ফ্রান্সে সমকামীদের অধিকার
From Wikipedia, the free encyclopedia
সমকামিনী, সমকামী, উভকামী এবং হিজড়া (লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্র্যান্সজেন্ডার সংক্ষেপে এলজিবিটি) অধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে ফ্রান্স ঐতিহ্যগতভাবেই উদার এবং ইউরোপ ও সারা বিশ্বের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে।[1] যদিও প্রাচীন যুগে ফ্রান্সে সমকামিতাকে একটি বড় ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হত এবং এটার সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হত, ১৭৯১ সালে ফরাসী বিপ্লবের সময় সকল 'সডোমী আইন' (Sodomy শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ পায়ুকাম) বাতিল করা হয়। তারপরেও, একটি কমজানা 'অশ্লীল পোশাক আইন' ১৯৬০ সালে চালু করা হয় যেটার মাধ্যমে মাঝেমাঝেই সমকামীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হত, আইনটি ২০ বছর পর উঠিয়ে দেওয়া হয়। সম-লিঙ্গের মানুষের মধ্যে যৌন-সম্পর্ক স্থাপনের জন্যে ন্যূনতম বয়স ১৫ করা হয় ১৯৮২ সালে, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফ্রাসোয়াঁ মিটার্যান্ড এর আমলে। সমলিঙ্গের যুগলদের জন্যে 'ডমেস্টিক পার্টনারশীপ' (যেটি 'সিভিল সলিডেয়ারিটি প্যাক্ট-১৯৯৯' হিসেবে পরিচিত) সুবিধা দেওয়ার পর ২০১৩ সালে ফ্রান্স বিশ্বের ১৩তম দেশ হিসেবে পরিগণিত হয় সম-লিঙ্গের মানুষের মধ্যে বিয়ের বৈধতার ক্ষেত্রে, দেশটিতে কিছুটা বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও। ১৯৮৫ সালে যৌন অভিমুখিতা এবং 'লিঙ্গ পরিচয়' এর ক্ষেত্রে বৈষম্য করা যাবেনা এ মর্মে একটি আইন করা হয়। লিঙ্গ পরিবর্তনে ইচ্ছুক মানুষেরা তাদের লিঙ্গ পরিবর্তন করতে পারবেন, এটি আইনগতভাবে বৈধ এবং ২০০৯ সাল থেকে ফ্রান্স লিঙ্গ-পরিবর্তনের মন-মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে মানসিক রোগী আখ্যা দেওয়া বাদ দিয়ে দেয়, ফ্রান্সই পৃথিবীর প্রথম দেশ এই পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে। ফ্রান্সকে বিশ্বের অন্যতম সমকামীবান্ধব রাষ্ট্র হিসেবে সবসময়ই ধরা হয়। জরিপে দেখা যায় যে অধিকাংশ ফরাসী মানুষ সম-লিঙ্গের মানুষের মধ্যে বিয়ে হওয়াটাকে সমর্থন করে এবং ২০১৩তে,[2] একটি জরিপ নির্দেশ করে যে ৭৭% ফরাসী মানুষ বলেন যে সমকামিতাটা সমাজ দ্বারা সমর্থিত হওয়া উচিত, যেই সমর্থন করার প্রবণতাটা বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ।[3] অনেক সংবাদমাধ্যম প্যারিস শহরটিকে বিশ্বের অন্যতম সমকামীবান্ধব হিসেবে ধরেছে, প্যারিসের 'লে মারাইস', 'কুয়ারটিয়ার পিগালে' এবং 'বইস ডে বউলগ্নে' কে বলা হয় 'সমৃদ্ধশালী সমকামী এবং হিজড়া'দের এলাকা এবং এ এলাকাগুলো সমকামীদের নৈশক্লাবের জন্য বিখ্যাত।[4]
সমকামী অধিকার : ফ্রান্স | |
---|---|
সমকামী অধিকার? | ১৭৯১ সাল থেকে বৈধ, দৈহিক মিলনের ন্যূনতম বয়স ১৫ করা হয়েছে ১৯৮২ সালে |
লিঙ্গ স্বীকৃতি | হ্যাঁ, লিঙ্গ পরিবর্তনের অনুমতি আছে |
সামরিক চাকরিতে | হ্যাঁ, সমকামীদের জন্যেও আবার হিজড়াদের জন্যেও |
বৈষম্য নিরাপত্তা | হ্যাঁ, ফ্রান্সের সব জায়াগাতেই |
পারিবারিক অধিকার | |
সম্পর্কের স্বীকৃতি | হ্যাঁ, সমলিঙ্গের বিয়ে বৈধ |
সন্তান দত্তক | হ্যাঁ, সমলিঙ্গের যুগলদেরর জন্যেও আবার হিজড়াদের জন্যেও |