গরুড়পুরাণ
পড়ে / From Wikipedia, the free encyclopedia
গরুড়পুরাণ হল হিন্দুধর্মের ১৮টি মহাপুরাণের অন্যতম। এটি সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি বৈষ্ণব ধর্মগ্রন্থ।[1] এই গ্রন্থে প্রধানত হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর লীলা বর্ণনা করা হলেও এটিতে সকল দেবদেবীরই মাহাত্ম্য কীর্তন করা হয়েছে।[2] এই গ্রন্থের আদিতম পাঠটি সম্ভবত খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দের রচনা।[3] কিন্তু পরবর্তীকালে দীর্ঘ সময় ধরে এটি সংশোধিত ও বিবর্ধিত হয়ে থাকবে।[4][5]
গরুড়পুরাণ গ্রন্থটির একাধিক পাঠ পাওয়া যায়। ১৬,০০০ শ্লোকবিশিষ্ট এই গ্রন্থের[5][6] অধ্যায়গুলিতে বিশ্বকোষের ধাঁচে বিভিন্ন ধরনের বহু বিষয় আলোচনা করা হয়েছে।[7] এই বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে সৃষ্টিতত্ত্ব, পুরাণ, দেবদেবীদের পারস্পরিক সম্পর্ক, নীতিশাস্ত্র, শুভ ও অশুভের বিরোধ, হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন শাখা, যোগতত্ত্ব, কর্মবাদ ও পুনর্জন্মবাদের প্রেক্ষিতে স্বর্গ ও নরকের ধারণা, পিতৃতর্পণাদি ও মোক্ষ-সংক্রান্ত ধ্যানধারণা, নদনদী ও ভূগোল, খনিজ ও বহুমূল্য পাথরের প্রকারভেদ, রত্নের গুণাগুণ বিচারপদ্ধতি, উদ্ভিদ ও ভেষজের তালিকা,[8] বিভিন্ন ধরনের রোগ ও সেগুলির উপসর্গ, বিভিন্ন ধরনের ঔধন, কামোদ্দীপক বস্তুসমূহ, রোগপ্রতিষেধকসমূহ, হিন্দু পঞ্জিকা ও তার মূল ভিত্তি, জ্যোতির্বিজ্ঞান, চাঁদ, গ্রহসমূহ, জ্যোতিষ, স্থাপত্য, গৃহনির্মাণ, হিন্দু মন্দিরের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ, ষোড়শ সংস্কার, দানধ্যান, অর্থনীতি, ব্যয়সংকোচ, রাজার কর্তব্য, রাজনীতি, রাজকর্মচারী, তাঁদের ভূমিকা ও তাঁদের নিয়োগপদ্ধতি, সাহিত্যের শ্রেণিবিভাগ, ব্যাকরণের নিয়মাবলি ইত্যাদি।[2][9][6] শেষ অধ্যায়গুলিতে বর্ণিত হয়েছে যোগাভ্যাস পদ্ধতি (সাংখ্য ও অদ্বৈত মতানুযায়ী), ব্যক্তিগত উন্নতি ও আত্মজ্ঞানের উপযোগিতার কথা।[2]
পদ্মপুরাণ গ্রন্থে পদ্মপুরাণ, ভাগবত পুরাণ ও বিষ্ণুপুরাণ সহ এই পুরাণটিকেও সাত্ত্বিক পুরাণের (সত্ত্বগুণ ও পবিত্রতা উপস্থাপনাকারী পুরাণ) তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।[10] প্রচলিত কিংবদন্তি অনুযায়ী, অন্যান্য সকল পুরাণের মতো এই পুরাণটির রচয়িতাও হলেন বেদব্যাস। [11]