Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ফার্স্ট লেডি (ইংরেজি: First Lady) হচ্ছেন বিশ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধানদের স্ত্রীদেরকে প্রদত্ত উপাধি।[1][2][3] এ উপাধিটি তিনি অলিখিতভাবে প্রচার মাধ্যমসহ জনগণের কাছ থেকে ধারণপূর্বক ব্যবহার করে থাকেন। পুরুষদের ক্ষেত্রে এর লিঙ্গ বৈপরীত্য হিসেবে ফার্স্ট জেন্টেলম্যান উপাধি প্রদান করা হয়ে থাকে।
কলম্বিয়া ও প্যারাগুয়েতে ফার্স্ট লেডির পরিবর্তে প্রাইমেরা দামা শব্দগুচ্ছের প্রচলন রয়েছে।[4]
১৮৪০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফার্স্ট লেডি পদবীর উৎপত্তিস্থল হিসেবে বিবেচিত। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জ্যাকারী টেলরের স্ত্রী ছিলেন ডলি মেডিসন। প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক উদযাপনের সময় স্ব-লিখিত ও উচ্চ প্রশংসাযুক্ত কবিতায় ফার্স্ট লেডি হিসেবে তাকে আখ্যায়িত করেন টেলর।[5]
যুক্তরাষ্ট্রে শুরুর দিকে প্রেসিডেন্টের পত্নীকে সচরাচর ও গ্রহণযোগ্য কোন পদবী প্রদান করা হতো না। ঐ সময়ে অনেক ফার্স্ট লেডিকে তাদের নিজস্ব দক্ষতা, সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতার উপর বিভিন্নভাবে পদবী ব্যবহার করতে দেখা যায়। তন্মধ্যে লেডি, মিসেস প্রেসিডেন্ট, মিসেস প্রেসিডেন্ট্রেস এবং কুইন অব দ্য হুয়াইট হাউজ পদবীর প্রচলন ছিল। একমাত্র জুলিয়া টাইলারের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়।
অতীতে অন্য কোন মহিলাও ফার্স্ট লেডি'র মর্যাদাপ্রাপ্তির অধিকারী হতেন। যেমন: প্রেসিডেন্ট কন্যা তার মাতার অনিচ্ছাজ্ঞাপন, অক্ষমতাজনিত কারণের ফলে শূন্যস্থান পূরণের লক্ষ্যে বিকল্পভাবে ফার্স্ট লেডির দায়িত্ব পালন করতেন। অথবা, প্রেসিডেন্ট যদি বিপত্নীক বা কুমার হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে হুয়াইট হাউজে অবস্থানরত অন্য কোন মহিলা এ দায়িত্ব পালন করতেন।
বর্তমানে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প ব্যাপকভাবে ও উৎসাহের সঙ্গে ফার্স্ট লেডির মর্যাদা উপভোগ করছেন। আমেরিকান প্রচার মাধ্যম ও সংবাদ সংস্থাগুলো প্রায়শঃই অন্য দেশের রাষ্ট্রীয় প্রধানদের স্ত্রীকে ফার্স্ট লেডি হিসেবে ব্যক্ত করে থাকে। তবে, কোন দেশে যদি রাষ্ট্র প্রধানের স্ত্রীর নির্দিষ্ট উপাধি থেকে থাকে, তাহলে এ নিয়মের ব্যতয় ঘটে থাকে।
ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাজনিত কারণে ২৪ আগস্ট, ২০০৪ সালে প্রয়াত হন। তার মৃত্যুর ফলে সাবেক রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বাংলাদেশের ফার্স্ট লেডি ছিলেন।[6] পরবর্তীতে জিল্লুর রহমানের মৃত্যুজনিত কারণে আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করায় তার সহধর্মীনি রশীদা হামিদ বর্তমানে বাংলাদেশের ফার্স্ট লেডি’র মর্যাদা উপভোগ করছেন।[7]
উপাধিটি একজন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী কিংবা সঙ্গীর ক্ষেত্রে সচরাচর ব্যবহার করা হয় না। তবে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর স্বামী কিংবা স্ত্রীর ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগী সঙ্গী হিসেবে বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত হন।[8][9]
