মনোযোগ
From Wikipedia, the free encyclopedia
মনোযোগ হল একটি আচরণগত ও সংজ্ঞানাত্মক প্রক্রিয়া যা নৈর্বাচনিকভাবে কোনো একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিগত বা বস্তুগত তথ্যের প্রতি মনোনিবেশ করতে এবং সেই বিষয়টি সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য উপেক্ষা করতে সহায়তা করে। ঊইলিয়াম জেমস (১৮৯০) লিখেছিলেন, "মনোযোগ হল সমানভাবে সম্ভাব্য বহু চিন্তাধারা বা সম্ভাবনার মধ্য থেকে কন বিশেষ একটির মনের দ্বারা স্বচ্ছ ও প্রানবন্তরুপে নির্বাচন। চিন্তার কেন্দ্রিকতা, মনোনিবেশ এবং সচেতনতা এর মূল আধার।" মনোযোগ প্রক্রিয়াটিকে সংজ্ঞানাত্মক প্রক্রিয়ার উপাদানগুলির সীমিত বিভাজনের ফল হিসেবেও বর্ণনা করা হয়। মনোযোগের প্রক্রিয়াটি একটি বিশেষ সংশোধন্মুলক ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, এটি নির্ভর করে মানুষের মস্তিষ্ক এক সেকেন্ডের মধ্যে ঠিক কতটুকু তথ্য ধারণ করতে পারে তার উপর। উদাহরণ: মানুষের দৃষ্টিশক্তির ক্ষেত্রে, ১% এরও কম তথ্য (এক মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ডে) সংশোধিত হতে পারে। যার ফলস্বরুপ মানুষ অমনোযোগীতাকৃত অন্ধত্বের শিকার হয়।
শিক্ষা, মনোবিজ্ঞান, স্নায়ুবিজ্ঞান, সংজ্ঞানাত্মক স্নায়ুবিজ্ঞান ও স্নায়ুমনোবিজ্ঞান শাস্ত্রগুলিতে মনোযোগ একটি অতি-গুরুত্বপূর্ণ অধ্যয়নক্ষেত্র। কোন্ সংবেদী পথনির্দেশনা ও সংকেতগুলি মনোযোগের জন্ম দেয়, ঐসব সংবেদী পথনির্দেশনা ও সংকেতগুলি সংবেদী স্নায়ুকোষগুলির সঙ্গতিমূলক ধর্মগুলির উপরে কী প্রভাব ফেলে, এবং মনোযোগ ও অন্যান্য আচরণগত ও সংজ্ঞানাত্মক প্রক্রিয়াগুলির মধ্যকার সম্পর্কগুলি কেমন (যাদের মধ্যে কর্মরত স্মৃতি ও মনঃসতর্কতা অন্তর্ভুক্ত), ইত্যাদি ব্যাপারগুলি অধ্যয়ন করা হচ্ছে। অপেক্ষাকৃত নতুন কিছু গবেষণাকর্মে (যেগুলিতে মনোরোগবিজ্ঞান ক্ষেত্রে সাধিত কিছু অতীত গবেষণার সম্প্রসারণ সাধন করা হয়েছে) আঘাতজনিত মস্তিষ্ক জখমের সাথে সংশ্লিষ্ট রোগনির্ণয়কারক লক্ষণ-উপসর্গসমূহ ও মনোযোগের উপরে এগুলির প্রভাবের উপরে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। সংস্কৃতির ভিন্নতার সাথে সাথে মনোযোগের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।[1]
মনোযোগ ও চেতনার মধ্যে সম্পর্কগুলি এতই জটিল যে এগুলির উপরে প্রাচীনকাল থেকে অদ্যাবধি নিরবচ্ছিন্নভাবে দার্শনিকেরা অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। এই অনুসন্ধানগুলি মানসিক স্বাস্থ্য, চেতনার রোগসমূহ, এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মত ক্ষেত্রগুলির জন্য অব্যাহতভাবে প্রাসঙ্গিক হিসেবে বিবেচিত হয়।