Loading AI tools
তড়িৎক্ষেত্রের ফলে পরিবাহিতে যে তড়িৎ প্রবাহ হয় তাকে তাড়ন তড়িৎ বলা হয় উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ঘনীভূত পদার্থবিজ্ঞান (condensed matter physics) ও তড়িৎ রসায়নের (electrochemistry) ভাষায়, তাড়ন তড়িৎ হলো তড়িৎ ক্ষেত্র প্রয়োগের ফলে চার্জ বাহকের মধ্য দিয়ে চলমান তড়িৎ প্রবাহ। যখন কোনো অর্ধপরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ ক্ষেত্র প্রয়োগ করা হয়, তখন চার্জ বাহকের প্রবাহের দরুন একটা তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়।তড়িৎক্ষেত্র বলতে সাধারণত দূরত্বের বিপরীতে তড়িৎশক্তির মানকে বুঝানো হয়ে থাকে।
তাড়ন বেগ হচ্ছে তাড়ন তড়িৎ এর মাঝে বিদ্যমান চার্জবাহকগুলোর গড় বেগ। তাড়ন বেগ ও এর ফলে সৃষ্ট তড়িৎকে চলমান হিসাবে আখ্যায়িত করা যায়। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ইলেকট্রনের সচলতা (কঠিন পদার্থের জন্য) অথবা বৈদ্যুতিক সচলতা (Electric Mobility) (সাধারণ ক্ষেত্রে) দেখতে পারেন।
কীভাবে তাড়ন তড়িৎ, ব্যাপন তড়িৎ (diffusion current) এবং চার্জ বাহক গঠন ও পুনর্সমাবেশকে (carrier generation and recombination) একটি সমীকরণ আকারে প্রকাশ করা যায় তা বোঝার জন্য তাড়ন-ব্যাপন সমীকরণ (drift–diffusion equation) দেখতে পারেন ।
তাড়ন তড়িৎ হলো এক প্রকার তড়িৎ প্রবাহ যা তড়িৎক্ষেত্র দ্বারা আকর্ষিত পার্টিকেল বা কণা থেকে সৃষ্টি হয়। এই ধারণাটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় অর্ধপরিবাহীর ভিতরে বিদ্যমান ইলেকট্রন ও ইলেকট্রন হোলের ক্ষেত্রে, যদিও এই একই ধারণাই ধাতু, ইলেকট্রোলাইট বা তড়িৎ বিশ্লেষ্যদের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য।
তাড়ন তড়িৎ এর উৎপত্তি হয় তড়িৎ শক্তি থেকে, যখন চার্জিত কণাগুলো তড়িৎ ক্ষেত্র দ্বারা আকর্ষিত বা বিকর্ষিত হয়। ঋণাত্মকভাবে চার্জিত ইলেকট্রনগুলো তড়িৎ ক্ষেত্রের বিপরীতে বিকর্ষিত হয়, অন্যদিকে হোলগুলো তড়িৎ ক্ষেত্রের দিকে আকর্ষিত হয়। তবে এর ফলে উৎপন্ন প্রচলিত প্রবাহ(Conventional Current) উভয় ক্ষেত্রেই তড়িৎক্ষেত্রের দিক বরাবর বিবেচনা করা হয়।
শূণ্য মাধ্যমে যদি কোনো ইলেকট্রনের উপর তড়িৎ ক্ষেত্র প্রয়োগ করা হয়, তবে ইলেকট্রনটি প্রায় সরলরেখা বরাবর এর গতি দ্রুততর বৃদ্ধি করতে থাকে। এভাবে কাছাকাছি পর্যবেক্ষণ করলে তাড়ন তড়িৎ স্বভাবতই ভিন্ন রকম দেখায়। সাধারণভাবে, ইলেকট্রন সর্বদাই সবদিকে চলমান থাকে যা ব্রাউনীয় গতি নামে বেশ পরিচিত। ইলেকট্রনগুলো প্রায়শই ম্যাটেরিয়ালের গ্রেইন বাউন্ডারি (Grain Boundary) কিংবা অন্য কোনো বাধার সম্মুখীন হয় ফলাফলস্বরূপ তাদের গতিপথ পরিবর্তন করে। এই সংঘর্ষগুলোর সময়, তড়িৎ ক্ষেত্র খুব সূক্ষ্মভাবে যে কোনো একদিকে তার গতি বাড়াতে থাকে। সময়ের সাথে এদের গতিবেগের গড় তাড়ন বেগের সমান হয় কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইলেকট্রনগুলো থার্মাল বা তাপীয় বেগ এ চলতে থাকে যা স্বাভাবিক গতি থেকে অনেক বেশি হয় ।
