বারিপাত
বায়ুর ঘনীভূত জলীয়বাষ্প যেসব উপাদানে পরিণত হয়ে ভূপতিত হয় / From Wikipedia, the free encyclopedia
আবহাওয়াবিজ্ঞানের ভাষায় বারিপাত (precipitation) হলো বায়ুমণ্ডলীয় জলীয়বাষ্পের ঘনীভবনের ফলে উৎপন্ন জলীয় উপাদানের মহাকর্ষীয় টানের দরুন মেঘ থেকে ভূপৃষ্ঠের দিকে পতনের ঘটনা।[4]
বৃষ্টি, গুড়িগুড়ি বৃষ্টি (ইংরেজিতে drizzle ড্রিজল), তুষারপাত, বৃষ্টি ও তুষারের মিশ্রিত রূপ (ইংরেজিতে sleet স্লিট), শিলাবৃষ্টি (hail ইংরেজিতে হেইল), গুঁড়ি গুঁড়ি বরফবৃষ্টি (ice pellets), কাঁচা শিলাবৃষ্টি (graupel), ইত্যাদি বারিপাতের কয়েকটি প্রধান রূপভেদ। বায়ুমণ্ডলের কোনো অংশ যখন জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে অর্থাৎ আপেক্ষিক আর্দ্রতা শতকরা ১০০ ভাগে পৌঁছায়, তখন বারিপাত ঘটে। বায়ুমণ্ডলের কোনও অংশ জলীয় বাষ্পে সম্পৃক্ত হয়ে গেলে বাড়তি জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণা তৈরি করে এবং তা সরাসরি বৃষ্টির ফোঁটার আকারে কিংবা তুষার ও বরফরূপে এবং বরফের বিভিন্ন রূপভেদের আকারে ভূপৃষ্ঠের টানে "থিতিয়ে" বা ঝরে পড়ে। এ কারণে এবং জলীয়বাষ্প থিতিয়ে পড়ার মতো অবস্থায় আসতে যথেষ্ট ঘনীভূত না হওয়ার কারণে কুয়াশা (ইংরেজি Fog ফগ) এবং কুহেলিকা (ইংরেজি mist মিস্ট) বারিপাত হিসেবে গণ্য করা হয় না, বরং এরা বায়ুতে জলের কোলয়েড জাতীয় মিশ্রণ। বায়ুর শীতলীভবন কিংবা বায়ুতে জলীয়বাষ্পের সরবরাহ এই দুইটি প্রক্রিয়া, এবং সম্ভবপর হলে এরা একত্রে প্রযুক্ত হয়ে বায়ুকে সম্পৃক্ত করে তুলতে সক্ষম। একটি মেঘের মধ্যে পানির ক্ষুদ্র ফোঁটাগুলো (droplets) বৃষ্টির অন্যান্য ফোঁটার সাথে কিংবা বরফের স্ফটিকের সাথে সংঘর্ষের মাধ্যমে একত্রিত হওয়ার ফলে বারিপাত তার স্বরূপ লাভ করে। কোনও বিক্ষিপ্ত স্থানে অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে অল্প পরিসরের কিছু কিছু অংশে লাগাতার কিন্তু সংক্ষিপ্ত সময়ে তীব্র বৃষ্টিপাতকে পশলা বৃষ্টি (shower) বলা হয়।[5]
ভূপৃষ্ঠের উপ-হিমশীতল বায়ুর (sub-freezing air) কোনও স্তর পেরিয়ে এর উপরে উত্তোলনের মাধ্যমে অথবা অন্য কোনও উপায়ে উত্থিত আর্দ্রতা মেঘ এবং বৃষ্টিতে ঘনীভূত হতে পারে। যখন হিমায়ন বৃষ্টি সংঘটিত হয় এই প্রক্রিয়াটি সচরাচর তখন সক্রিয় থাকে।