কিসুমু
ভিক্টোরিয়া হ্রদের পাড়ে অবস্থিত কেনিয়ার অভ্যন্তরীণ নৌবন্দরনগরী / From Wikipedia, the free encyclopedia
কিসুমু কেনিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম নগরী (রাজধানী নাইরোবি ও উপকূলীয় বন্দরনগরী মোম্বাসার পরে)। এটি ভিক্টোরিয়া হ্রদ অববাহিকা অঞ্চলের তৃতীয় বৃহত্তম নগরী (উগান্ডার কাম্পালা ও তানজানিয়ার মোয়াঞ্জা নগরীর পরে)।
কিসুমু | |
---|---|
কিসুমু নগরী ও কাউন্টি | |
ডাকনাম: "হ্রদপারের নগরী", "কিসুমো","কিসুমু দালা","কিসুমু পাচো" | |
কেনিয়াতে অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ০°০৫′ দক্ষিণ ৩৪°৪৬′ পূর্ব | |
দেশ | কেনিয়া |
কাউন্টি | কিসুমু কাউন্টি |
প্রতিষ্ঠা | ১৯০১ |
সরকার | |
• শাসক | কিসুমু কাউন্টি |
• আইনসভা | কাউন্টি সংসদ |
• প্রশাসক | অধ্যাপক আনিয়াং নিয়ং-ও |
• উপ-প্রশাসক | ড. ম্যাথিউস ওউইলি |
আয়তন | |
• স্থলভাগ | ২৯৭ বর্গকিমি (১১৫ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ১,১৩১ মিটার (৩,৭১১ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১৯) | ৬,১০,০৮২[1] |
বিশেষণ | Jo Kisumo (Dholuo) |
সময় অঞ্চল | EAT (ইউটিসি+3) |
এলাকা কোড | 057 |
HDI (2017) | 0.653[2] medium |
GDP (2018) | 3.9 billion USD[3] |
ওয়েবসাইট | kisumu |
কিসুমু থেকে অদূরে কোগেলো নামের একটি গ্রামে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার পিতৃনিবাস।[4]
সাংস্কৃতিকভাবে কিসুমু নগরীটি পূর্ব আফ্রিকার লুও ভাষাভাষী জাতির প্রধান বসতি। এটি কাভিরোন্দো অঞ্চলের স্থানীয় অধিবাসীদের জন্য প্রাক-ঔপনিবেশিক, ঔপনিবেশিক ও উত্তর-ঔপনিবেশিক আধুনিক যুগে এসেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পৌর কেন্দ্র ছিল। কেনিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু রাজনৈতিক ঘটনা কিসুমু শহরে ঘটে, যাদের মধ্যে ১৯৬৯ সালে কেনিয়ার প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জোমো কেনিয়াতা ও উপরাষ্ট্রপতি জারামোগি ওদিঙ্গার মধ্যকার রাজনৈতিক দ্বন্দ্বটি উল্লেখ্য। [5] রাজনৈতিক গুরুত্বের পাশাপাশি কিসুমু কেনিয়ার সবচেয়ে অগ্রগণ্য শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্রগুলির একটি। বর্তমানে নগরীটির কেন্দ্র ও নিম্নাঞ্চলগুলির আধুনিকীকরণ কাজ চলছে যেখানে হ্রদ-পারস্থ এলাকার উন্নয়ন, মূল সড়কগুলির যানজট মুক্তকরণ, সড়কগুলিকে আরও পথচারীবান্ধব করে তোলা, ইত্যাদি কর্মকাণ্ড উল্লেখ্য।[6] প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও কিসুমু রাজধানী নাইরোবিতে অবস্থিত কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলা ও স্থানীয় রাজনীতিবিদ নেতাদের অদক্ষ নেতৃত্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রশাসনিকভাবে কিসুমু কেনিয়ার কিসুমু কাউন্টির রাজধানী নগরী। ২০১৯ সালের কেনিয়া জনগণনা অনুযায়ী এখানে প্রায় ৪ লক্ষ লোকের বাস।[7] কিসুমু কাউন্টির গ্রামীণ জনসংখ্যা ৭ লক্ষের কিছু বেশি।[8] কিসুমু নগরীতেই কিসুমু কাউন্টির বেশিরভাগ পৌর অধিবাসী বাস করে। কিসুমু এর নৌপথ ও রেলপথের কারণে মোম্বাসা থেকে ভিক্টোরিয়া হ্রদ পর্যন্ত বাণিজ্যিক পথটির উপরে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল এছাড়া এটি নিয়াঞ্জা ও পশ্চিমের প্রদেশগুলির কৃষিপণ্যের প্রধান বাজারকেন্দ্র।[9] এটি পশ্চিম কেনিয়ার বৃহত্তম ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নগরী। এটি পশ্চিম কেনিয়ার মহাহ্রদ অঞ্চলটির একটি বাণিজ্য ও পরিবহন কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। কিসুমু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নাইরোবি ও মোম্বাসাতে নিয়মিত উড্ডয়নের সুবিধা রয়েছে। মোয়াঞ্জা সম্প্রতি এটিকে জনসংখ্যায় ছাড়িয়ে গেলেও এখনও এটি বৃহত্তর ভিক্টোরিয়া হ্রদ অঞ্চলের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নগরী (কাম্পালার পরে)।
কিসুমু নগরীটির আদি নাম পোর্ট ফ্লোরেন্স। এটিকে ১৯০১ সালে উগান্ডা রেলব্যবস্থার একটি অন্তর্দেশীয় অন্তিম রেলস্টেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিলেও ইদানিং তেল রপ্তানিকে ঘিরে শহরটির আবারও সমৃদ্ধি হচ্ছে।[10]
কিসুমু শহরটি কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ভিক্টোরিয়া হ্রদের তীরে সমুদ্র সমতল থেকে ১১৩১ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। আরও সঠিকভাবে এটি ভিক্টোরিয়া হ্রদ থেকে প্রসারিত একটি দীর্ঘ, অগভীর বাহু উইনাম উপসাগরের তীরে অবস্থিত।[11] কিসুমু বিষুবরেখার মাত্র ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত হলেও সমুদ্র সমতল থেকে উচ্চতার জন্য এখানকার জলবায়ু মৃদু। এখান থেকে মোটরগাড়িতে মাত্র চার ঘন্টা দূরত্বে অবস্থিত কেনিয়ার বিখ্যাত মাসাই মারা সাফারি উদ্যানে প্রবেশ করা যায়। কিসুমু মহানগর অঞ্চলে মাসেনো, কোন্দেলে ও আহেরো শহরতলী ও উপশহরগুলি অবস্থিত।[12]