সীতাকুণ্ড উপজেলা
চট্টগ্রাম জেলার একটি উপজেলা / From Wikipedia, the free encyclopedia
সীতাকুণ্ড উপজেলা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা যা ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এটি চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলার, বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার দ্বিতীয় স্তর, একটি। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের অধীন চট্টগ্রাম জেলার মধ্যে একটি[1][2] এবং চট্টগ্রাম জেলার উত্তরে অবস্থিত। চট্টগ্রাম নগরীর ৯ কি.মি. উত্তরে রাজধানী ঢাকা থেকে ২১৯ কি.মি.দক্ষিণে - ৩৫ কি.মি. দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট গিরিসৈকতের মিলন কেন্দ্র বার আউলিয়ার পূণ্যভূমিতে সীতাকুন্ড থানার অবস্থান। এই উপজেলর উত্তরে মিরসরাই ও ফটিকছড়ি উপজেলা, দক্ষিণে পাহাড়তলী থানা, পূর্বে ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলা এবং পাঁচলাইশ থানা, পশ্চিমে সন্দ্বীপ চ্যানেল ও সন্দ্বীপ উপজেলা অবস্থিত। সীতাকুন্ড উপজেলায় দেশের প্রথম ইকোপার্ক অবস্থিত, পাশাপাশি বিকল্প শক্তি প্রকল্প, বিশেষ করে বায়ু শক্তি এবং ভূ-তাপীয় শক্তি প্রকল্প অবস্থিত।
সীতাকুণ্ড | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে সীতাকুণ্ড উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৭′ উত্তর ৯১°৪০′ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | চট্টগ্রাম জেলা |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৭৯ |
সংসদীয় আসন | ২৮১ চট্টগ্রাম-৪ |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | এস এম আল মামুন |
• উপজেলা চেয়ারম্যান | এস. এম. আল মামুন |
আয়তন | |
• মোট | ২৭৩.৪৭ বর্গকিমি (১০৫.৫৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৩,৩৫,১৭৮ |
• জনঘনত্ব | ১,২০০/বর্গকিমি (৩,২০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৪.৬০% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৪৩১১ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ১৫ ৮৬ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
সীতাকুন্ড বাংলাদেশে মানব বসতির প্রাচীনতম একটি স্থান। এর ইতিহাসের বেশিরভাগ সময়, সীতাকুন্ডের পূর্বদিক মিয়ানমারের বিভিন্ন বৌদ্ধ শাসক এবং পশ্চিমে বাংলার মুসলিম শাসকরা পর্যায়ক্রমে শাসন করেছিলেন। অষ্টম শতাব্দীর একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ভারতের পাল বংশের শাসকরা সীতাকুন্ড শাসন করেছিল। সীতাকুন্ডের পূর্বাঞ্চলে শাসকরা আরাকান রাজ্য, ম্রাক ইউ রাজবংশ, আরাকানীয় জলদস্যু এবং পৌত্তলিক রাজ্য থেকে এসেছিলেন। পশ্চিমের শাসকরা বাংলার সুলতানি এবং বাংলার মোগল প্রদেশ (সুবা) থেকে এসেছিলেন। ১৬শ ও ১৭শ শতকে পর্তুগীজরা এই অঞ্চলে ইউরোপীয় শাসন ষোষণা করে, যারা জলদুস্যদের সাথে শাসন করে। ১৮শ ও ১৯শ শতকে এই অঞ্চল বিট্রিশ রাজের অধীনের শাসিত হয়েছিল, যারা সীতাকুণ্ডকে চট্টগ্রাম জেলার বাকী অংশের সাথে একীভূত করেছিলেন।
সীতাকুন্ডের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মূলত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং রেলপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সীতাকুন্ড মূলত একটি কৃষি প্রধান এলাকা হলেও এখানে বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প রয়েছে। এই শিল্পের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের অধিকার, বিশেষত কাজের সুরক্ষা অনুশীলন এবং শিশুশ্রম সম্পর্কিত বিষয়ে অবহেলা করার অভিযোগ উঠেছে। এটির বিরুদ্ধে পরিবেশের ক্ষতি করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিশেষ করে মাটি দূষণের।বন নিধন, গণহারে মাছ ধরা এবং ভূগর্ভস্থ জল দূষণ সীতাকুন্ডের স্বাভাবিক বাস্তুতন্ত্রুকে হুমকির সম্মুখীন করছে। উপজেলাটি ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছাসের মতো প্রাকৃতিক ক্ষতির জন্যও সংবেদনশীল। সীতাকুন্ড বাংলাদেশের সবচেয়ে সক্রিয় সিসমিক ফল্ট লাইন সীতাকুন্ড-টেকনাফ ফল্টে অবস্থিত।
সীতাকুন্ড বহু ইসলামী, হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে ২৯২টি মসজিদ, ৫০টি মন্দির, ৩টি বৌদ্ধ মঠ, ৮টি মাযার রয়েছে। এখানাকার উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় স্থানগুলোর মধ্যে বার এ আউলিয়া (বার আউলিয়া), শাহজাহানী শাহ মাজার, চন্দ্রনাথ মন্দির, পস্থিশালা বৌদ্ধ বিহার, সীতাকুন্ড শংকর মঠ, বিদর্শনরাম বিহার (পণ্ডিত প্রজনালোক মহাস্থবির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত), হামমাদ্যর মসজিদ (সুলতান গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।[3]