খাগড়াছড়ি জেলা
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
খাগড়াছড়ি জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি একটি পার্বত্য জেলা। উপজেলার সংখ্যানুসারে খাগড়াছড়ি বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা।[1]
খাগড়াছড়ি | |
---|---|
জেলা | |
বাংলাদেশে খাগড়াছড়ি জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°২′৩০″ উত্তর ৯১°৫৯′৪০″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
প্রতিষ্ঠাকাল | ৭ নভেম্বর, ১৯৮৩ |
সংসদীয় আসন | ২৯৮ পার্বত্য খাগড়াছড়ি |
সরকার | |
• সাবেক সংসদ সদস্য | কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) |
আয়তন | |
• মোট | ২,৬৯৯.৫৬ বর্গকিমি (১,০৪২.৩১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২২) | |
• মোট | ৭,১৪,১১৯ |
• জনঘনত্ব | ২৬০/বর্গকিমি (৬৯০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৪.০৭% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৪৪০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ৪৬ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
খাগড়াছড়ি জেলার মোট আয়তন ২৬৯৯.৫৬ বর্গ কিলোমিটার।[2]বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২২°৩৮´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৪´ থেকে ৯২°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে খাগড়াছড়ি জেলার অবস্থান।[2] রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ২৭০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১১১ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে রাঙ্গামাটি জেলা ও চট্টগ্রাম জেলা, পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলা, পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা।
২০২২ এর জনশুমারী ও গৃহগননা প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী খাগড়াছড়ি জেলার মোট জনসংখ্যা ৭১৪,১১৯ জন। তম্মধ্যে পুরুষ- ৩৫৭,৪০৬ জন, মহিলা- ৩৫৬,৪৭৭ জন, হিজড়া ৫১ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ২৬০ জন।[3]
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৪৬.৫৬% মুসলিম, ১৬.৭৫% হিন্দু, ৩৫.৯২% বৌদ্ধ এবং ০.৬২% খ্রিস্টান ও ০.১৬% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। এ জেলায় বাঙালী জনসাধারণের পাশাপাশি চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা প্রভৃতি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।[2]
১৮৬০ সালের ২০ জুন রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টি হয়। জেলা সৃষ্টির পূর্বে এর নাম ছিল কার্পাস মহল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হয়।[2]
খাগড়াছড়ি একটি নদীর নাম। নদীর পাড়ে খাগড়া বন থাকায় পরবর্তী কালে তা পরিষ্কার করে জনবসতি গড়ে উঠে, ফলে তখন থেকেই এটি খাগড়াছড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে।
১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে রামগড় উপজেলার মহামুনি পাড়ায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১৭ জন পাকসেনা নিহত হয়।[2]
খাগড়াছড়ি জেলা ৯টি উপজেলা, ৯টি থানা, ৩টি পৌরসভা, ৩৮টি ইউনিয়ন, ১২১টি মৌজা, ১৩৮১টি গ্রাম ও ১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।[6]
খাগড়াছড়ি জেলায় মোট ৯টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:
ক্রম নং | উপজেলা | আয়তন[2] (বর্গ কিলোমিটারে) |
প্রশাসনিক থানা | আওতাধীন এলাকাসমূহ |
---|---|---|---|---|
০১ | খাগড়াছড়ি সদর | ২৯৭.৯২ | খাগড়াছড়ি সদর | পৌরসভা (১টি): খাগড়াছড়ি |
ইউনিয়ন (৫টি): খাগড়াছড়ি সদর, কমলছড়ি, গোলাবাড়ী, পেরাছড়া এবং ভাইবোনছড়া | ||||
০২ | গুইমারা | ২৩৪.৫৬ | গুইমারা | ইউনিয়ন (৩টি): গুইমারা, হাফছড়ি এবং সিন্দুকছড়ি |
০৩ | দীঘিনালা | ৬৯৪.১২ | দীঘিনালা | ইউনিয়ন (৫টি): মেরুং, বোয়ালখালী, কবাখালী, দীঘিনালা এবং বাবুছড়া |
০৪ | পানছড়ি | ৩৩৪.১১ | পানছড়ি | ইউনিয়ন (৫টি): লোগাং, চেঙ্গী, পানছড়ি, লতিবান এবং উল্টাছড়ি |
০৫ | মহালছড়ি | ২৪৮.৬৪ | মহালছড়ি | ইউনিয়ন (৪টি): মহালছড়ি, মুবাছড়ি, ক্যায়াংঘাট এবং মাইসছড়ি |
০৬ | মাটিরাঙ্গা | ৪৪১.৪০ | মাটিরাঙ্গা | পৌরসভা (১টি): মাটিরাঙ্গা |
ইউনিয়ন (৭টি): তাইন্দং, তবলছড়ি, বড়নাল, গোমতি, বেলছড়ি, মাটিরাঙ্গা এবং আমতলী | ||||
০৭ | মানিকছড়ি | ১৬৮.৩৫ | মানিকছড়ি | ইউনিয়ন (৪টি): মানিকছড়ি, বাটনাতলী, যোগ্যাছোলা এবং তিনটহরী |
০৮ | রামগড় | ২৮৭.৮৯ | রামগড় | পৌরসভা (১টি): রামগড় |
ইউনিয়ন (২টি): রামগড় এবং পাতাছড়া | ||||
০৯ | লক্ষ্মীছড়ি | ২২০.১৫ | লক্ষ্মীছড়ি | ইউনিয়ন (৩টি): লক্ষ্মীছড়ি, দুল্যাতলী এবং বর্মাছড়ি |
খাগড়াছড়ি জেলার সাক্ষরতার হার ৪৪.০৭%।[6] এ জেলায় রয়েছে:
খাগড়াছড়ি জেলার প্রধান ৩টি নদী মাইনী নদী, চেঙ্গি নদী এবং ফেনী নদী।[13]
গ্যাস (সেমুতাং গ্যাসফিল্ড, মানিকছড়ি)
সেগুন, গামারী, কড়ই, গর্জন, চাপালিশ, জারুল, বাঁশ ইত্যাদি।[14]
খাগড়াছড়ি জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক। সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়। এছাড়া ঢাকা থেকে মীরসরাই-রামগড় সড়ক হয়ে সরাসরি খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়।[15]
সরকারি ও কথ্য ভাষা হিসেবে বাংলা প্রচলিত। স্থানীয় চাটগাঁইয়ারা চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে। এছাড়াও অন্যান্য উপজাতি ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা হিসেবে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা ইত্যাদি প্রচলিত।[16]
চাকমাদের বিজু উৎসব, মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব এবং ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসব উল্লেখযোগ্য।[2] এছাড়া প্রত্যেক ধর্মের লোকেরা আলাদা আলাদা ধর্মীয় উৎসব পালন করে থাকে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.