মাদক নির্ভরতা বা মাদকাসক্তি, এছাড়াও ঔষধ নির্ভরতা হিসেবে পরিচিতি, একটি অভিযোজনমূলক অবস্থা যা দ্বারা মূলত পুনরাবৃত্তিমূলক ঔষধ ব্যবহার বা সেবন করা বা এর বিকাশ লাভ করাকে বুঝিয়ে থাকে, যার ফলাফলস্বরুপ ঔষধ ব্যবহার প্রত্যাহার নিতান্ত হয়ে পড়ে।[1][2] ঔষধ আসক্তি, মাদক নির্ভরতা থেকে স্বতন্ত্র ধারণা, যা নেতিবাচক পরিণতি সত্ত্বেও অমোঘ বা বাধ্যতামূলক, অনিয়ন্ত্রিত ঔষধের ব্যবহার হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।[1][2] আসক্তি-সৃষ্টিকারী ঔষধ এমন ধরনের ঔষধ যা কখনো কখনো ফলপ্রসূ এবং শক্তি বৃদ্ধিকারী উভয় হতে পারে।[1] Δফসবি, একটি জিন ট্রান্সক্রিপশন গুণক বা ফ্যাক্টর, এখনকার সময়ে আচরণগত আসক্তি এবং ঔষধ আসক্তির সমস্ত রূপের বিকাশের ক্ষেত্রে এটি এখন একটি জটিল উপাদান এবং সাধারণ উপাদান হিসাবে পরিগণিত হলেও,[3][4][5] মূলত নির্ভরতা বোঝায় না।

দ্রুত তথ্য মাদক নির্ভরতা মাদকাসক্তি, প্রতিশব্দ ...
মাদক নির্ভরতা
মাদকাসক্তি
প্রতিশব্দঔষধ নির্ভরতা
বিশেষত্বমনোরোগ বিজ্ঞান
বন্ধ

ডায়াগনস্টিক এবং মানসিক রোগের পরিসংখ্যান সারগ্রন্থ (ডিএসএম-৪) ৪র্থ সংস্করণের কাঠামোর মধ্যে, মাদক নির্ভরতাকে ঔষধ আসক্তি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, এবং যা একটি বাধ্যতামূলক প্রত্যাহার উপসর্গ ঘটনার হিসাবে নির্ণয় করা যেতে পারে।[6] এটি এই অনুসারে বর্ণনা করা হয়েছে: "When an individual persists in use of alcohol or other drugs despite problems related to use of the substance, substance dependence may be diagnosed. Compulsive and repetitive use may result in tolerance to the effect of the drug and withdrawal symptoms when use is reduced or stopped. This, along with Substance Abuse are considered Substance Use Disorders."[7] উক্ত পরিসংখ্যানের ৫ম সারগ্রন্থে (২০১৩ সালে প্রকাশিত), মাদক অপব্যবহার এবং মাদক নির্ভরতা মূলত মাদক ব্যবহারজনিত রোগের শ্রেণিবিভাগের মধ্যে একত্রিত করা হয়েছে।[8]

প্রত্যাহার

প্রত্যাহার মূলত মাদক থেকে বিরত থাকার জন্য শরীরিক প্রতিক্রিয়া যার ওপর একজন ব্যক্তির নির্ভরশীলতার উপসর্গের মাত্রা বিকশিত হয়ে থাকে। নির্ভরতার মাত্রা যখন বিকশিত হয়, মাদক ব্যবহারের বা সেবন ত্যাগ করা একটি অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করে, যা নেতিবাচক সুসংহতকরণের মাধ্যমে অব্যাহত ঔষধ ব্যবহারের প্রচার করে; উদাহরণস্বরূপ, ঔষধ সেবন অব্যাহতি বা পুনরায় এর সেবন এড়াতে ব্যবহৃত হয়। প্রত্যাহার অবস্থার মধ্যে শারীরিক-সোমাটিক উপসর্গ (শারীরিক নির্ভরতা) এবং মানসিক-প্রেরণামূলক উপসর্গ (মনস্তাত্ত্বিক নির্ভরতা) উভয়ই অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। পুনরায় মাদকের ব্যবহার বা সেবন চালু না হলে রাসায়নিক এবং হরমোন জনিত ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। এমনকি পুনরায় মাদকের ব্যবহার বা সেবন না করা হলে মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে। শিশুরাও এছাড়াও মাদক প্রত্যাহার কারণে ভুগতে পারে। এটি নিওনেটাল অ্যাসিস্টিনেন্স সিনড্রোম (NAS) নামে পরিচিত, যা গুরুতর এবং জীবন-হুমকিজনক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রত্যাশিত মায়েদের ওষুধ ও অ্যালকোহলের আসক্তি কেবল নিওনেটাল অ্যাসিস্টিনেন্স সিনড্রোম নয়, বরং এর অন্যান্য দিক শিশু এবং তার জীবদ্দশায় সর্বত্র ক্রমাগত প্রভাবিত করতে পারে।[9]

