ভান্তে কুমার কাশ্যপ মহাস্থবির (দেবনাগরী: कुमार काश्यप महास्थविर) (জন্ম অস্তমান শাক্য) (২৪ জুলাই ১৯২৬ – ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২) হলেন একজন নেপালি বৌদ্ধ ভিক্ষু, যিনি ত্রিপিটকাচার্য হিসেবে আখ্যায়িত হন।[1]

আনন্দ কুটি বিহারে কুমার ভান্তে, ২০০৮

১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে নেপালে থেরোবাদী বৌদ্ধধর্ম প্রচার এবং নেপাল ভাষায় লেখালেখির কারণে তৎকালীন স্বৈরশাসক রাণা সরকার তাকে নির্বাসনে পাঠায়।[2] নির্বাসিত অবস্থায় তিনি ভারত এবং শ্রীলঙ্কায় দিন অতিবাহিত করেন।

প্রাথমিক জীবন

কুমার কাশ্যপ (বিকল্প নাম: কুমার ভান্তে) পশ্চিম নেপালের পাল্পা জেলার তানসেন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শনৎ কুমার শাক্য এবং মা তেজ মায়া শাক্য। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষানবিশ সন্ন্যাসব্রত গ্রহণের পূর্বে তিনি অস্তমান শাক্য নামে পরিচিত ছিলেন।[3] পৌরিহিত্য গ্রহণের পর কুমার ভান্তে কাঠমান্ডুতে বৌদ্ধদের একটি ক্ষুদ্র দলে যোগ দেন এবং থেরোবাদী বৌদ্ধধর্মের প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন।[4]

নির্বাসন

বৌদ্ধাবাদীরা দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করলে সরকার তাদের ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে ওঠে। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দরবারে তলব করা হয় এবং রাজশাসক কর্তৃক সমরূপে নিষিদ্ধ বৌদ্ধধর্মের প্রচার এবং নেপাল ভাষার লেখা বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ অমান্য করার কারণে ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুলাই তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

কুমার কাশ্যপ, ধম্মালোক মহাস্থবির, প্রজ্ঞানন্দ মহাস্থবিরসহ নেপাল থেকে নির্বাসিত আটজন ভিক্ষু প্রথমে ভারতের কুশীনগরে যান এবং সেখান থেকে সারনাথে গমন করেন। তারা সারনাথে তারা একত্রে ধর্মোদয় সভা নামে একটি বৌদ্ধধর্মীয় সম্প্রদায় গঠন করেন। কুমার কাশ্যপ পরবর্তীতে কালিম্পংয়ে গমন করেন এবং সেখান থেকে শ্রীলঙ্কায় চলে যান।[5][6]

নেপালে প্রত্যাবর্তন

শ্রীলঙ্কা থেকে একটি শুভাকাঙ্ক্ষী দল কাঠমান্ডু গমন করে সরকারকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ করার পর ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে কুমার কাশ্যপ নেপালে প্রত্যাবর্তন করতে সক্ষম হন।[7][8]

কাঠমান্ডুতে প্রত্যাবর্তনের পর কুমার কাশ্যপ স্বয়ম্ভুর আনন্দ কুটি বিদ্যাপীঠে লেখক এবং শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি সর্বমোট ছয়টি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তার প্রথম গ্রন্থ গৌতম বুদ্ধ ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। তিনি আনন্দ কুটি বিহার থেকে প্রকাশিত সাময়িকী আনন্দভূমির সম্পাদকও ছিলেন।[3] তিনি নেপালি পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণের জন্য গঠিত নেপাল লিপি গুঠির পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও ভূমিকা রাখেন।[9]

কুমার কাশ্যপ আনন্দ কুটি বিহারের মঠাধ্যক্ষ নিযুক্ত হন এবং সহকারী প্রধান ভিক্ষু থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।[4] কুমার ভান্তের মৃত্যুতে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি মাহিন্দা রাজাপক্ষে এবং প্রধানমন্ত্রী ডিএম জয়রত্নে গভীর শোক প্রকাশ করেন।[10] মায়ানমারের সরকার তাকে আজ্ঞামহ সাদ্ধম্মযুথিকাধ্বজ উপাধী প্রদান করে। এছাড়া ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন বৌদ্ধ সংগঠন তাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে।[11]

আরও পড়ুন

তথ্যসূত্র

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.