বাকস্বাধীনতা
From Wikipedia, the free encyclopedia
বাকস্বাধীনতা হচ্ছে স্বতন্ত্র্য ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের; নির্ভয়ে, বিনা প্রহরতায় বা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা, অনুমোদন গ্রহণের বাধ্যতা ব্যতিরেকে নিজেদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার সমর্থিত মুলনীতি।[2][3][4][5] "মত প্রকাশের স্বাধীনতা" (freedom of expression) শব্দপুঞ্জটিকেও কখনও কখনও বাকস্বাধীনতার স্থলে ব্যবহার করা হয়, তবে এক্ষেত্রে বাকস্বাধীনতার সাথে মাধ্যম নির্বিশেষে তথ্য বা ধারণার অন্বেষণ, গ্রহণ এবং প্রদান সম্পর্কিত যেকোন কার্যের অধিকারকেও বুঝিয়ে থাকে।
বেসামরিক ও রাজনৈতিক আন্তর্জাতিক চুক্তির (আইসিসিপিয়ার) মানবাধিকার সনদ এর ১৯ নং অনুচ্ছেদ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী অভিব্যক্তির স্বাধীন প্রকাশকে শনাক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে "প্রত্যেকের অধিকার আছে নিজের মতামত এবং অভিব্যক্তি প্রকাশ করার। এই অধিকারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে নিজের স্বাধীনচেতায় কোনো বাধা ব্যতীত অটল থাকা; পুরো বিশ্বের যে কোনো মাধ্যম থেকে যে কোনো তথ্য অর্জন করা বা অন্য কোথাও সে তথ্য বা চিন্তা মৌখিক, লিখিত, চিত্রকলা অথবা অন্য কোনো মাধ্যম দ্বারা জ্ঞাপন করার অধিকার"। এই ১৯ নং অনুচ্ছেদ পরবর্তীতে আইসিসিপিয়ার দ্বারা সংশোধিত হয়, উদ্ধৃতিতে বলা হয়; এইসব অধিকারের চর্চা বিশেষায়িত নিয়ম এবং দায়িত্বকে ধারণ করে; তবে যদি এই চর্চার দ্বারা কারো সম্মান হানি হয় বা জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় তবে কিছু ক্ষেত্রে এর অবাধ চর্চা রহিত করা হয়।[6]
বাকস্বাধীনতাকে চূড়ান্ত হিসেবে স্বীকার নাও করা হতে পারে। মর্যাদাহানি, কুৎসা রটানো, পর্নোগ্রাফি, অশ্লীলতা, আক্রমণাত্মক শব্দ এবং মেধাসম্পদ, বাণিজ্যিক গোপনীয়তা, জননিরাপত্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাকস্বাধীনতা যদি অন্য কারও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে বা কারও অপকার করে তবে অপকার নীতির মাধ্যমে বাকস্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করা যেতে পারে। এই অপকার নীতির ধারণাটি প্রণয়ন করেছিলেন জন স্টুয়ার্ট মিল তার অন লিবার্টি নামক গ্রন্থে। সেখানে তিনি বলেন, "একটি সভ্য সমাজে কোন ব্যক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তার উপর তখনই ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করা যায়, যখন তা অন্য কোন ব্যক্তির উপর সংঘটিত অপকারকে বাঁধা দেয়ার জন্য করা হয়।"[7] অবমাননা নীতির ধারণাও বাকসীমাবদ্ধতার ন্যায্যতা প্রতিপাদনে ব্যবহৃত হয়, এক্ষেত্রে যেসব কথায় সমাজে অবমাননার সৃষ্টি করে সেগুলোর প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এক্ষেত্রে বক্তব্যের পরিমাণ, সময়, বক্তার উদ্দেশ্য, কতটা সহজে এড়িয়ে যাওয়া যায় - এসব বিবেচনায় আনা হয়।[8] ডিজিটাল যুগের বিবর্তনের সাথে সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন উপায় আবিষ্কৃত হওয়ায় বাকস্বাধীনতার প্রয়োগ ও এর বিধিনিষেধ ব্যবস্থার বিতর্ক আরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন চীন সরকারের উদ্যোগে নেয়া গোল্ডেন শিল্ড প্রোজেক্টে জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয় সাম্ভাব্য অসন্তোষজনক তথ্যকে দেশের বাইরে যেতে বাঁধা দান করে।
জনসম্মুখে অপরিচিত ব্যক্তির অনুমতি ব্যতীত ছবি তোলার ক্ষেত্রে বাকস্বাধীনতার যে অধিকার তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।[9][10]