হৈসল সাহিত্য
From Wikipedia, the free encyclopedia
হৈসল সাহিত্য হল অধুনা দক্ষিণ ভারত অঞ্চলে গড়ে ওঠা হৈসল সাম্রাজ্যে (১০২৫-১৩৪৩ খ্রিস্টাব্দ) কন্নড় ও সংস্কৃত ভাষায় রচিত সাহিত্যের বিশাল সম্ভার।[1] দ্বিতীয় নৃপ কাম প্রতিষ্ঠিত এই সাম্রাজ্য রাজনৈতিক প্রাধান্য অর্জন করে রাজা বিষ্ণুবর্ধনের (১১০৮-১১৫২ খ্রিস্টাব্দ) রাজত্বকালে।[2] ১৩১১ খ্রিস্টাব্দে খিলজি রাজবংশের আক্রমণকারীদের হাতে পরাস্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে এই সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।[3]
এই যুগের কন্নড় সাহিত্য ছিল জৈন ও বীরশৈব ধর্মবিশ্বাসের সামাজিক-ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সাহিত্যের সমষ্টি, এছাড়া স্বল্প পরিমাণে বৈষ্ণব ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সাহিত্যও এই ধারার অন্তর্গত ছিল। কন্নড় ভাষায় প্রথম সুপরিচিত ব্রাহ্মণ লেখকেরা ছিলেন হৈসল রাজসভার সদস্য।[4] রাজসভার সাহিত্যের অধিকাংশ কন্নড় ভাষায় রচিত হলেও[5] বিশিষ্ট দার্শনিক মধ্ব রচিত দ্বৈত দর্শন-বিষয়ক বৈষ্ণব সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রচিত হয় সংস্কৃত ভাষায়।[6]
স্থানীয় ছন্দে কন্নড় সাহিত্য রচনা প্রথম জনপ্রিয় করে তোলেন সভাকবিরা। এই ছন্দগুলি ছিল ‘সাঙ্গত্য’ (বাদ্যযন্ত্র সহকারে গেয় রচনা), ‘ষট্পদী’ (ছয় চরণের কবিতা), ‘রাগালে’ (অমিত্রাক্ষর ছন্দে গীতিকবিতা) ও ‘ত্রিপদী’ (তিন চরণের কবিতা)।[7] যদিও জৈন লেখকেরা গদ্য-পদ্য মিশ্রিত প্রথাগত ‘চম্পু’ ছন্দের ব্যবহার অব্যাহত রাখেন।[8] শুধুমাত্র সভাকবিরাই নন, অভিজাত পুরুষ, সেনাধ্যক্ষ, মন্ত্রী, বিভিন্ন মঠের সঙ্গে যুক্ত সন্ন্যাসী ও সন্তেরাও এই যুগে কন্নড় সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন।[9]