, ঝিনাইদহ | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°২৪′৫৭″ উত্তর ৮৯°৭′৫১″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | ঝিনাইদহ জেলা |
আসন | ঝিনাইদহ ৪ |
আয়তন | |
• মোট | ৩১০ বর্গকিমি (১২০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ২,৮২,৩৬৬ |
• জনঘনত্ব | ৯১০/বর্গকিমি (২,৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৪.৮৩% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৭৩৫০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ৪৪ ৩৩ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
কালীগঞ্জ উপজেলার মোট আয়তন ৩১০.১৬ বর্গ কিলোমিটার। কালীগঞ্জ উপজেলার অবস্থান ২৩.১৬ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৩.২৮ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.০২ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৮৯.১৬ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। এর উত্তরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা, দক্ষিণে যশোর সদর উপজেলা ও যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলা, পূর্বে মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলা ও যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে কোটচাঁদপুর উপজেলা ও যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলা।[3]
১৮৬৩ সালের পূর্বে কালীগঞ্জ নলডাঙ্গা রাজবাড়ী প্রসাশনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬৩ সালে কালীগঞ্জ থানার সৃষ্টি হয়। কালীগঞ্জ থানাকে উপজেলায় রুপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। [3] এই উপজেলায় ১টি পৌরসভা, ১১ টি ইউনিয়ন,[4] ১৮৮টি মৌজা এবং ১৯৮টি গ্রাম রয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন ও এর জিও কোড হলঃ
কালীগঞ্জ উপজেলার ধর্মগুলি (২০১১)[5] | ||||
---|---|---|---|---|
ধর্ম | শতকরা | |||
ইসলাম | ৮৩.৭৪% | |||
হিন্দুধর্ম | ১৬.০০% | |||
অন্যান্য বা উল্লেখ নেই | ০.২৬% |
২০১১ সালের বাংলাদেশ জনগণনার তথ্যাদি অনুযায়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ৬৭,৮৪১ টি পরিবার এবং ২,৮২,৩৬৬ জন লোক বাস করে। ৫৬,২৮০ (১৯.৯৩%) জন দশ বছরের কম বয়স্ক ছিলেন। কালীগঞ্জের গড় সাক্ষরতার হার ৫১.৯৭%, যা জাতীয় গড়ের ৫১.৮% এর সম্পর্কে তুলনায় কম নয়। লিঙ্গ অনুপাত ১,০০০ মহিলা প্রতি ১,০০০ পুরুষ। জনগণের ১৬.০৬% (৪৫,৩৪১) মানুষ শহুরে এলাকায় থাকে।[5][6]
১৯৯১ সালের বাংলাদেশ জনগণনার অনুযায়ী, কালীগঞ্জের জনসংখ্যা ছিল ২,১৯,১২৬ জন। পুরুষ জনসংখ্যার অংশ ৫১.৭৬% এবং মহিলা ৪৮.২৪% ছিল। ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স্ক জনগণের সংখ্যা ১,১২,৫৮৭ ছিল। কালীগঞ্জের গড় সাক্ষরতার হার ২৯.৭% (৭+ বছর), যা জাতীয় গড়ের ৩২.৪% এর সম্পর্কে কম ছিল।[7]
এই গঞ্জ শহর প্রতিষ্ঠা করে নলডাঙ্গা রাজা প্রমথভূষণ দেবরায়। এটি নলডাঙ্গা রাজবংশ-এর তহশীল ভুক্ত ছিল। প্রায় দেড়শ বছর পূর্বে বর্তমান স্থানে এই শহরের গোড়াপত্তন। কালী দেবী-এর নামানুসারে নামকরণ করা হয় কালীগঞ্জ। পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক জটিলতায় কখনও আলীগঞ্জ, কখনও মোবারকগঞ্জ, কখনও মধুগঞ্জ নামকরণ করা হলেও শেষ পর্যন্ত কালীগঞ্জ নামটি তার ঐতিহাসিকতা নিয়ে টিকে আছে। ব্রিটিশ আমলে এখানে নদী উপর ব্রিজ এবং রেল স্টেশন নির্মিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার হয়ে ওঠে এখানকার গণমানুষ। মুসলিম লীগের মোবারক আলী (?-১৯৫৯) এই আন্দোলনে এখানকার অন্যতম নেতা ছিলেন। পূর্ব-পাকিস্তান সময়ে মোবারক আলীর নামে মোবারকগঞ্জ চিনিকল, মোবারকগঞ্জ চিনিকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোবারকগঞ্জ স্টেশনের নামকরণ করা হয়।
যশোর এবং ঝিনাইদহ সীমান্তে মহিষাহাটি গ্রামের মান্দারতলায় ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং আনুমানিক ১০০ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা মান্দারতলা থেকে পিছু হটে আসে। পরদিন ১৪ এপ্রিল দুলালমুন্দিয়ায় প্রতিরক্ষা ব্যুহ গড়ে তোলে। কিন্তু যশোর ক্যান্টনমেন্ট পাকিস্তানিদের খুব শক্ত ঘাঁটি ছিল। ফলে তারা পিছন থেকে আক্রমণ করে। এইদিনের যুদ্ধে আনুমানিক ১৫০ থেকে ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পরিণতির সময়ে ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ কালীগঞ্জ শত্রুমুক্ত হয়। কালীগঞ্জ উপজেলার ৩১৭ জন মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন। এই শহরে একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিচিহ্ন স্তম্ভ রয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলায় অনেকগুলো নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে চিত্রা নদী, ভৈরব নদ ও বেগবতী নদী।[8][9] বেগবতী নদী জেলা সদর থেকে আলাদা করেছে। বারোবাজার ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদী যশোর জেলা হতে এই উপজেলাকে আলাদা করেছে।
