Loading AI tools
অনলাইন ফাইল হোস্টিং সার্ভিস উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ড্রপবক্স (ইংরেজি: Dropbox) একটি ফাইল হোস্টিং সার্ভিস যা ড্রপবক্স ইনকর্পোরেশন নামক প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত হয়। সার্ভিসটি ক্লাউড স্টোরেজ, ফাইল সিনক্রোনাইজেশন এবং ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার সার্ভিস দিয়ে থাকে। ড্রপবক্স তাদের ব্যবহারকারীদের নিজস্ব কম্পিউটারে একটি নির্দিষ্ট ফোল্ডার তৈরি করতে দেয় যেটি ড্রপবক্স সিনক্রোনাইজড করে থাকে যাতে ব্যবহারকারী পরবর্তীকালে যে কম্পিউটারই ব্যবহার করুক না কেন, তারা যেন সেই ফোল্ডারটি (ফোল্ডারের ভিতরে থাকা সমস্ত ফাইল বা উপাদানসহ) হুবহু ব্যবহার করতে পারে। এই ফোল্ডারে থাকা ফাইলগুলো ওয়েব সাইট কিংবা মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যেও ব্যবহার করা যায়।
উন্নয়নকারী | ড্রপবক্স ইনকর্পোরেশন |
---|---|
প্রাথমিক সংস্করণ | সেপ্টেম্বর ২০০৮ |
যে ভাষায় লিখিত | পাইথন[1] গৌ[2] |
অপারেটিং সিস্টেম | মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, ওএস এক্স, লিনাক্স, আইওএস, এনড্রয়েড, উইন্ডোজ ফোন, সিমবিয়ান, ব্ল্যাকবেরি ওএস, মিগো হারমাটান |
উপলব্ধ | ১৬টি ভাষায়
|
ধরন | অনলাইন ব্যাকআপ সার্ভিস |
লাইসেন্স | মালিকানাধীন সফটওয়্যার (উইন্ডোজ & ম্যাক ক্লায়েন্ট এবং লিনাক্স ড্রপবক্স ডেমন), সংযুক্ত GPLv2/মালিকানা[3] (লিনাক্স নটিলাস) |
ওয়েবসাইট | dropbox |
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা এমআইটির গ্র্যাজুয়েট ড্রিউ হিউস্টন এবং আরাশ ফেরদৌসী ২০০৭ সালে একটি ওয়াই কম্পিনেটর সার্টআপ কোম্পানি হিসেবে ড্রপবক্স ইনকর্পোরেশন প্রতিষ্ঠান করেন।[4]
ড্রপবক্স মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, অ্যাপল ইনকর্পোরেটেড, ম্যাক ওএস এক্স, লিনাক্স, গুগল অ্যান্ড্রয়েড, অ্যাপল আইওএস, ব্ল্যাকবেরি ওএস এবং ওয়েব ব্রাউজারগুলোর জন্য ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার সরবরাহ করে থাকে।
ড্রপবক্সের মতে, ড্রপবক্সের আইডিয়াটি এসেছে এর প্রতিষ্ঠাতা ড্রিউ হিউস্টনের মাথা থেকে। তিনি যখন এমআইটির শিক্ষার্থী ছিলেন তখন প্রায়ই ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভটির কথা ভুলে যেতেন। তখনকার সময় এ-সম্পর্কিত সার্ভিসগুলোর দুর্বলতা ছিল ইন্টারনেট পর্যাপ্ততা, বড় ফাইল আপলোডের সমস্যা, বাগ ইত্যঅদি। তিনি তাই নিজের জন্য কিছু একটা সমাধানের কথা চিন্তা করছিলেন। সেসময়ই তিনি ভাবলেন অন্য যারা একই সমস্যা পোহাচ্ছে তারাও তার সমাধান থেকে উপকৃত হতে পারে।[5] হিউস্টন তখন ২০০৭ সালের জুনে ড্রপবক্স ইনকর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই ওয়াই কম্বিনেটর থেকে বিনিয়োগ সংগ্রহ করে উদ্যোগটিকে সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা করলেন। [4] Dropbox officially launched at 2008's TechCrunch50, an annual technology conference.[6]
ইভেনফ্লো (ড্রপবক্সের শুরুর দিকের মূল কোম্পানি নাম) এবং প্রক্সি ইনকর্পোরেশনের মধ্য ট্রেডমার্কজনিত জটিলতার কারণে ২০০৯-এর অক্টোবর পর্যন্ত ড্রপবক্সের অফিসিয়াল ডোমেইন নাম ছিল "getdropbox.com", তারপরই তারা নতুন অর্থাৎ বর্তমান "dropbox.com" নামে কাজ শুরু করে।[6]
