বলিয়াদী জমিদার বাড়ী
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বলিয়াদী জমিদার বাড়ী কালিয়াকৈর উপজেলায় অবস্থিত প্রাচীনতম জমিদার বাড়ী এবং বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার মধ্যে একটি ।
বলিয়াদী জমিদার বাড়ী | |
---|---|
প্রাক্তন নাম | জাহাঙ্গীর ফরমান |
বিকল্প নাম | বলিয়াদী এস্টেট |
সাধারণ তথ্য | |
অবস্থান | বলিয়াদী , কালিয়াকৈর । |
ঠিকানা | কালিয়াকৈর উপজেলা, গাজীপুর জেলা |
শহর | গাজীপুর |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২৪.০৪৭৭৬০° উত্তর ৯০.১৯৯২৮৫° পূর্ব |
নির্মাণকাজের প্রাক্কলিত সমাপ্তি | ১৬১২ |
স্বত্বাধিকারী | বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর |
ভূমিমালিক | সাদ উদ্দিন সিদ্দিকী |
কারিগরী বিবরণ | |
উপাদান | Brick, Mud |
প্রায় ১৫২টি মৌজায় ৩২৭৮ জন মানুষ নিয়ে পত্তন হয় বলিয়াদী জমিদার। এই বলিয়াদী এস্টেটের প্রশাসক ছিলেন খলিফা আবু বকর সিদ্দিকীর বংশধর। চতুর্থ পুরুষ কাশেম সিদ্দিকী থেকে পঞ্চদশ পুরুষ শাহাব উদ্দিন সিদ্দিকী পর্যন্ত এই পরিবার তুরস্কে বসবাস করতেন। ষোড়শ ও সপ্তদশ পুরুষ যথাক্রমে নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী ও জহির উদ্দিন সিদ্দিকী উত্তর ভারতে বসতি স্থাপন করেন। অষ্টাদশ পুরুষ শাহ কুতুব উদ্দিন সিদ্দিকী যিনি ইতিহাসে নবাব কুতুব উদ্দিন খান কোকালতাস বা কুকু ওরফে শেখ কোবান নামে পরিচিত। যিনি মুঘল সম্রাট মহামতি আকবরের পালিত পুত্র এবং দিল্লী রাজদরবারে উচ্চপদস্থ কর্মচারী। ইতিহাসে খ্যাত সুবাদার ইসলাম খানের অব্যবহিত পূর্বে সম্রাট জাহাঙ্গীরকর্তৃক তিনি বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন।
১৬০৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বর্ধমানে শেখ আফগান কর্তৃক নিহত হন। তার পুত্র উনবিংশ তিন পুরুষ সাদ উদ্দিন সিদ্দিকী জাহাঙ্গীর নগর (ঢাকার) সুবাদার ইসলাম খানের নির্দেশে সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক সুজাত খানের সাথে বিদ্রোহী আফগান ওসমান খানের দমনের উদ্দেশ্যে প্রেরিত হন। সাদ উদ্দিন সিদ্দিকী উক্ত অভিযানে অসামান্য কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। পুরস্কার স্বরূপ সম্রাট জাহাঙ্গীর তাকে চন্দ্র প্রতাপ, আমিনাবাদ এবং তালেবাবাদ এই তিন পরগনার জায়গীর দারী প্রদান করেন (১৬১২ খ্রিষ্টাব্দে)। তিনি তালেবাবাদ পরগনার অন্তর্গত পুলখার গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। ত্রিশতম পুরুষ চৌধুরী আব্দুল ওয়াজেদ সিদ্দিকীর জীবনকাল পর্যন্ত উক্ত পরিবার পুলখার গ্রামে বসবাস করেন।
৩১তম পুরুষ চৌধুরী নাজেম উদ্দিন হোসেন সিদ্দিকী তালেবাবাদ পরগনার বলিয়াদী গ্রামে নতুন নিবাস স্থাপন করেন। তখন থেকে উক্ত পরিবার বলিয়াদীতে বসতি স্থাপন করেন। বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী বলিয়াদী জমিদার পরিবার সর্বত্র বলিয়াদী সিদ্দিকী পরিবার হিসাবে পরিচিত। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময় থেকে আজ পর্যন্ত এই পরিবার তাদের ঐতিহ্য বজায় রেখে তালেবাবাদ পরগনায় ও দেশের অন্যান্য স্থানে এবং বিদেশে বসবাস করছেন।
