মরিস লেল্যান্ড
ইংরেজ ক্রিকেটার / From Wikipedia, the free encyclopedia
মরিস লেল্যান্ড (ইংরেজি: Maurice Leyland; জন্ম: ২০ জুলাই, ১৯০০ - মৃত্যু: ১ জানুয়ারি, ১৯৬৭) ইয়র্কশায়ারের হ্যারোগেট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৮ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, বামহাতে স্পিন বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন তিনি।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মরিস লেল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | (১৯০০-০৭-২০)২০ জুলাই ১৯০০ হ্যারোগেট, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১ জানুয়ারি ১৯৬৭(1967-01-01) (বয়স ৬৬) স্কটন, নেয়ার্সবোরা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি স্পিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪০) | ১১ আগস্ট ১৯২৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২০ আগস্ট ১৯৩৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯২০–১৯৪৬ | ইয়র্কশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ |
১৯২০ থেকে ১৯৪৬ সময়কালে ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। এ সময়ে তিনি ধারাবাহিকভাবে সতেরোবার সহস্রাধিক রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯২৯ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৪১টি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন মরিস লেল্যান্ড। ১১ আগস্ট, ১৯২৮ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।
হ্যারোগেটে জন্মগ্রহণকারী মরিস লেল্যান্ড এক ক্রিকেট পরিবার থেকে এসেছেন। স্থানীয় পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার পর ১৯২০ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। পরবর্তী দুই মৌসুমে বিরামহীনভাবে খেলতে থাকেন। পরিসংখ্যানগতভাবে সফলতা না পেলেও ক্লাব কর্তৃপক্ষের সুনজরে ছিলেন। ১৯২৩ সাল থেকে দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা লাভ করেন। পরবর্তী মৌসুমগুলো স্থিরতা আনয়ণে ইংল্যান্ড দলে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। ১৯২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলার সুযোগ লাভে সক্ষম হন। ১৯২৮-২৯ মৌসুমের শীতকালে বিতর্কিত সিদ্ধান্তে জনপ্রিয় ব্যাটসম্যান ফ্রাঙ্ক ওলি’র স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নিয়ে মনোরম সেঞ্চুরি করেন। জাতীয় দলে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত খেলতে থাকেন। পরবর্তী দুই মৌসুমে দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে তার অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে প্রশ্নের উদয় ঘটে। আগস্ট, ১৯৩২ সালে সহস্রাধিক রান তুলে ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের সদস্যের স্থান নিশ্চিত করেন।
ঐ সিরিজে অত্যন্ত চাপের মুখে থেকেও মরিস লেল্যান্ড বেশ কয়েকবার বড় ধরনের রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলিয়া দল ইংল্যান্ড সফরে আসলে তিনি দলের শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত দলের স্থান দখল করে রেখেছিলেন। কিন্তু, ১৯৩৮ সালে অস্ট্রেলিয়া দল ইংল্যান্ডে আসলে আরেক তরুণ ব্যাটসম্যানের কাছে স্থানচ্যূত হন তিনি। সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে তাকে আবারো দলে ফিরিয়ে আনা হয়। শেষ খেলায় তিনি ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮৭ রানের টেস্ট ইনিংস খেলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সামরিকবাহিনীতে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষে ইয়র্কশায়ার দলে এক মৌসুম খেলেন। এরপর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে চূড়ান্ত অবসরের ঘোষণা দেন।
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর ইয়র্কশায়ারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত কাউন্টি দলটির কোচের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৬৭ সালে দেহাবসান ঘটে তার।
কৌশলগতভাবে সেরা ব্যাটসম্যান না হলেও মরিস লেল্যান্ড অত্যন্ত চাপের মাঝেও ব্যাটিংকর্ম চালিয়ে যেতে সক্ষমতা দেখান। অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতেও সেরা দল ও বোলারদের বিপক্ষে তিনি অধিক কার্যকরী ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের তুলনায় তার টেস্ট ব্যাটিং গড়ের রেকর্ড অধিকতর শ্রেয় ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার এ গড় আরও উচ্চ পর্যায়ের ছিল। টেস্টের বাইরে বল হাতেও ক্ষাণিকটা সফলতা পেয়েছেন। ইয়র্কশায়ারে স্পিন বোলারদের তুলনায় তার বোলিংয়ের কার্যকারিতা দেখা না গেলেও তিনি নিঃসন্দেহে সেরা বোলার হতে পারতেন। প্রথমদিকের বামহাতি রিস্ট-স্পিন বোলারদের অন্যতম সেরা ছিলেন তিনি। ‘চায়নাম্যান’ নামীয় বল ডেলিভারীর আবিষ্কর্তা ছিলেন তিনি। দলীয় সঙ্গী ও দর্শকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। মানবতাবাদী হিসেবেও মরিস লেল্যান্ডের সুনাম ছিল। তাকে ঘিরে অনেকগুলো চটকদার গল্প প্রচলিত রয়েছে।