২০১১ সালের ডিসেম্বরে অপসওয়াট ইনকর্পোরেশন তাদের মার্কেট শেয়ার প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, ইনস্টলেশন সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে দেখা যায় ড্রপবক্স বিশ্বব্যাপী ব্যাকআপ মার্কেটের ১৪.১৪ শতাংশ স্থান দখল করে আছে। [7]
২০১১ সালের মে মাস থেকে ড্রপবক্স জাপানের মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডার সফটব্যাংক এবং সনি এরিকসনের সঙ্গে একটি চুক্তি সাক্ষর করে। চুক্তির শর্ত অনুসারে তখন থেকে মোবাইল ফোন কোম্পানি দুটোর ফোনগুলোতে ড্রপবক্স পূর্বে থেকেই ইনস্টল করে দেয়া হয়।[8]
২০১০ সালের মে মাসে চীনের ড্রপবক্স ব্যবহারকারীরা ড্রপবক্স ব্যবহার করতে গিয়ে দেখে যে তারা এটি ব্যবহার করতে পারছে না। পরবর্তী সময়ে ড্রপবক্স জানায় যে, চীন সরকার সেদেশে ড্রপবক্স ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। ড্রপবক্সের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা খুব দ্রুতই তাদের সার্ভিসকে আরও জনপ্রিয় করে তুলে এবং বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীদের কাছে পরিচিত করে দেয়। ২০১১ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত চীনে ড্রপবক্সের ওয়েব সাইট বন্ধ ছিল কিন্তু যাদের কম্পিউটারে ড্রপবক্স সফটওয়্যারটি ইনস্টল করা ছিল, তারা কিছু আইএসপির সাহায্যে সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারতো।.[9][10][11][12][13]
অক্টোবর ২০১১ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ড্রপবক্সের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫০ মিলিয়নেরও বেশি। [14]
২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ড্রপবক্স তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন একটি ফিচার নিয়ে আসে। এই ফিচারের বদৌলতে ড্রপবক্স ব্যবহারকারীরা তাদের ক্যামেরার ছবি কিংবা ভিডিও সরাসরি ক্যামেরা, ট্যাবলেট, এসডি কার্ড বা স্মার্টফোন থেকে সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে আপলোড করতে পারে। প্রাথমিকভাবে এসব ছবি বা ভিডিওর জন্য ব্যবহারকারীদেরকে অতিরিক্ত ৩ গিগাবাইট জায়গা দেয়া হলেও পরে এই অতিরিক্ত জায়গাটুকু শুধু ছবি বা ভিডিওর জন্য বাধ্যতামূলক বরাদ্দ না রেখে মূল জায়গার সঙ্গে যুক্ত করে দেয়। সাম্প্রতিক সময়ে গুগলের গুগল ড্রাইভ এবং মাইক্রোসফটের স্কাইড্রাইভের বেশি জায়গা বরাদ্দের কারণেও ড্রপবক্স এই অতিরিক্ত জায়গাটুকু দিয়েছে বলে মনে করা হয়।[15]
২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ফেসবুকের গ্রুপ ব্যবহারকারীদের তাদের ফেসবুক গ্রুপের ফাইলগুলো ড্রপবক্সের মাধ্যমে ক্লাউভ-ভিত্তিক সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে। এই ফিচারের কারণে ব্যবহারকারীরা তাদের ফেসবুক গ্রুপে সরাসরি না থেকেও গ্রুপের ফাইল বা পৃষ্ঠাগুলো শেয়ার বা ব্যবহার করতে পারবে। এটা অবশ্য ফেসবুকের নির্ধারিত আপলোডিং ফিচারের বিকল্প নয় কিন্তু এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে ড্রপবক্সের অ্যাকাউন্টে থাকা কোনো ফাইল এই পদ্ধতিতে সরাসরি ফেসবুকে শেয়ার করা যাবে।[16]
