চক্র প্রজাতি
From Wikipedia, the free encyclopedia
প্রকৃতিতে কিছু জনগোষ্ঠীমালা পরিলক্ষিত হয় যেখানে নিবিড় সম্পর্কযুক্ত জনগোষ্ঠীগুলো আন্তঃপ্রজননে সক্ষম হলেও অন্তত দু’টো প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থাকে যারা নিজেদের মধ্যে প্রজননে অক্ষম। জীববিজ্ঞানে এসব প্রজাতিকে চক্র প্রজাতি(ring species) বলা হয়। এসব প্রজাতি, যারা প্রজননে অক্ষম হলেও জিনগতভাবে সম্পর্কযুক্ত, প্রায়ই একই এলাকায় বসবাস করে এবং একটি বৃত্ত তৈরী করে। চক্র প্রজাতিরা দু’টো কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ:-
১) কোন জনগোষ্ঠীতে জিনগত অপসরণ ঘটলে কি ঘটতে পারে তা চক্র প্রজাতিরা প্রদর্শন করে, এভাবে তারা জৈববিবর্তনের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য দেয়।
২) বহু আগে বিলুপ্ত জনগোষ্ঠী ও বর্তমানে জীবিত জনগোষ্ঠীর মাঝে কি ঘটেছে, তা চক্র প্রজাতিরা জীবিত জনগোষ্ঠীর মধ্যেই প্রদর্শন করে। অতীত থেকে বর্তমানে কোন জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিবর্তন কীভাবে ঘটেছে, তা চক্র প্রজাতি সমৃদ্ধ জনগোষ্ঠীতে নিজের চোখেই পর্যবেক্ষণ করা যায়।
এছাড়াও চক্র প্রজাতিরা “প্রজাতি সমস্যা”কে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরে। জীববিজ্ঞানীরা প্রজাতির নামকরণ ও কোন প্রাণীগোষ্ঠীকে প্রজাতিতে বিভক্ত করতে গিয়ে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হন, সেগুলোকেই সম্যকভাবে “প্রজাতি সমস্যা” বলা হয়। একটি চক্র প্রজাতির সাথে দু’টো আলাদা প্রজাতির পার্থক্য হল জনগোষ্ঠীগুলোর সহাবস্থান- চক্রের মধ্যকার একাধিক সম্বন্ধযুক্ত জনগোষ্ঠী যদি বিলুপ্ত হয়ে জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রজননগত সম্বন্ধ বিনষ্ট করে, তবে একটি চক্র প্রজাতি দু’টো আলাদা প্রজাতি হিসেবে প্রতীয়মান হবে।
আন্তঃপ্রজননের ক্ষমতাকে গণিতের ভাষায় কোনভাবেই অতিক্রম সম্পর্ক বা transitive relation বলা যায় না- “ক” যদি “খ” এর সাথে প্রজনন করতে পারে এবং “খ” যদি “গ” এর সাথে প্রজনন করতে পারে, তাহলে যে “ক” “গ” এর সাথে প্রজনন করতে পারবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। চক্র প্রজাতি গণিতের অতিক্রম্যতার একটি অসাধারণ ব্যতিক্রম।[1]