জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দল
তুরস্কের উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক দল / From Wikipedia, the free encyclopedia
জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দল (তুর্কি: Milliyetçi Hareket Partisi, এমএইচপি) হলো একটি তুর্কি উগ্র-ডানপন্থী ও অতি-জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল। দলটিকে প্রায়শই নব্য-ফ্যাসিবাদী হিসেবে বর্ণনা করা হয় এবং সহিংস আধাসামরিক বাহিনী ও সংগঠিত অপরাধ গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত করা হয়। এর নেতা দেভলেত বাহচেলি।
জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দল Milliyetçi Hareket Partisi | |
---|---|
সংক্ষেপে | এমএইচপি |
সভাপতি | দেভলেত বাহচেলি |
সাধারণ সম্পাদক | ইসমেত বুয়ুকাতাম |
প্রতিষ্ঠাতা | আল্পারসলান তুর্কেশ |
প্রতিষ্ঠা | ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯; ৫৫ বছর আগে (1969-02-09) ২৪ জানুয়ারি ১৯৯৩; ৩১ বছর আগে (1993-01-24) (পুনঃপ্রতিষ্ঠা) |
পূর্ববর্তী | প্রজাতন্ত্রী গ্রামবাসী জাতি দল |
সদর দপ্তর | এহলিবেইত মো. জেয়হুন আতুফ কানসু জাদ্দ ন:১২৮, ০৬১০৫ আঙ্কারা, তুরস্ক |
সংসদীয় সংগঠন | ধূসর নেকড়ে[1][2][3][4][5] |
সদস্যপদ (২০২৩) | ৪৬৪,০৯২[6] |
ভাবাদর্শ | |
রাজনৈতিক অবস্থান | উগ্র-ডানপন্থা[33] |
জাতীয় অধিভুক্তি | জনতা জোট |
আনুষ্ঠানিক রঙ | লাল, সাদা (দাপ্তরিক) গাঢ় লাল (ঐতিহ্যগত) |
স্লোগান | Ülkenin Geleceğine Oy Ver ("দেশের ভবিষ্যতের জন্য ভোট দিন") |
মহান জাতীয় সভা | ৪৮ / ৬০০ |
মেট্রোপলিটন পৌরসভা | ১ / ৩০ |
জেলা পৌরসভা | ২৩৩ / ১,৩৫১ |
প্রাদেশিক কাউন্সিলর | ১৮৮ / ১,২৫১ |
পৌরসভা | ২,৮১৯ / ২০,৪৯৮ |
দলীয় পতাকা | |
ওয়েবসাইট | |
www | |
তুরস্কের রাজনীতি |
দলটি ১৯৬৯ সালে তুর্কি সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্নেল আল্পারসলান তুর্কেশ দ্বারা গঠিত হয় যিনি ১৯৬৫ সালে প্রজাতন্ত্রী গ্রামবাসী জাতি দলের (সিকেএমপি) নেতা হয়েছিলেন। দলটি ২০শ শতাব্দীর শেষার্ধে প্রধানত একটি সর্ব-তুর্কি এবং তুর্কি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক এজেন্ডা অনুসরণ করেছিলো।১৯৯৭ সালে তুর্কেশের মৃত্যুর পর দেভলেত বাহচেলি দলটির দায়িত্ব নেন। এর যুব শাখা হলো ধূসর নেকড়ে (Bozkurtlar) সংগঠন, "জাতীয়তাবাদী অগ্নিক্ষেত্র" (Ülkü Ocakları) নামেও পরিচিত এই সংগঠন ১৯৭০-এর দশকে তুরস্কে রাজনৈতিক সহিংসতার সময় সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
আল্পারসলান তুর্কেশ তাদের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের জাতীয়তাবাদী নীতি থেকে অনেক দূরে সরে যাওয়ার জন্য প্রজাতন্ত্রী জনতা দলের (সিএইচপি) সমালোচনা করার পরে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন, তিনি দাবি করেন যে যদি সিএইচপি আতাতুর্কের আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হতো তাহলে তিনি এমএইচপি প্রতিষ্ঠা করতেন না।[34] এমএইচপি ১৯৭৩ ও ১৯৭৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে ১৯৭০-এর দশকে "জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট" সরকারে অংশ নেওয়ার জন্য যথেষ্ট আসন জিতেছিলো। ১৯৮০ সালের অভ্যুত্থানের পরে দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়, কিন্তু ১৯৯৩ সালে এটি আসল নাম নিয়ে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। তুর্কেশের মৃত্যুর পর ও তার উত্তরসূরি হিসেবে দেভলেত বাহচেলির নির্বাচনের পর দলটি ১৯৯৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে ১৮% ভোট ও ১২৯টি আসন জিতে, এটি সর্বকালের সেরা ফলাফল। গণতান্ত্রিক বাম দল (ডিএসপি) ও মাতৃভূমি দল (এএনএপি) এদের সাথে জোটবদ্ধ হওয়ার পরে বাহচেলি পরবর্তীকালে উপ-প্রধানমন্ত্রী হন, যদিও তার আগাম নির্বাচনের আহ্বানের ফলে ২০০২ সালে সরকারের পতন ঘটে। ২০০২ সালের সাধারণ নির্বাচনে এমএইচপি ১০% নির্বাচনী সীমার নিচে নেমে আসে ও নবগঠিত ন্যায়বিচার ও উন্নয়ন দল (একেপি) বহুত্ব জয়ের পর তার সমস্ত সংসদীয় প্রতিনিধিত্ব হারিয়ে ফেলে।
এমএইচপি ১৪.২৭% ভোট নিয়ে সংসদীয় প্রতিনিধিত্ব ফিরে পাওয়া ২০০৭ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর দলটি সরকার ও কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির মধ্যে শান্তি আলোচনার তীব্র বিরোধিতা এবং সরকারকে নিয়ে দুর্নীতি ও কর্তৃত্ববাদের শাসক একেপির কঠোর সমালোচনা করতো। তা সত্ত্বেও ২০০৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, হিজাব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও জুন-জুলাই ২০১৫ সংসদীয় স্পিকার নির্বাচনের মতো পরিস্থিতিতে একেপিকে গোপনে সাহায্যকারী এমএইচপিকে প্রায়ই সমালোচকরা "একেপির জীবনরেখা" হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[35] ২০১৫ সাল থেকে বাহচেলি প্রকাশ্যে এরদোয়ান ও একেপিকে সমর্থন করে আসছে। এর ফলে দলটির মাঝে বিভেদ সৃষ্টি হয়, যার ফলে মেরাল আকশেনার এমএইচপি ছেড়ে মধ্যমপন্থী ও ইউরোপীয়পন্থী ইয়ি দল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৭ সালের গণভোটে এমএইচপি 'হ্যাঁ' ভোটকে সমর্থন করে ও ২০১৮ সালের তুর্কি সাধারণ নির্বাচনের জন্য একেপির সাথে জনতা জোটে নির্বাচনী চুক্তি গঠন করে। এইচএইচপি বর্তমানে একেপির নেতৃত্বে সংখ্যালঘু সরকারকে সমর্থন করে।