ঝুঁকির কারণ

সম্ভাব্য নির্ভরতা

ঔষধের সম্ভাব্য নির্ভরতা মাদক থেকে মাদকে এবং ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে তারতম্য ঘটায়। ডোজ, ফ্রিকোয়েন্সি, নির্দিষ্ট মাদকের ফার্মাসোকিনেটিক্স, অবস্থার গন্তব্য এবং সময় মাদক নির্ভরতা বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

দ্য ল্যানসেটের একটি নিবন্ধে ২০টি ঔষুধের ক্ষতি এবং নির্ভরতার দায় তুলনা করতে শারীরিক নির্ভরতা, মানসিক নির্ভরতা, এবং নির্ভরতার জন্য শূন্য থেকে তিন স্কেলে একটি গড় স্কোর ব্যবহার করে। নির্বাচিত ফলাফল নিচের তালিকায় দেখা যেতে পারে।[10]

আরও তথ্য ঔষধ, গড় ...
ঔষধগড়পরিতোষমনস্তাত্ত্বিক নির্ভরতাশারীরিক নির্ভরতা
হেরোইন৩.০০৩.০২.৬৩.০
কোকেইন২.৩৯৩.০৩.০১.৩
তামাক২.২১২.৩২.৮১.৮
বারবিচুরেট২.০১২.০২.২১.৮
অ্যালকোহল১.৯৩২.৩১.৯১.৬
বেঞ্জোডায়াজেপিন১.৮৩১.৭২.১১.৮
অ্যাম্ফিট্যামিন১.৬৭২.০১.৯১.১
গাঁজা১.৫১১.৯১.৭০.৮
এক্সটাসি১.১৩১.৫১.২০.৭
বন্ধ

সেবনকারীর হার

সেবনকারীর হার ব্যবহারকারীদের শতাংশ নির্দেশ করে, যারা কিছু সময় ঔষধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছিলেন বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন।[11][12]

আরও তথ্য ঔষধ, % ব্যবহারকারী ...
ঔষধ % ব্যবহারকারী
গাঁজা৯%
অ্যালকোহল১৫.৪%
কোকেইন১৬.৭%
হেরোইন২৩.১%
তামাক৩১.৯%
বন্ধ

রোগ নির্ণয়

ডিএসএম শ্রেণিবিভাগ

"Substance dependence", as defined in the DSM-IV, can be diagnosed with physiological dependence, evidence of tolerance or withdrawal, or without physiological dependence. DSM-IV substance dependencies include:

  • ৩০৩.৯০ অ্যালকোহল নির্ভরতা
  • ৩০৪.০০ আফিম জাতীয় নির্ভরতা
  • ৩০৪.১০ যন্ত্রণাহর, হিপনোটিক, বা এনাক্সোলিটিক নির্ভরতা (বেঞ্জোডায়াজেপিন নির্ভরতা এবং বারবিচুরেট নির্ভরতা অন্তর্ভুক্ত)
  • ৩০৪.২০ কোকেইন নির্ভরতা
  • ৩০৪.৩০ গাঁজা নির্ভরতা
  • ৩০৪.৪০ অ্যাম্ফিটামিন নির্ভরতা (বা অ্যাম্ফিটামিন-জাতীয়)
  • ৩০৪.৫০ হেলুসিনেজন নির্ভরতা
  • ৩০৪.৬০ ইনহ্যালেন্ট নির্ভরতা
  • ৩০৪.৮০ পলিমাদক নির্ভরতা
  • ৩০৪.৯০ ফেন্সিডিল (বা ফেন্সিডিল-জাতীয়) নির্ভরতা
  • ৩০৪.৯০ অন্যান্য (বা অজানা) মাদক নির্ভরতা
  • ৩০৫.১০ নিকোটিন নির্ভরতা

