Loading AI tools
বাংলাদেশের ময়মনসিংহে অবস্থিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (জাককানইবি) বাংলাদেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি JKKNIU বা নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় নামেও পরিচিত । যা ময়মনসিংহ শহরকেন্দ্র থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে ময়মনসিংহের একটি উপশহর ত্রিশালের নামাপাড়া-বটতলায় অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আট হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।
ধরন | সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় |
---|---|
স্থাপিত | ৯ মে ২০০৬ |
বাজেট | ৳ ৬১.৪৬ কোটি (২০২৪-২৫) [1] |
আচার্য | রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন |
উপাচার্য | অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম |
শিক্ষার্থী | ৯,০০০ |
৩৩ | |
ঠিকানা | নামাপাড়া, বটতলা, ত্রিশাল , , |
শিক্ষাঙ্গন | ৫৭ একর (শহুরে) |
সংক্ষিপ্ত নাম | জাককানইবি |
অধিভুক্তি | বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
ওয়েবসাইট | jkkniu |
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম ১৯৯০-এর দশক থেকে বেসরকারি খাতে ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটির সভাপতি ছিলেন ড. আশরাফ সিদ্দিকী, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদা আলী এবং কোষাধ্যক্ষ বদিউজ্জামান, অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ডাক বিভাগ। ফোরাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে দুই ধরনের সাহায্যদাতা সংগ্রহ করে। ১. অর্থদাতা, ২. জমিদাতা। অর্থদাতাদের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তৎকালীন ভূমি প্রতিমন্ত্রী রাশেদ মোশাররফ, বেশকিছু সংখ্যক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, চিকিৎসক এবং বিদ্যানুরাগী।
২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্যে একনেকের বৈঠকে একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০০৫ সালের পহেলা মার্চ এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০৭ সালের ২৪ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিনে বেগম খালেদা জিয়া দুটি অনুষদের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন এবং ৩ জুন ২০০৭ সালে প্রথম ব্যচের ক্লাস শুরু হয়। অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুর রহমান ছিলেন প্রথম উপাচার্য।[2] প্রথম ব্যাচে কলা অনুষদের অধীনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, সংগীত বিভাগ এবং বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের অধীনে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ মিলিয়ে সর্বমোট ১৮৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি। উনার স্মরণে তারই স্মৃতিবিজড়িত বটতলাতে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়।জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছোটবেলায় এই বটগাছের নিচে বসে বাঁশি বাজাতেন। কবি ত্রিশালের দরিরামপুর হাইস্কুলে পড়াশুনা করতেন। তাই তার স্মৃতিবিজড়িত এলাকায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় কবি'র নামে।
এটি ময়মনসিংহ মহানগরে ত্রিশাল উপশহরের নামাপড়া বটতলায় অবস্থিত অবস্থিত। এটি ময়মনসিংহ মূল নগর কেন্দ্র হতে প্রায় ২১ কিলোমিটার এবং রাজধানী ঢাকা হতে এর দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর স্মৃতি বিজড়িত বটতলা ঘেঁষে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৬টি অনুষদের অধীনে মোট ২৪টি বিভাগ রয়েছে।[3]
অনুষদের নাম | বিভাগ |
---|---|
বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ | কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ |
তড়িৎ এবং ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ | |
পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ | |
পরিসংখ্যান বিভাগ | |
ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ | হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগ |
অর্থসংস্থান ও ব্যাংকিং বিভাগ | |
মার্কেটিং বিভাগ | |
ব্যবস্থাপনা বিভাগ | |
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ | |
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ | অর্থনীতি বিভাগ |
লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনবিদ্যা বিভাগ | |
লোকাচারবিদ্যা বিভাগ | |
নৃবিজ্ঞান বিভাগ | |
জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ | |
স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগ | |
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ | |
