শিয়া-সুন্নি সম্পর্ক
উইকিমিডিয়ার তালিকা নিবন্ধ / From Wikipedia, the free encyclopedia
শিয়া ও সুন্নি ইসলাম হলো ইসলামের দুটি প্রধান সম্প্রদায় । ৬৩২ খৃষ্টাব্দে ইসলামী নবী মুহাম্মদ (সা.) -এর মৃত্যুর পর হযরত আবু বকর খলিফা নির্বাচিত হলে কয়েকজন দাবি করে নবী মুহম্মদ ঐতিহাসিক গাদীর খুমের ভাষণে তাঁর চাচাতো ভাই ও জামাতা আলী ইবনে আবী তালিবকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে মনোনীত করে যান। মুসলিম সম্প্রদায়ের খলিফা হিসেবে মুহাম্মদ সাঃ এর উত্তরাধিকার লাভ নিয়ে দ্বন্দ্ব-বিবাদ ইসলামী বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে, ফলশ্রুতিতে জামালের যুদ্ধ ও সিফফিনের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। কারবালার যুদ্ধের পর এই বিরোধ কিছুটা কমে গেছে, যেখানে উমাইয়া খলিফা প্রথম ইয়াজিদের অধীনে হুসাইন ইবনে আলী ও তার পরিবার-পরিজন নিহত হন, এবং প্রতিশোধের স্পৃহা প্রারম্ভিক ইসলামী সম্প্রদায়কে দুভাগে বিভক্ত করে দেয়, যা বর্তমানে ইসলামী শিয়াবাদ নামে পরিচিত, ইসলামী শব্দটি ব্যবহারের কারণ হল যেন একে খ্রিস্টান শিয়াবাদ হতে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়। [2]
এই নিবন্ধটি মেয়াদোত্তীর্ণ। (November 2018) |
শিয়া ও সুন্নিদের বর্তমান জনসংখ্যার অনুপাত নির্ণয় করা কঠিন। সূত্র অনুযায়ী বিভিন্ন পরিমাণের হলেও, গড় অনুমান অনুযায়ী বিশ্বের ৯০℅ মুসলিম হল সুন্নি আর ১০℅ মুসলিম হল শিয়া, যাদের বেশিরভাগই ১২ ইমাম প্রথার অনুসারী, বাকিরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত।[3]
অধিকাংশ মুসলিম সম্প্রদায়েই সুন্নিরা হল সংখ্যাগরিষ্ঠ: দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা, ও আরব বিশ্বের অন্যান্য অংশে। শিয়ারা যেসব দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ সেগুলো হল, ইরাক, বাহরাইন, লেবানন, ইরান ও আজারবাইজান, এছাড়াও তারা পাকিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেন ও কুয়েত্ে রাজনৈতিকভাবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু হিসেবপরিচিতিত।[4] ইন্দোনেশিয়ায় বৃহত্তম সুন্নি মুসলিম জনগোষ্ঠী বাস করে, যেখানে ইরানে বিশ্বের বৃহত্তম শিয়া (বারো ইমাম) জনগোষ্ঠী বাস করে। পাকিস্তানের বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সুন্নি জনগোষ্ঠী রয়েছে, যেখানে ভারত্ে রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিয়া মুসলিম (বারো ইমাম) জনগোষ্ঠী। [5][6][7][8][9][10][11][12][13]
বর্তমানে, এই দুই গোষ্ঠীর ধর্মীয়চর্চা, ঐতিহ্য, প্রথার মাঝে পার্থক্য রয়েছে যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফিকহর সাথে সম্পর্কিত। যদিও সকল কোরআন কে মেনে চলে।
সবচেয়ে বেশি শিয়া রয়েছে ইরানে। বিগত বছরগুলোতে, সুন্নি-শিয়া সম্পর্ক ক্রমবর্ধমান হারে সাংঘর্ষিক হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছিল,[14] বিশেষত ইরান-সৌদি আরব দলীয় বিরোধ। এছাড়াও পাকিস্তান থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত সকল স্থানে আন্তঃদলীয় কোন্দল স্থায়ীরূপ লাভ করেছিল যা মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলিম বিভক্তির এটি অন্যতম কারণ।[15][16] বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্ষমতার লড়াইয়ের কারণে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল, উদাহরণস্বরূপ বাহরাইনি অভ্যুত্থান, ইরাক যুদ্ধ[17][18][19] এবং স্বঘোষিত আইসিস এর প্রতিষ্ঠা, যা শিয়াদের বিরুদ্ধে গণহত্যার কার্যক্রম চালু করেছিল।
কিন্তু ২০২৩ এর মার্চ মাসে চীনের মধ্যস্থতায় আলোচনায় বসে সৌদি ও ইরান। আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সংঘর্ষ হ্রাস, বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনঃগঠন, দুতাবাস স্থাপন ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল সহ নানান দিক বিবেচনায় এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যা আগামীতে উক্ত অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হয়।