বলিয়াদী এস্টেট মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর ফরমান বলে প্রতিষ্ঠিত হয় (ইংরেজি ১৬১২ খ্রিষ্টাব্দে)। ১৬১২ খ্রিষ্টাব্দে বলিয়াদী এস্টেটে অন্তর্ভুক্ত ছিল সমগ্র কালিয়াকৈর থানা। কালিয়াকৈর থানার লোক সংখ্যা ছিল ৩২৭৮ জন। বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী এই এস্টেট আজও তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বলিয়াদী নবাব কুতুব উদ্দিন সিদ্দিকীর পুত্র সাদ উদ্দিন সিদ্দিকী বলিয়াদী এস্টেটের প্রথম কর্ণধর ছিলেন।
৩৫ তম বংশধর থেকে বলিয়াদী রাজত্বের ইতিহাস নিম্নরূপ। ৩৫ তম বংশধর খান বাহাদুর চৌধুরী কাজেম উদ্দিন আহম্মদ ১৯২৩ সালের ২ জুন ইংল্যান্ডের রাজার জন্মদিন উপলক্ষে খান বাহাদুর উপাদী লাভ করেন। তিনি ১৯০৫ সালে আসাম বেঙ্গল মুসলীম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। চৌধুরী কাজেম উদ্দিন আহম্মদ সিদ্দিকীর একমাত্র সন্তান চৌধুরী লাবিব উদ্দিন আহম্মদ সিদ্দিকী। ৩৬তম বংশধর খান বাহাদুর চৌধুরী লাবিব উদ্দিন আহম্মদ সিদ্দিকী ১৯৪৫ সালে ইংল্যান্ডের রাজার দেয়া প্রদত্ত খান বাহাদুর উপাধি লাভ করেন। তার তিন পুত্র চৌধুরী তানভীর আহম্মদ সিদ্দিকী, চৌধুরী দবির উদ্দিন আহম্মদ সিদ্দিকী ও চৌধুরী রকিব উদ্দিন আহম্মদ সিদ্দিকী। এবং তার আরও তিন কন্যা রয়েছেন। [1]
কালিয়াকৈর বাজার থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দক্ষিণে পরগনা তালেবাবাদ এলাকায় বলিয়াদী জমিদার বাড়ী অবস্থিত।
বর্তমানে এই ঐতিহ্যবাহী বলিয়াদী এস্টেটের জমিদার চৌধুরী তানভীর আহম্মদ সিদ্দিকী। ৩৭তম এই বংশধর চৌধুরী তানভীর আহম্মদ সিদ্দিকী ১৯৩৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। পিতার পর তিনি ১৮ বছর বয়সে ১৯৫৭ সালের ৫ মে ঐতিহ্যবাহী বিশাল বলিয়াদী এস্টেটের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮০ সালে ২৬ এপ্রিল থেকে ১৯৮১ সালের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
চৌধুরী তানভীর আহম্মদ সিদ্দিকীর ভাই চৌধুরী দবির উদ্দিন আহম্মদ সিদ্দিকী ১৯৬৬ সালে ঢাকা জেলা বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৮ সালে ঢাকা কেন্দীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি ফেডারেল অব বাংলাদেশ চেম্বার কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি মুসলিম বিশ্বের একমাত্র বণিক সমিতি ইসলামিক চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। উক্ত বণিক সমিতি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ১৯৭৯ সালে ৪২টি মুসলিম দেশের প্রতিনিধি সমবায় গঠন করে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.