মার্কণ্ডেয় পুরাণ
অষ্টাদশ মহাপুরাণের অন্যতম প্রধান এবং হিন্দু ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ। / From Wikipedia, the free encyclopedia
মার্কণ্ডেয় পুরাণ (সংস্কৃত: मार्कण्डेय पुराण) হল সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ। এটি আঠারোটি মহাপুরাণের অন্যতম। [1][2] দেবতা শিব ও বিষ্ণুর মাহাত্ম্যসূচক দুটি কিংবদন্তির কেন্দ্রীয় চরিত্র ঋষি মার্কণ্ডেয়র নামে এই পুরাণটি নামাঙ্কিত।[3] তবে মার্কণ্ডেয় পুরাণ সেই পুরাণগুলির অন্যতম যেগুলিতে কোনও নির্দিষ্ট দেবতার মাহাত্ম্যব্যঞ্জক সাম্প্রদায়িক ধারণার অবতারণা করা হয়নি।[2][3] কোনও নির্দিষ্ট দেবতাকে কেন্দ্র করে পুরাণের অবতারণার ধারণাটি অন্যান্য পুরাণগুলিতে প্রায়শই দেখা যায় না।[4][5]
মার্কণ্ডেয় পুরাণ সম্ভবত হিন্দু সাহিত্যের পৌরাণিক ধারার প্রাচীনতম গ্রন্থগুলির অন্যতম। লুডো রোচারের মতে, এই গ্রন্থখানি উক্ত ধারার সর্বাধিক কৌতুহলোদ্দীপক ও গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থগুলির অন্যতমও বটে।[2] এই পুরাণের সর্বাপেক্ষা পরিচিত অংশটি হল "চণ্ডী" বা "দেবীমাহাত্ম্যম্" অংশটি, যা পৃথক গ্রন্থাকারেও পঠিত হয়ে থাকে। চণ্ডীই প্রাচীনতম জ্ঞাত হিন্দুশাস্ত্র, যেখানে দেবীকে পরম সত্য ও মহাবিশ্বের স্রষ্টা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।[2][3][6] নারীত্বের প্রতি অসাধারণ শ্রদ্ধাসম্পন্ন এই গ্রন্থাংশটি হিন্দুধর্মের শক্তিপূজা-কেন্দ্রিক শাক্ত সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগ্রন্থ।[6][7] উক্ত সম্প্রদায়ে এই গ্রন্থাংশ ভগবদ্গীতার সমতুল্য মর্যাদাসম্পন্ন।[8]
মার্কণ্ডেয় পুরাণের প্রাপ্ত পুথিগুলি ১৩৭টি অধ্যায়ে বিভক্ত। এর মধ্যে ৮১শ থেকে ৯৩শ অধ্যায় পর্যন্ত অংশটি "চণ্ডী" নামে পরিচিত।[9] প্রথাগত বিশ্বাস ও কয়েকটি মধ্যযুগীয় গ্রন্থের মতানুসারে মার্কণ্ডেয় পুরাণের মোট শ্লোকসংখ্যা ৯,০০০। কিন্তু প্রাপ্ত পুথিগুলিতে ৬,৯০০টি শ্লোকই পাওয়া যায়।[10] গ্রন্থের বিষয়বস্তুর মধ্যে যথেষ্ট বৈচিত্র্য লক্ষিত হয়।[1][11][12] এর মধ্যে রয়েছে সামাজিক-সাংস্কৃতিক তথ্যাবলি, বৈদিক ধ্যানধারণার প্রতীকতত্ত্ব এবং অধিবিদ্যামূলক চিন্তাভাবনা।[13]