জামালগঞ্জ উপজেলা
সুনামগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সুনামগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জামালগঞ্জ বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। ১৮ ই এপ্রিল ১৯৮৩ খ্রি. তারিখে জামালগঞ্জ থানা থেকে উপজেলাতে উন্নীত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
জামালগঞ্জ | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে জামালগঞ্জ উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৫৯′০″ উত্তর ৯১°১৪′০″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | সিলেট বিভাগ |
জেলা | সুনামগঞ্জ জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৩৩৮.৭৪ বর্গকিমি (১৩০.৭৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২৩)[1] | |
• মোট | ১,৮৫,৮৬৬ |
• জনঘনত্ব | ৫৫০/বর্গকিমি (১,৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ২৯.৬৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩০০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৬০ ৯০ ৫০ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
জামালগঞ্জ উপজেলার আয়তন: ৩৩৮.৭৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫০´ থেকে ২৫°০৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০৫´ থেকে ৯১°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। এই উপজেলার উত্তরে তাহিরপুর উপজেলা ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা, দক্ষিণে খালিয়াজুড়ি উপজেলা ও দিরাই উপজেলা, পূর্বে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা ও ধর্মপাশা উপজেলা। এ উপজেলা মেঘালয় রাজ্যের পর্বত শ্রেণীর অতি সন্নিকটে যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মন্ডিত অনেক হাওড় ও বাওড় রয়েছে।
জামালগঞ্জ-এর নামকরণে ভাটীপাড়ার বয়োবৃদ্ধ জমিদার মরহুম এখলাছুর রহমান চৌধুরীর মতামত প্রণিধানযোগ্য। ১৯৬৪ সালে জনাব এখলাছুর রহমান চৌধুরীর দেয়া তথ্য থেকে জানা যায় যে, তাঁদের বংশের পূর্ব পুরুষগণের মধ্যে জামাল ফারুকী নামে একজন প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন। তাঁকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ভাটীপাড়া এস্টেট কর্তৃক নতুন ক্রয়কৃত দুটি তালুকের নামকরণ করা হয় জামালগড় ও জামালপুর। অতঃপর সাচনা বাজারের সঙ্গে নদীর পশ্চিমপাড়ে প্রতিযোগিতামূলক একটি নতুন বাজার প্রতিষ্ঠিত হলে এর নামকরণ করা হয় জামালগঞ্জ। “জামাল”-আরবী শব্দ-এর অর্থ মনোরম বা সুন্দর এবং “গঞ্জ”শব্দের অর্থ বাজার বা যেখানে ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। আবার “গঞ্জ”অর্থ শহরও বোঝায়। সে বিচারে জামালগঞ্জ হচ্ছে সুন্দর বা মনোরম শহর।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
জামালগঞ্জ উপজেলা একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা। হাওড় বেষ্টিত উপজেলা এবং রয়েছে অনেক বিল। যা জাতীয় অর্থনীতিতে খাদ্য ও আমিষের যোগান দেয়। সাচনা বাজার বৃটিশ শাসনামল প্রসিদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল।
জামালগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম জামালগঞ্জ থানার আওতাধীন।[2]
প্রশাসন জামালগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৯৪০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। জামালগঞ্জের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে ততটা জানা যায় নি। “জামাল”-আরবী শব্দ-এর অর্থ মনোরম বা সুন্দর এবং “গঞ্জ”শব্দের অর্থ বাজার বা যেখানে ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। আবার “গঞ্জ”অর্থ শহরও বোঝায়। সে বিচারে জামালগঞ্জ হচ্ছে সুন্দর বা মনোরম শহর।[3]
