যৌন পৃথকীকরণ
যৌনকার্য / From Wikipedia, the free encyclopedia
যৌন পৃথকীকরণ (ইংরেজি: Sexual differentiation) হল একটি লিঙ্গ পার্থক্যবিহীন জাইগোটের মাঝে নারী বা পুরুষের মধ্যকার পার্থক্যসূচক বৈশিষ্ট্যগুলো সুস্পষ্টরূপে বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়া। নারী এবং পুরুষ জাইগোট থেকে ফেটাসে পরিণত হয়, এরপর নবজাতক, শিশু, কিশোর এবং এভাবে একপর্যায়ে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে, এর সঙ্গে যৌন ও লিঙ্গীয় পার্থক্যগুলো বিভিন্ন ধাপে বিকাশ লাভ করে: এগুলো হল জিন, ক্রোমোজোম, গোনাড, হরমোন, শারীরস্থান এবং মনস্তত্ত্ব।
যৌন পার্থক্যের পরিসীমা অনেক বিস্তৃত এবং বিভিন্ন অঙ্গসংস্থানিক পার্থক্যকরণ এতে অন্তর্ভুক্ত। যৌন বিভাজনসূচক পার্থক্যগুলো সেই সকল পরিবর্ধন যেগুলো শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট যৌনতার বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ করে। যৌন বিভাজনসূচক এসকল পার্থক্যগুলোর মধ্যে রয়েছে যৌন-বিশেষায়িত অঙ্গ যেমন ডিম্বাশয়, জরায়ু অথবা যৌনাঙ্গ বিশিষ্ট মূত্রনালি। অপরদিকে, যৌন-দ্বিরূপক পার্থক্যগুলো তাদের মৌলিক বৈশিষ্ট্য (যেমন যৌনাঙ্গের আকার)। এদের মধ্যে কিছু হল মূলত পরিসংখ্যানিক পার্থক্য, যেগুলো নারী পুরুষের মাঝে একে অপরের সম্পূরক।
তবে, মানব জনসংখ্যাতে যৌন বিভাজনসূচক পার্থক্যগুলো সকল ক্ষেত্রে পরিপূর্ণরুপে দেখা যায় না। কিছু মানুষ আছে যারা জন্মগতভাবে ব্যতিক্রম (জরায়ু বিশিষ্ট পুরুষ অথবা এক্সওয়াই ক্যারিয়োটাইপ বিশিষ্ট (এক্সওয়াই গোনাডাল ডিজজেনেসিস) নারী), অথবা যারা জৈবিক এবং/অথবা আচরণগতভাবে উভয়লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে।
নির্দিষ্ট জিন, হরমোন, শারীরস্থান এবং সামাজিক শিক্ষার মাধ্যমে যৌন পার্থক্য গড়ে ওঠে। এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য সম্পূর্ণরূপে শারীরিক (জারায়ু বা শিশ্নের উপস্থিতি) আর কিছু পার্থক্য নিশ্চিতভাবে সামাজিক শিক্ষা ও রীতিনীতির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত (যেমন নারী পুরুষের চুলের দৈর্ঘ্য)। যদিও কিছু পার্থক্য যেমন লিঙ্গ পরিচয়, জৈবিক ও সামাজিক উভয় বৈশিষ্ট্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে (প্রকৃতি ও প্রতিপালন)।
মানব যৌনতার পার্থক্যকরণের এই ধাপগুলো অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ন্যায় প্রায় একইরকম এবং এতে জিন হরমোন ও শারীরিক কাঠামোর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বিজ্ঞানীরা সফলভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। ফেটাসের প্রথম ছয় সপ্তাহে, বাহ্যিকভাবে ভ্রুনের কোন যৌন বৈশিষ্ট্য থাকেনা, শুধুমাত্র জেনেটিক যৌনতার পার্থক্যই এতখন উপস্থিত থাকে। ক্রোমোজোমের বিশেষ জিন যৌনাঙ্গের পার্থক্য সৃষ্টি করে, যা হরমোনের পার্থক্য তৈরির মাধ্যমে দৈহিক পার্থক্য তৈরি করে, এবং তা মনস্তাত্ত্বিক এবং আচরণগত পার্থক্য তৈরি করে, এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য জন্মগত এবং কিছু পার্থক্য সামাজিক পরিবেশ কর্তৃক সৃষ্ট।