২১শে জানুয়ারি, ২০১৫ সালে ড্রপবক্স একটি নেতৃস্থানীয় কোম্পানী ক্লাউডঅনকে নথি সম্পাদনা এবং নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করেন। এই অধিগ্রহণের ফলে, ড্রপবক্স ব্যবহারকারীরা এখন তাদের ফাইল শেয়ারিং সেবা থেকে নথি তৈরি করতে পারবে, যা তারা অতীতে করতে সক্ষম ছিল না।[17]
ড্রপবক্স বিভিন্ন বিনিয়োগকারী যেমন ওয়াই কম্বিনেটর, সেকুইয়া ক্যাপিটাল এবং অ্যাকসেল পার্টনার্সের কাছ থেকে ২৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ সহায়তা পেয়েছে।[18]
২০১১ সালের অনুমিত হিসাব অনুসারে ড্রপবক্সের আর্থিক মূল্যমান ছিল এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। [19] টেকক্রাঞ্চ, ভেনচুরাবিট, বিজনেস ইনসাইডার এবং ফিন্যানসিয়াল পোস্টের অনুমান অনুসারে ড্রপবক্সের আর্থিক মূল্যমান ৫ থেকে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে।[20]
২০১১ সালে ড্রপবক্সের বার্ষিক আয় ২৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে ধারণা করা হয়।[14]
ড্রপবক্সের সদর দফতর সান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত এবং এতে বর্তমানে সেকুইয়া ক্যাপিটাল, অ্যাকসেল পার্টনার্স এবং আমিডজাডের বিনিয়োগ রয়েছে।[4] ২০০৯ সালে মাঝামাঝিতে ড্রপবক্সের প্রথম সংস্করণ প্রকাশের পর থেকে এখন পর্যন্ত ড্রপবক্স নিয়মিতভাবে তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন ফিচার ও সুবিধাটি প্রকাশ করে আসছে, যেটি লিন স্টার্টআপ কৌশল বলে পরিচিত। [21]
২০১২ সালের ৩ এপ্রিলে ড্রপবক্স আইরিশ ব্যান্ড ইউটু-এর দুই সদস্য বুনো এবং দি এজ তাদের নতুন বিনিয়োগকারী বলে ঘোষণা করে।[22]
ড্রপবক্স ফ্রিমিয়াম[23] ব্যবসায়িক মডেলে কাজ করে যেখানে ব্যবহারকারীদেরকে একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত বিনামূল্যে তথ্য সংরক্ষণ করার সুবিধা দেয়া হয়। যারা অর্থের বিনিময়ে এই সুবিধা নিতে চায়, তাদের জন্য তথ্য সংরক্ষণ করার ক্ষমতা বেশি দেয়া হয়ে থাকে।
ড্রপবক্সের সার্ভার এবং ডেস্কটপ সফটওয়্যার দুটোই প্রাথমিকভাবে পাইথনে প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা হয়েছিল।[24] ডেস্কটপ সফওয়্যারে দৃশ্যমান টুলকিট যেমন ডব্লিউএক্সউইজেট এবং কোকোয়া ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পাইথন লাইব্রেরি যেমন টুইস্টেড, পাইউইন৩২ ইত্যাদিও ড্রপবক্সে ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ড্রপবক্সে লাইব্ররিসিঙ্ক বাইনারি-ডেল্টা লাইব্রেরি ব্যবহার করা হয়েছে যেটি সি প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা হয়েছে।
ড্রপবক্সের অধিকাংশ অর্থাৎ ৩২.৭ শতাংশ ব্যবহারকারাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য (৬.৭%) এবং জার্মানি (৬.৫%)। ব্যবহারকারীদের ৬৬.১% উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে, ২০.৯ শতাংশ ব্যবহার করে ম্যাক ওএস এবং ২ শতাংশ লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে। বাকি ব্যবহারকারীরা একাধিক অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে।[25]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.