এছাড়া মর্জাদ, মাজদিয়া, বারফা, চাঁদবার বাওড় ও সিমলা বাওড় রয়েছে। বিলের মধ্যে সাকোট, উত্তর, দিঘার, অরুয়া সালভা এবং তেঁতুল বিল উল্লেখযোগ্য।[10]
প্রতিষ্ঠানের নাম | প্রতিষ্ঠার তারিখ | অবস্থান | পর্যায় |
---|---|---|---|
সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় | ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দ | নলডাঙ্গা | মাধ্যমিক |
কাদির কোল আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা | দাখিল | ||
কাদির কোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | প্রাথমিক | ||
আল-জামেয়াতুল ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম মাদ্রাসা | বলিদাপাড়া | কামিল | |
বালিয়াডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসা | দাখিল | ||
বালিয়াডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় | মাধ্যমিক | ||
বালিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | প্রাথমিক | ||
বালিয়াডাঙ্গা ন্যাশনাল প্রিক্যাডেট একাডেমী | প্রাথমিক | ||
দামোদরপুর কারামতিয়া দাখিল মাদ্রাসা | দাখিল | ||
গাজীর হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় | মাধ্যমিক | ||
লাওতলা কলেজ | বড় ঘিঘাটি | উচ্চ-মাধ্যমিক | |
সরকারি এম ইউ কলেজ | উচ্চ-মাধ্যমিক | ||
শহীদ নূর আলী কলেজ | কালীগঞ্জ | উচ্চ-মাধ্যমিক | |
হাসানহাটি বড় ধোপাদি এবাদৎ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় | মাধ্যমিক | ||
রায়গ্রাম বানীকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় | সিংগীর বাজার, রায়গ্রাম | মাধ্যমিক | |
পাঁচকাহুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় | বারবাজার | মাধ্যমিক | |
বারবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয় | বারবাজার | মাধ্যমিক | |
মেগুরখির্দ্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় | প্রাথমিক | ||
বারফা প্রাথমিক বিদ্যালয় | মাধ্যমিক | ||
আসাদুজ্জামান হোসনিন কেয়াবাগান আদর্শ কলেজ | উচ্চ-মাধ্যমিক | ||
মোবারকগঞ্জ চিনিকল মাধ্যমিক বিদ্যালয় | মোবারকগঞ্জ চিনি কল লিমিটেড | মাধ্যমিক | |
বাবরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | প্রাথমিক | ||
পুখুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | প্রাথমিক | ||
মনোহরপুর পুকুরিয়া দাখিল মাদ্রাসা | দাখিল | ||
পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | প্রাথমিক | ||
দয়াপুর ভাতঘরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | প্রাথমিক | ||
ভাতঘরা দয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় | মাধ্যমিক | ||
সলিমুন্নেছা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় | মাধ্যমিক | ||
সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ প্রাথমিক বিদ্যালয় | প্রাথমিক | ||
বি.এইস.এবি মুন্দিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় | কেয়াবাগান,আগমুন্দিয়া | মাধ্যমিক | |
বুজিডাঙ্গা মুন্দিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় | প্রাথমিক | ||
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মাধ্যমিক বিদ্যানিকেতন | ঝনঝনিয়া | মাধ্যমিক |
নলডাঙ্গা রাজবাড়ি(এনআরবি) রিসোর্ট এন্ড পিকনিক স্পট বর্তমান নাম এনআরবি পার্ক এন্ড রিসোর্ট, নলডাঙ্গা বাজারের দক্ষিণপাশে
এখানকার সুইতলা মল্লিকপুর নামক স্থানে এশিয়ার বৃহত্তম বট গাছ রয়েছে। বারোবাজার সুলতানী আমলের মসজিদ এবং নলডাঙ্গা মঠবাড়ী রাজাদের নির্মিত অনেকগুলো মন্দির। উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছেঃ গাজীকালু চম্পাবতীর মাজার, গলাকাটা মসজিদ, জোড়বাংলা মসজিদ, পীর বলুদেওয়ান এর মাজার। এছাড়াও বলুদেওয়ানের মাজার, এটি কালিগঞ্জ থানার রাখালগাছি ইউনিয়নের হাসানহাটি গ্রাম ও ধোপাদি গ্রামের মিলন কেন্দ্রে অবস্থিত।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.