মূলসুর বক্তৃতা
From Wikipedia, the free encyclopedia
জনসমক্ষে বক্তৃতা প্রদান ক্ষেত্রে মূলসুর বক্তৃতা বলতে (Keynote কীনোট বা Keyonote speech কীনোট স্পীচ) এমন একটি বক্তৃতাকে বোঝায় যেটি কোনও অনুষ্ঠানের (যেমন সম্মেলন, বক্তৃতামালা, ইত্যাদি) ভিত্তিতে অবস্থতি মূল বিষয়বস্তুটিকে প্রতিষ্ঠা করে। ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক পরিবেশে মূলসুর বক্তৃতা কীভাবে প্রদান করা হচ্ছে, সে ব্যাপারটির উপর অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করা হয়। মূলসুর বক্তৃতাটি পরবর্তী ঘটনাবলী বা সম্মেলনের কর্মসূচির জন্য একটি পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠা করে। প্রায়শই একজন মুলসূর বক্তৃতা[1][2] সম্মেলনের সমন্বয়কারীর ভূমিকাও পালন করে থাকেন। একটি মূলসুর বক্তৃতাতে কোনও বৃহত্তর ধারণা যেমন কোনও সাহিত্যিক কাহিনী, কোনও একক সঙ্গীতকর্ম বা ঘটনাকে গুরত্ব প্রদান করা হতে পারে।
রাজনৈতিক বা শিল্পখাতের সম্মেলন ও প্রদর্শনীগুলিতে এবং উচ্চশিক্ষায়তনিক সম্মেলনগুলিতে এই মূলসুর বক্তৃতাটিকে ঐ সব অনুষ্ঠানের ভিত্তিস্বরূপ ভাবটি প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং মূল বার্তাটি বা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটির একটি সারমর্ম প্রদান করা হয়। এছাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিভিন্ন শিক্ষা সনদ বা উপাধি প্রদান অনুষ্ঠানেও স্বীয় কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত উচ্চশিক্ষায়তনিক ব্যক্তিত্ব বা বিখ্যাত ব্যক্তিরা ছাত্র সংগঠনের নিমন্ত্রণে এসে মূলসুর বক্তৃতাটি প্রদান করতে পারেন। এই বক্তৃতাগুলিকে প্রায়শই উপাধি বিতরণ অনুষ্ঠানের বক্তৃতা বলা হয়।
মূলসুর বক্তৃতা প্রদানকারীদেরকে প্রায়শই কোনও বিশেষ অনুষ্ঠান যেমন কোনও বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার আয়োজিত সম্মেলন বা কোনও বৃহৎ সভার বিষয়ে আগ্রহ জাগিয়ে তোলার জন্য ও সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারীদের ঐ সব অনুষ্ঠানে আকৃষ্ট করার জন্য নির্বাচন করা হয়। যদি কোনও মূলসুর বক্তা তাদের নিজ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত হয়ে থাকেন, বা অন্যান্য কীর্তির কারণে সুনামের অধিকারী হয়ে থাকেন, তাহলে সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উৎসাহ বৃদ্ধি পেতে পারে। ইদানিং মূলসুর কথাটি প্রায়শই পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন কিংবা "আমন্ত্রিত বক্তৃতা"-র সমার্থক পরিভাষা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন কিছু কিছু সম্মেলনে প্রারম্ভিক মূলসুর বক্তৃতা, অন্তিম মূলসুর বক্তৃতা ও আরও বিভিন্ন ধরনের মূলসুর বক্তৃতা থাকতে পারে।
একজন মূলসুর বক্তা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন কিংবা একটি বক্তাদের দফতর (speakers bureau) তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে পারে। যদি কোনও বক্তা একটি ঐতিহ্যবাহী বক্তাদের দফতর প্রতিনিধিত্ব করে, তাহলে তাদেরকে একটি দালালি পারিশ্রমিক (কমিশন) প্রদান করতে হয়। তবে নৈতিকভাবে ও ঐতিহ্যগতভাবে বক্তৃতার খরিদ্দার নয়, বরং সেবা প্রদানকারী বক্তার সম্মানী থেকেই ঐ দালালি পারিশ্রমিকটি কেটে নেওয়া হয় এবং বক্তৃতার মূল্যটিকে স্বচ্ছভাবে খরিদ্দারের কাছে পেশ করা হয়।[3]
মূলসুর পরিভাষাটি আ কাপেল্লা নামক বাদ্যযন্ত্রবিহীন গায়কদলগুলি (যেমন ডু-ওয়প বা বার্বারশপ ঘরানার গায়কেরা) গান শুরু করার আগে সুর বাঁধার জন্য যে মূলসুর বা ভিত্তিসুরটি একত্রে গেয়ে নেন, সেই চর্চা থেকে এসেছে। এই সুরটি কোন বিশেষ স্বরগ্রামকে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে গানটি গাওয়া হবে, তা নির্ধারণ করে দেয়।[4]