তাড়ন তড়িৎ এর পরিমাণ নির্ভর করে মাধ্যম কিংবা উপাদানটির চার্জ বাহকের ঘনত্ব ও এর বৈদ্যুতিক সচলতার উপর।
আরও বিস্তারিত, ব্যাপন তড়িৎ (Diffusion current)
তাড়ন তড়িৎ আর ব্যাপন তড়িৎ প্রায়শই একই সময়ে ঘটে। নিচের টেবিলে এদের মাঝের পার্থক্য উল্লেখ করা হলোঃ
তাড়ন তড়িৎ | ব্যাপন তড়িৎ |
---|---|
তাড়ন তড়িৎ উৎপন্ন হয় তড়িৎ ক্ষেত্র দ্বারা | ব্যাপন তড়িৎ চার্জ বাহকের ঘনত্বের ভিন্নতার কারণে উৎপন্ন হয়। |
তাড়ন তড়িৎ এর দিক সর্বদা তড়িৎ ক্ষেত্রের দিক বরাবর হয়। | ব্যাপন তড়িৎ এর দিক চার্জবাহকের ঘনত্বের গ্রেডিয়েন্ট এর উপর নির্ভরশীল। |
ওহ'মের সূত্র মেনে চলে: | ফিকের সূত্র মেনে চলে: |
কোনো p-n জাংশন ডায়োডের ভিতরে ইলেকট্রন ও হোলগুলো যথাক্রমে p-অঞ্চল ও n-অঞ্চলে সংখ্যালঘু চার্জ বাহক হিসাবে কাজ করে। কোনো নিরপেক্ষ (unbiased) জাংশনে, চার্জবাহকগুলোর ব্যাপনের দরুন, ব্যাপন তড়িৎ p থেকে n অঞ্চলে প্রবাহিত হয়। এ সময় ব্যাপন তড়িৎটি সমান ও বিপরীতভাবে চার্জিত তাড়ন তড়িৎ দ্বারা ভারসাম্য (balance) লাভ করে। [1]
কোনো একটা বায়াসড (biased) p-n জাংশনে, তাড়ন তড়িৎ বায়াসের উপর নির্ভর করেনা, কারণ সংখ্যালঘু চার্জ বাহকগুলো বায়াস ভোল্টেজের ( biasing voltages) উপর নির্ভরশীল নয়।. তবে যেহেতু সংখ্যালঘু চার্জ বাহকগুলো তাপের সাহায্যে সৃষ্টি করা যায় সেহেতু তাড়ন তড়িৎও স্বভাবতই তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে।
যখন কোনো অর্ধপরিবাহীর উপর তড়িৎ ক্ষেত্র প্রয়োগ করা হয় তখন চার্জ বাহকগুলো একটা নির্দিষ্ট তাড়ন বেগপ্রাপ্ত হয়। আর এই চার্জ বাহকগুলোর গতিলাভের ফলাফলস্বরূপ তাড়ন তড়িৎ উৎপন্ন হয়। মুক্ত ইলেকট্রন ও হোলের মত চার্জবাহকের ফলে সৃষ্ট তাড়ন তড়িৎ এর ঘনত্ব বলতে মূলত এক বর্গ সেন্টিমিটার ক্ষেত্রফলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎকে বুঝানো যায়, যার দিক হবে স্বাভাবিক প্রবাহের উলম্বদিকে।
(i) মুক্ত ইলেকট্রনের ফলে সৃষ্ট তাড়ন তড়িৎ এর ঘনত্ব (Drift current density) Jn কে নিম্নোক্তভাবে প্রকাশ করা যায়:
(ii) হোলের ফলে সৃষ্ট তাড়ন তড়িৎ এর ঘনত্ব (Drift current density) Jp কে নিম্নোক্তভাবে প্রকাশ করা যায়ঃ ( p-n জাংশন এর জন্য)
যেখানে: n - প্রতি ঘন সেন্টিমিটারে মুক্ত ইলেক্ট্রনের সংখ্যা
p - প্রতি ঘন সেন্টিমিটারে হোলের সংখ্যা
– ইলেকট্রনের সচলতা (Mobility of electrons), ( )
– হোলের সচলতা (Mobility of holes), ( )
E – প্রয়োগকৃত তড়িৎ ক্ষেত্রের তীব্রতা (Applied Electric Field Intensity), (V /cm)
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.