সাধু মথি লিখিত সুসমাচার
From Wikipedia, the free encyclopedia
সাধু মথি লিখিত সুসমাচার (গ্রিক: Τὸ κατὰ Ματθαῖον εὐαγγέλιον; অপর নাম মথিলিখিত সুসমাচার বা সংক্ষেপে মথি) হল নূতন নিয়মের প্রথম পুস্তক। এই পুস্তকে পাওয়া যায়, মসিহ যিশুকে কীভাবে ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং শেষে কীভাবে তিনি সমগ্র বিশ্বে সুসমাচার প্রচারের জন্য নিজের শিষ্যদের প্রেরণ করেছিলেন।[1]
অধিকাংশ গবেষকই মনে করেন যে, মথিলিখিত সুসমাচারটি ৮০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৯০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনও এক সময়ে রচিত হয়। যদিও এই সুসমাচারটি ৭০ থেকে ১১০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনও এক সময়ে রচিত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। অল্পসংখ্যক গবেষক মনে করেন যে, এটি ৭০ খ্রিষ্টাব্দের পূর্বে রচিত হয়েছিল।[2][3] এই পুস্তকের অজ্ঞাতনামা লেখক সম্ভবত ছিলেন কোনও পুরুষ ইহুদি। তিনি মতবিশ্বাসের দিক থেকে প্রথাগত ও প্রথা-বহির্ভূত ইহুদি মূল্যবোধের মধ্যবর্তী সীমারেখায় অবস্থান করছিলেন এবং সমসাময়িক কালের বিতর্কিত শাস্ত্রের ব্যবহারিক বিধানগত দিকগুলি সম্পর্কে অবহিত ছিলেন।[4] এই পুস্তকটি একটি মার্জিত সেমিটিক "সিনাগগ গ্রিক" ভাষায় রচিত।[5] পুস্তককার তিনটি প্রধান সূত্র থেকে এই পুস্তকের বিষয়বস্তু গ্রহণ করেছেন: মার্কলিখিত সুসমাচার, কিউ সূত্র নামে পরিচিত বাণীর একটি তাত্ত্বিক সংকলন এবং এম সূত্র বা ‘বিশেষ ম্যাথিউ’ নামে পরিচিত একটি উপাদান, যা তার নিজের সমাজের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ছিল।[6]
মথিলিখিত সুসমাচারটি মার্কলিখিত সুসমাচারের একটি সৃজনশীল পুনর্ব্যাখ্যা।[7] এই পুস্তকে যিশুর শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে তার কার্যকলাপও উল্লিখিত হয়েছে[8] এবং তার দিব্য প্রকৃতি উন্মোচিত করার জন্য কিছু সূক্ষ্ম পরিবর্তনও আনা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মার্কলিখিত সুসমাচারে রয়েছে, এক ‘যুবক’ যিশুর সমাধিস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। মথিলিখিত সুসমাচারে দেখানো হয়েছে তিনি এক জ্যোতির্ময় স্বর্গদূত।[9] যিশুর দিব্য প্রকৃতি ম্যাথিয়ান সমাজের একটি প্রধান প্রসঙ্গ ছিল। এটি ছিল ইহুদি প্রতিবেশীদের থেকে তাদের পৃথক করার ব্যাপারে একটি আবশ্যিক উপাদান।[10] মার্কলিখিত সুসমাচারে যিশুর পার্থিক জীবদ্দশার পূর্ববর্তী প্রকাশিত ঘটনাবলি, তার দীক্ষা ও রূপান্তরের সময়কালে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলির উপর আলোকপাত করা হয়েছে। কিন্তু মথিলিখিত সুসমাচারে আরও দূরে যাওয়া হয়েছে। এই সুসমাচারে যিশুকে জন্মাবধিই ঈশ্বরপুত্র তথা পুরাতন নিয়মের মসিহ-সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীগুলির পরিপূর্ণতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।