তৃতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ
From Wikipedia, the free encyclopedia
তৃতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ (১৮১৭-১৮১৯) ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং ভারতের মারাঠা সাম্রাজ্যের মধ্যে চূড়ান্ত এবং ফল-নির্ণায়ক যুদ্ধ। এই যুদ্ধ শেষে ভারতের অধিকাংশ ভূমি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্যরা মারাঠা অঞ্চলে আক্রমণ করায় এ যুদ্ধ শুরু হয়।[2] ব্রিটিশ সৈন্য সংখ্যা বেশি থাকায় যুদ্ধে মারাঠা সেনাবাহিনী ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ব্রিটিশ বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন গভর্নর জেনারেল হেস্টিংস এবং তার সঙ্গে ছিলেন জেনারেল টমাস হিসলপের অধীনস্থ একটি বাহিনী। এই যুদ্ধে মধ্য ভারত থেকে আগত মুসলিম ভাড়াটে সৈন্য ও মারাঠাদের সমন্বিত দল পিন্ডারিদের বিরুদ্ধেও অভিযান শুরু হয়।[note 1]
তৃতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ[1] | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ | |||||||
মারাঠা শিবির | |||||||
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
|
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হায়দ্রাবাদ রাজ্য | ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
দ্বিতীয় বাজি রাও বাপু গোখলে (দ্বিতীয় বাজি রাওয়ের সেনাপতি) হরি রাও হোলকার তৃতীয় মলহার রাও হোলকার দ্বিতীয় মুধোজি ভোঁসলে ত্রিম্বকজি ডেঙ্গল-পাতিল দৌলত রাও সিন্ধিয়া |
ফ্রান্সিস রাওডন-হেস্টিংস জন ম্যালকম টমাস হিসলপ তৃতীয় আসফ জাহ |
পেশোয়া দ্বিতীয় বাজি রাওয়ের বাহিনী নাগপুরের দ্বিতীয় মুধোজি ভোঁসলে এবং ইন্দোরের তৃতীয় মালহাররাও হোলকারের সমর্থনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঘোষণা করে। রাজস্থানের নিয়ন্ত্রণ হারানো সত্ত্বেও বাহ্যিক চাপ ও ব্রিটিশ কূটনীতির ফলে চতুর্থ প্রধান মারাঠা নেতা গোয়ালিয়রের দৌলত রাও সিন্ধিয়া তখন নিরপেক্ষ থাকতে সম্মত হয়।
এই যুদ্ধে ব্রিটিশরা বিভিন্ন সম্মুখ সমরে দ্রুত বিজয় লাভ করে। এর ফলে মারাঠা সাম্রাজ্য ভেঙে গিয়ে স্বাধীনতা হারায়। এতদ্সত্ত্বেও পেশোয়াকে রক্ষা করতে তারা কিছু ছোটখাটো যুদ্ধ করে।[4]
তবে শেষপর্যন্ত পেশোয়াকে বন্দী করে কানপুরের কাছে বিথুরে একটি ছোট এস্টেটে রাখা হয়। তার শাসনাধীন অধিকাংশ এলাকা ব্রিটিশ অঞ্চলে সংযুক্ত করা হয়। সেগুলো তখন বোম্বে প্রেসিডেন্সির অংশ হয়ে যায়। সাতারার মহারাজা ব্রিটিশদের অধীনে দেশীয় রাজ্যের রাজা হিসাবে নিজ অঞ্চলের শাসকের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করেছিলেন। ১৮৪৮ সালে লর্ড ডালহৌসির স্বত্ববিলোপ নীতির অধীনে এই অঞ্চলটি বোম্বে প্রেসিডেন্সিতে সংযুক্ত করা হয়। সীতাবুলদির যুদ্ধে ভোঁসলে এবং মহিদপুরের যুদ্ধে হোলকার পরাজিত হন। নাগপুরে এবং এর আশেপাশে ভোঁসলের আধিপত্যের উত্তর অংশ বুন্দেলখণ্ডের পেশোয়া অঞ্চলগুলোকে সৌগর ও নের্বুদ্দা অঞ্চল হিসাবে ব্রিটিশ ভারতে সংযুক্ত করা হয়। ভোঁসলে ও হোলকারের পরাজয়ের ফলে ব্রিটিশরা নাগপুর ও ইন্দোরের মারাঠা রাজ্যগুলো অধিগ্রহণ করে। শিন্ডে থেকে গোয়ালিয়র এবং পেশোয়া থেকে ঝাঁসি সহ এই সমস্ত অঞ্চলগুলো ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ স্বীকার করে দেশীয় রাজ্যে পরিণত হয়। খড়কি, সীতাবুলদী, মহিদপুর এবং সাতারায় ব্রিটিশদের দ্রুত বিজয়ের মাধ্যমে ভারতীয় যুদ্ধ-নির্মাণে তাদের দক্ষতার প্রমাণ পাওয়া যায়।[5]