কলা অনুষদ | বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ |
ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ | |
সঙ্গীত বিভাগ | |
নাট্যকলা ও পরিবেশনাবিদ্যা বিভাগ | |
চলচ্চিত্র ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ | |
দর্শন বিভাগ | |
ইতিহাস বিভাগ | |
আইন অনুষদ | আইন ও বিচার বিভাগ |
চারুকলা অনুষদ | চারুকলা বিভাগ |
বিশ্ববিদ্যালয়ে 'ইন্সটিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ' নামে একটি ইন্সটিটিউট আছে। এটি জাতীয় কবির বিভিন্ন গান, কবিতা, উপন্যাস, নাটক সর্বোপরি তার জীবনী এবং জীবনকর্মের ওপর গবেষণার জন্য একটি ইন্সটিটিউট। প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রমীলা বৃত্তি, বুলবুল বৃত্তি, কাজী সব্যসাচী বৃত্তি, কাজী অনিরুদ্ধ বৃত্তি ও উমা কাজী বৃত্তি প্রদান করে থাকে। ইন্সটিটিউটের বর্তমান অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রাশেদুল আনাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একদল গবেষক কক্সবাজারে উচ্চামাত্রার ইউরেনিয়ামের সন্ধান পান।[4][5]
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রয়েছে চারটি অ্যাকাডেমিক ভবন। ভবনগুলো হলো -
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য চারটি আবাসিক হল রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে কেন্দ্রীয় স্মৃতিস্তম্ভ; যার নামকরণ করা হয়েছে 'চির উন্নত মম শির'।
কলা ভবনের নিকটে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া 'চক্রবাক'।
বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে পাঁচতলাবিশিষ্ট আধুনিক ও সু-সজ্জিত 'কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার'।
বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলাধুলা চর্চার জন্য রয়েছে সু-বিশাল মাঠ,যার নাম রাখা হয়েছে 'শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ'।
যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়টি সাংস্কৃতিকভাবে অগ্রসরমান, সেহেতু এর অভ্যন্তরে রয়েছে 'গাহি সাম্যের গান মুক্তমঞ্চ'। এছাড়াও রয়েছে 'চুরুলিয়া মঞ্চ', যা কলা ভবনের নিকটে অবস্থিত।
ক্যাম্পাসে উপাচার্য মহোদয়ের সার্বক্ষণিক তদারকি অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে অত্যন্ত মনোরম আবহে নির্মিত হয়েছে ভিসি বাংলো,যার নামকরণ করা হয়েছে 'দুখু মিয়া বাংলো'।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষে নির্মাণ করা হয়েছে মেডিকেল সেন্টার,যার নামকরণ করা হয়েছে 'ব্যথার দান'।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা।এছাড়াও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষে রাখা হয়েছে নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস।
নাম | দায়িত্ব গ্রহণ | দায়িত্ব হস্থান্তর |
---|---|---|
এম. শামসুর রহমান[6] | ৭ জুন ২০০৬ | ১৯ এপ্রিল ২০০৯ |
সৈয়দ গিয়াসউদ্দিন আহমেদ | ২২ এপ্রিল ২০০৯[7] | ১৩ আগস্ট ২০১৩ |
অধ্যাপক ড. খোন্দকার আশরাফ হোসেন | ২২ এপ্রিল ২০১৩ | জুন ২০১৩ |
অধ্যাপক ড. মোহিত উল আলম | ১৩ আগস্ট ২০১৩ | ১২ আগস্ট ২০১৭ |
অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান | ১৩ নভেম্বর ২০১৭ [8] | ১৩ নভেম্বর ২০২১ |
অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর দে | ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ [9] | ১৪ আগস্ট ২০২৪ |
অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ [10] | বর্তমান |
বিশ্ববিদ্যালয়টি বিভিন্ন সংগঠনমূলক কাজে সক্রিয়। এখানে বছরের অধিকাংশ দিন বিভিন্ন ধরনের আনুষ্ঠানিকতা বা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। যেমন- চাকুরি মেলা, উচ্চশিক্ষা বিষয়ক সেমিনার, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, চলচ্চিত্র উৎসব, নাট্যোৎসব, প্রতিভা অন্বেষণ ইত্যাদি।
যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়টি সাংস্কৃতিক মননে পরিচালিত হয়,সেহেতু এখানে সারাবছর-ই উৎসবের আমেজ লেগে থাকে। প্রতিবছর-ই এখানে নজরুল জয়ন্তী, রবীন্দ্র জয়ন্তী ও বারামখানা'র উদ্যোগে লালন স্মরণোৎসব পালিত হয়। মাসব্যাপী নাট্যোসব, চলচ্চিত্র উৎসব, পিঠা উৎসব, নজরুল বইমেলা, কুয়াশা উৎসব অন্যতম আকর্ষণীয় দিক। বিশেষত ভিন্ন আমেজের কুয়াশা উৎসব এখানকার অন্যতম জনপ্রিয় উৎসবে পরিণত হয়েছে।প্রতি বছর গ্রীন ক্যাম্পাস নামের সংগঠন আয়োজন করে থাকে ফল উৎসব, যেখানে সংগঠনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেশি ফলের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি এবং ফল খাওয়ার উপকারীতা তুলে ধরে বিনামূল্যে ফল-মূল খাওয়ার একটি সুযোগ তৈরি করে থাকে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.