Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পোলিওমাইলিটিজ (/poʊlioʊmaɪəlaɪtɪs/) এক ধরনের ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ। সচরাচর এটি পোলিও নামেই সর্বাধিক পরিচিত। এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তি এ ধরনের ভাইরাসের মাধ্যমে আক্রান্ত হন।[1] এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সাময়িক কিংবা স্থায়ীভাবে শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হন ও তার অঙ্গ অবশ বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। সাধারণতঃ এ সংক্রমণ শিশুসহ কিশোরদের মাঝে প্রবাহিত হয়ে থাকে। শতকরা ৯৫ ভাগেরও অধিক পোলিও আক্রান্ত রোগীর শরীরে কোন উল্লেখযোগ্য দৃশ্যমান উপসর্গ কিংবা স্বল্পমাত্রার উপসর্গ দেখা যায় না। কেবল রক্তে প্রবাহিত হয়ে আক্রান্ত হবার মাত্র কয়েকদিন পূর্বে তা দৃশ্যমান হয়।[2] এ ভাইরাসটি মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রে প্রবেশ করে ও মাংসপেশীকে নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ুকোষকে আক্রান্ত করে। এরফলে ব্যক্তির শরীর পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত স্থানটি সাধারণতঃ পায়ে হয়ে থাকে। এছাড়াও এর ধ্বংসাত্মক প্রবণতা মানুষের মস্তিষ্কে ঘটে যা জটিল থেকে জটিলতর হয়। কখনো কখনো এটি মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেহেতু পোলিও শিশুদেরকেই অধিক আক্রান্ত করে, তাই এটি অপরিপক্ক পক্ষাঘাত নামে পরিচিত।
পোলিও | |
---|---|
বিশেষত্ব | সংক্রামক রোগ, স্নায়ুচিকিৎসাবিজ্ঞান, orthopedics |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২তম রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট পোলিও আক্রান্ত ছিলেন বলে তার ডাক্তারগণ ধারণা করেছিলেন।
পোলিওমাইলিটিজ পারিভাষিক শব্দটি প্রাচীন গ্রিক poliós (πολιός), অর্থ “ধূসর”, myelós (µυελός) “রজ্জু” থেকে উৎপত্তি হয়েছে।[3]
১৮৪০ সালে জার্মান অর্থোপেডিক সার্জন জ্যাকব হেইন সর্বপ্রথম পোলিওমাইলিটিজ আবিষ্কার করেন।[4] এর প্রধান উপাদান পোলিওভাইরাস জীবাণুর উপস্থিতি চিহ্নিত করেন কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার।[4] হাজার হাজার পূর্বে কয়েকটি নির্ধারিত এলাকায় পোলিও বিরাজমান ছিল যা প্রাচীন চিত্রকর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। ঊনবিংশ শতকের শেষার্ধ্বে ইউরোপ ও পরবর্তীকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে পোলিও মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে।[5] বিংশ শতকে এসে এ রোগটিকে শিশুদের প্রধান ভয়ানক রোগের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯১০ সালের মধ্যে বিশ্বে নাটকীয়ভাবে পোলিও আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়তে থাকে ও মহামারী নিয়মিতভাবে সংঘটিত হতো। বিশেষ করে শহরে গ্রীষ্মকালে এ রোগ দেখা দিতো বেশি। এ রোগে হাজারো শিশু ও কিশোরদেরকে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হতো। ফলে পোলিও টিকা আবিষ্কারের দিকে সকলেই ঝুকতে থাকেন। ১৯৫০-এর দশকে পোলিও টিকা আবিষ্কার হলে আক্রান্তের সংখ্যা হাজারে একজন এসে দাঁড়ায়।[6]
পোলিও টিকা খাওয়ানোর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী এ রোগকে নিয়ন্ত্রণ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রধানত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ কার্যক্রমের সাথে জড়িত।[7] সংস্থাটি টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করায় বিশ্বের প্রায় সকল দেশ থেকে পোলিও নির্মূল করতে সক্ষমতা দেখিয়েছে।[6][8] ১৯৮৮ সালে যেখানে বিশ্বব্যাপী প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ রোগী ছিল, সেখানে ২০০৭ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ১,৬৫২।[9][10][11] বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাশাপাশি রোটারি ইন্টারন্যাশনাল, ইউনিসেফ টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করে বিশ্ব থেকে এ রোগ নির্মূলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।[12][13][14] কিন্তু ২০১৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে সিরিয়ায় এ ধরনের রোগীর সন্ধান পাওয়ায় তাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে।[15]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.