সমাজ ও সংস্কৃতি

জনমিতি

আন্তর্জাতিকভাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পূর্ব ইউরোপের দেশসমূহে সর্বাধিক মাদক ব্যবহারজনিত ব্যাধি সংঘটিত হয় যা প্রায় ৫-৬%। অন্যদিকে আফ্রিকা, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে বিশ্বব্যাপী যার হার ১-২%। বিশ্ব জুড়ে, মাদক নির্ভরতার উচ্চতর প্রাদুর্ভাবে ভুক্তদের বেশিরভাগের বয়স সীমা বিশ এবং তারা বেকার ও পুরুষ।[13] ড্রাগ ব্যবহার ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জাতীয় জরিপের (NSDUH) প্রতিবেদন অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন জনসংখ্যার মাদক নির্ভরতা / অপব্যবহার হার ব্যপক। ১২ বছর এবং তার অধিক বয়সের ব্যক্তি ও জাতিগোষ্ঠীর ওপর ভিত্তি করে জনসংখ্যা জরিপ করার সময়, যুক্তরাষ্ট্রের মার্কিন / আলাস্কান নাগরিকরা সর্বোচ্চ হারের মধ্যে ছিল এবং এশিয়ার অন্যান্য ব্যক্তি ও জাতিগোষ্ঠীর এর তুলনায় সর্বনিম্ন হারের মধ্যে ছিল।[14]

আরও তথ্য জাতি/জাতিগোষ্ঠী, নির্ভরতা/অপব্যবহারের হার ...
জাতি / জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে মাদকের ব্যবহার[14]
জাতি/জাতিগোষ্ঠী নির্ভরতা/অপব্যবহারের হার
এশিয় ৪.৬%
কৃষ্ণাঙ্গ ৭.৪%
শেতাঙ্গ ৮.৪%
হিস্পানিক ৮.৬%
মিশ্র জাতি ১০.৯%
স্থানীয় হাওয়াইয়ান/

প্রশান্ত দ্বীপপুঞ্জীয়

১১.৩%
মার্কিন ভারতীয়/

আলাস্কান স্থাণীয়

১৪.৯%
বন্ধ

১২ বছর এবং তার অধিক বয়সী মহিলাদের ওপর ভিত্তি করে জনসংখ্যার জরিপ করার ফলে দেখা গেছে যে মহিলাদের তুলনায় পুরুষের নির্ভরতার হার বেশি ছিল। যদিও, এই হারের পার্থক্য ১৭ বছর বয়সের পর পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।[14] ড্রাগ ও অ্যালকোহল নির্ভরতার প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায় যে বয়স্ক বা প্রাপ্তবয়স্কদের ১৫-২০% শতাংশ ওষুধ ও অ্যালকোহল ব্যবহার করে। এটি অনুমান করা হয়েছে যে ১২ বছরেরও বেশি বয়সী ৫২ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক মাদকের ব্যবহার করেছে।[15]

আরও তথ্য বয়স, পুরুষ ...
ভিন্ন লিঙ্গের মধ্যে মাদকের ব্যবহার / বয়সানুযায়ী[14]
বয়স পুরুষ মহিলা
১২ এবং তার অধিক বয়সী ১০.৮% ৫.৮%
১২-১৭ ৫.৩% ৫.২%
১৮ বা অধিক বয়সী ১১.৪% ৫.৮%
বন্ধ


আরও তথ্য শিক্ষা স্তর, হার ...
অবৈধ ড্রাগ নির্ভরতার জনসংখ্যা
(শিক্ষা, কর্মসংস্থান, এবং আঞ্চলিক)[14]
শিক্ষা স্তর হার কর্মসংস্থানের অবস্থা হার অঞ্চল হার
উচ্চ বিদ্যালয় ২.৫% বেকার ১৫.২% বৃহৎ মহানগর ৮.৬%
ডিগ্রিবিহীন, কলেজ ২.১% খন্ডকালীন ৯.৩% ক্ষুদ্র মহানগর ৮.৪%
কলেজ স্নাতক ০.৯% পূর্ণকালীন ৯.৫% অ-মহানগর ৬.৬%
বন্ধ

[16]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.