কতকগুলো ক্ষেত্রে ফার্স্ট লেডি পদবীর প্রয়োগ স্ত্রী বা সঙ্গীনি ছাড়াই হতে পারে। ১৯৯৪ সালে পেরু রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আলবার্টো ফুজিমোরি তার স্ত্রী সুসানা হিগুইচি'র সাথে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে। অতঃপর, ফার্স্ট লেডি হিসেবে সুসানা হিগুইচি'র পরিবর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে তার কন্যা কিকো ফুজিমোরি'র নাম ঘোষণা করা হয়।
কোরিয়ার গ্রান্ড ন্যাশনাল পার্টির সাবেক প্রধান পার্ক গিউন-হাই দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি ও স্বৈরশাসক পার্ক চুং হি'র আমলে ফার্স্ট লেডি হয়েছিলেন। তিনি হি'র কন্যা। ১৫ আগস্ট, ১৯৭৪ তারিখে উত্তর কোরীয় সরকারের নির্দেশে জাপানী বংশোদ্ভূত মান সে-গুয়াং কর্তৃক তার মাতা কোরিয়ার ন্যাশনাল থিয়েটারে নিহত হবার প্রেক্ষিতে[10] মায়ের মৃত্যুজনিত কারণে এ পদবী লাভ করেন হাই।[11]
বিশ্বের বেশ কিছু দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নারীরা এগিয়ে রয়েছেন। সেক্ষেত্রে তাদের স্বামী অর্থাৎ পুরুষদের ক্ষেত্রে এর লিঙ্গ বৈপরীত্য হিসেবে ফার্স্ট জেন্টেলম্যান উপাধি প্রদান করা হয়ে থাকে। ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপ্রধানের স্বামী ফার্স্ট জেন্টেলম্যান উপাধি ধারণ করে থাকেন।
২৪ জুন, ২০১০ সালে জুলিয়া গিলার্ড অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হবার পর প্রচার মাধ্যমগুলো তার সঙ্গী টিম ম্যাথিয়েসনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। তিনদিন পর অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্রগুলো ম্যাথিয়েসনকে লক্ষ্য করে ফার্স্ট ব্লোক পদবী নামে নামাঙ্কিত করে।[12][13][14] তিনিও তা সানন্দে গ্রহণ করেন। বিশেষ করে স্বেচ্ছাসেবক এবং দাতব্য কর্মকাণ্ডে তাকে অতীব সম্মান সহকারে এ পদবী প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্র প্রধানের পুরো পরিবার ফার্স্ট ফ্যামিলি নামে সুপরিচিত হয়ে থাকেন। দ্বিতীয় স্তর বা উপ-রাষ্ট্রপতির স্ত্রী সেকেন্ড লেডি বা ভাইস-ফার্স্ট লেডি পদে মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। আরো সহজভাবে বলা যায় যে, তার পরিবার সেকেন্ড ফ্যামিলি নামে পরিচিত।
নির্দিষ্ট অঞ্চল বা এলাকায় অবস্থানরত কোন মহিলা সামাজিক স্তরে একচ্ছত্রভাবে যদি প্রাধান্য বিস্তার করে থাকেন, তাহলে তিনিও 'ফার্স্ট লেডি' হিসেবে অভিহিত হয়ে থাকেন।[15][16]
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফার্স্ট লেডি শব্দগুচ্ছটি বিভিন্নক্ষেত্রে বহুবিধভাবে প্রয়োগ ঘটাতে দেখা যায়। রাজনৈতিক কারণ ছাড়াও কোন নারী যদি তার কর্মে অসামান্য প্রতিভার স্ফূরণ ঘটান কিংবা ব্যতিক্রমধর্মী অবদান রাখেন, তাহলেই তিনি ফার্স্ট লেডি খেতাব অর্জন করে থাকেন অনেকট মিস ওয়ার্ল্ড পদবীর মতো। যেমন:-
মহিলা ব্যক্তিত্বের নাম | খেতাবের বিবরণ |
লুসি বল | ফার্স্ট লেডি অব টেলিভিশন |
এলা ফিটজেরাল্ড | ফার্স্ট লেডি অব সং |
ট্যামি উনেটি লরেটা লিন | ফার্স্ট লেডি অব কাউন্টি মিউজিক |
ম্যাজেল ব্যারেট | ফার্স্ট লেডি অব স্টার ট্রেক |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.