বর্তমানে জামালগঞ্জ উপজেলার আয়তন ৩৩৮.৭৪ বর্গকিলোমিটার।
জনসংখ্যা ১৩৮৯৮৫; পুরুষ ৭১৭০১, মহিলা ৬৭২৮৪। মুসলিম ১১০৯৫০, হিন্দু ২৭৯২৯, বৌদ্ধ ৪২, খ্রিস্টান ৪ এবং অন্যান্য ৬০।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৯.৬%; পুরুষ ৩৩.৯%, মহিলা ২৫.২%।
মূলত কৃষি অর্থনীতির উপর ভিত্তি করেই জামালগঞ্জ উপজেলার মানুষ জীবনযাপন করে। জামালগঞ্জে রয়েছে প্রচুর হাওড় ও নদী। বিশেষ করে বর্ষাকালে উন্মুক্ত হাওর থেকে মাছ শিকার করেও অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন। তাছাড়া নদী, খাল, বিল থেকেও সরকারের রাজস্ব আসে। জামালগঞ্জের মাঝ বরাবর বয়ে গেছে সুরমা নদী, ফলে রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ার কারণে জামালগঞ্জে ডগ, বালু ও পাথরের ব্যবসা গড়ে উঠেছে প্রচুর। জামালগঞ্জের সবচেয়ে বড় বাজার সাচনা বাজার যা জামালগঞ্জে সুরমা নদীর ওপারে অবস্থিত। তা ছাড়া অন্যান্য ছোট ছোট বাজার হলোঃ শাহাপুর বাঁধ বাজার (লেগুনাস্ট্যান্ড অবস্থিত), ভীমখালী বাজার, নোয়া গাও বাজার, দক্ষিণ লক্ষীপুর বাজার, লাল বাজার, কারেন্টের বাজার, ফেনার বাঁক বাজার। উপজেলার কয়েকটি গ্রামের কিছু মানুষ বেত শিল্পের উপরও নির্ভরশীল। জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৩.৯২%, অকৃষি শ্রমিক ৫.১২%, শিল্প ০.৩১%, ব্যবসা ৮.১৩%, পরিবহন ও যোগাযোগ ০.৪৫%, চাকরি ২.৮১%, নির্মাণ ০.৪৪%, ধর্মীয় সেবা ০.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৮৪% এবং অন্যান্য ৭.৭৪%। কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৪.২১%, ভূমিহীন ৪৫.৭৯%। শহরে ৫৫.৪১% এবং গ্রামে ৫৪.০০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে। প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আলু, ভুট্টা, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ, শাকসবজি। বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তামাক, সরিষা, পাট। প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, কলা ও পেঁপে। মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২৪.৮৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১১৫.৮৪ কিমি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি। শিল্প ও কলকারখানা ফ্লাওয়ার মিল, আইসফ্যাক্টরি। কুটিরশিল্প বাঁশ ও বেতের কাজ। হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৩। সাচ্না, ভীমখালী, নওগাঁও, সেলিমগঞ্জ ও বেহেলী বাজার উল্লেখযোগ্য। প্রধান রপ্তানিদ্রব্য মাছ।
প্রধান নদী: নয়াগাঙ্গ, বাউলাই ও ধনু। ছাতিধরা, আইলা, পাঁগনা, খাঁনকিয়াজুরি, কেচুরিয়া ও কচমা বিল উল্লেখযোগ্য।
সাপ্তাহিক: সাপ্তাহিক ভাটি বাংলা, জামালগঞ্জের ডাক, জামালগঞ্জ পরিক্রমা; পাক্ষিক: সুরমা। ত্রৈমাসিক: স্ফুলিঙ্গ; সাহিত্য সাময়িকী: কালের করতল (১৯৭৭), জামালগঞ্জ সমাচার (১৯৮৫), ভালবাসি স্বদেশ (১৯৮৭), নবজাতক (১৯৮৭), প্রভাত (১৯৯০), অপরাজিত তারুণ্য (১৯৯১), উত্তর প্রজন্ম (১৯৯২), দিশারী (১৯৯৩), প্রতিধী (১৯৯৩), উন্মোচন (১৯৯৪), সাহসে জেগে উঠো (১৯৯৭), ক্ষুদ্রপট রুদ্রপ্রাণ (১৯৯৮), স্মৃতির অলিন্দে (১৯৯৮), পূর্বাশা (১৯৯৮), রক্তঝরা ফাগুনে (১৯৯৮), প্রেরণা (১৯৯৯) অভিপ্রায় (২০০১), নিবেদন (২০০৬), সাহিত্য সাময়িকী আমাদের জামালগঞ্জ(২০২০-বর্তমান),জাসাস (২০২১-বর্তমান)।
লাইব্রেরি ৩, থিয়েটার দল ১, নাট্যমঞ্চ ১, মহিলা সংগঠন ৯, সংগীত পরিষদ ১।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.