নিউট্রন আবিষ্কার
উপ-পারমাণবিক কণার আবিষ্কারের দিকে পরিচালিত বৈজ্ঞানিক পটভূমি / From Wikipedia, the free encyclopedia
নিউট্রন আবিষ্কারকে পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বিজ্ঞানী আর্নেস্ট রাদারফোর্ড,[1]:১৮৮ [2] হ্যান্স গাইগার এবং আর্নেস্ট মার্সডেন দ্বি-ধনাত্মক আলফা কণা বিচ্ছুরণ পরীক্ষার মাধ্যমে একত্রে স্বর্ণপাত মডেল প্রবর্তন করেন। এই মডেল অনুযায়ী পরমাণুর ভর এবং সমস্ত ধনাত্মক আধান একটি ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াসে আবদ্ধ। [3]
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/7/77/Chadwick_Solvay1933.jpg/220px-Chadwick_Solvay1933.jpg)
১৯২০ সালে আইসোটোপ আবিষ্কারের মাধ্যমে আরেকটি নতুন যুগের সূচনা হয়। বিজ্ঞানীরা এদের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর অনুমান করেন হাইড্রোজেন পরমাণুর আপেক্ষিক পারমাণবিক ভরের বিভিন্ন গুণিতক হিসেবে। [4] তারা নির্ণয় করেন কোনো পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা এর নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক আধানের সমান। [5]:§১.১.২
পুরো ১৯২০ সাল জুড়ে বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, নিউক্লিয়াস প্রোটন এবং ইলেক্ট্রন নিয়ে গঠিত। কারণ তখন এ দুটি কণাই শুধুমাত্র আবিষ্কৃত হয়েছিল। কিন্তু রাদারফোর্ডের মডেলে বেশ কিছু তত্ত্বীয় ও পরীক্ষণীয় স্ংঘর্ষ বা মতভেদ দেখা দেয়। [1]:২৯৮
অবশেষে বিজ্ঞানী জেমস চ্যাডউইক ১৯৩২ সালে পারমাণবিক নিউক্লিয়াসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মবিশিষ্ট কণা নিউট্রন আবিষ্কার করেন। [6] তিনি প্রথম প্রমাণ করেন নিউট্রনের ধর্ম ও বৈশিষ্ট্য প্রোটনের চেয়ে আলাদা। [7][8]:৫৫
এই আধানবিহীন নিউট্রন সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানীদের জন্য এক অনন্য হাতিয়ার হয়ে ওঠে। ১৯৩৪ সালের দিকে নিউট্রন প্রজ্জ্বলন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিত্য নতুন তেজষ্ক্রিয় মৌল সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ১৯৩৮ সালে তেজষ্ক্রিয় ইউরেনিয়ামকে শক্তিশালী নিউট্রন দ্বারা আঘাত করে ফিশন বিক্রিয়া ঘটিয়ে বিপুল শক্তি উৎপাদনের দুয়ার খুলে যায়। [9] এর সাথে সাথে মারাত্মক নিউক্লীয় মারণাস্ত্র তৈরির ক্ষেত্র সুপ্রশস্ত হয়। ফলশ্রুতিতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাতিতে জাতিতে হিংস্র পারমাণবিক যুদ্ধের সূচনা হয় এবং বহু নিরীহ লোকের প্রাণহানি ঘটে। তখন মানুষ পারমাণবিক তেজষ্ক্রিয়তার ভয়াবহ্তা অনুধাবন করতে পারে।
১৯৬০ সাল পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল প্রোটন এবং নিউট্রন উভয়ই প্রাথমিক কণা। কিন্তু পরবর্তীতে প্রমাণিত হয় এরা কোয়ার্ক (পদার্থের মৌলিক একক) হ্তে সৃষ্ট পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা। [10]