ইরাক রাজতন্ত্র
From Wikipedia, the free encyclopedia
ইরাক রাজতন্ত্র (আরবি: المملكة العراقية al-Mamlakah al-‘Irāqiyyah) উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর ১৯২১ সালের ২৩ আগস্ট ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনে গঠিত হয়েছিল। লীগ অব নেশনসের মেন্ডেটের পর ১৯২০ সালে এটি ব্রিটেনের হস্তগত হলেও সেবছরের বিদ্রোহের কারণে মূল মেন্ডেট পরিকল্পনা বদলে ইঙ্গ-ইরাকি চুক্তির মাধ্যমে ও ব্রিটিশদের মিত্র হাশিমিদের অধীনে একটী অর্ধস্বাধীন রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩০ সালে ইঙ্গ-ইরাকি চুক্তি (১৯৩০) স্বাক্ষর হয়। ১৯৩২ সালে ইরাক রাজতন্ত্র পূর্ণ স্বাধীনতা পায়।[1] হাশিমি শাসকদের অধীন স্বাধীন ইরাক রাজতন্ত্র তার পুরো সময়জুড়ে বেশ অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে গেছে। সুন্নি শাসিত ইরাকে এসিরিয়ান, ইয়াজিদি ও শিয়ারা অসন্তুষ্ট ছিল। ১৯৩৬ সালে প্রথম সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সময়জুড়ে কয়েকটি অভ্যুত্থান ঘটে এবং ১৯৪১ এ তা চরমে পৌছায়।
ইরাক রাজতন্ত্র المملكة العراقية al-Mamlakah al-‘Irāqiyyah | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৯৩২–১৯৫৮ | |||||||||
জাতীয় সঙ্গীত: নেই রাজকীয় সঙ্গীত السلام الملكي আস সালাম আল মালাকি রাজকীয় স্যালুট | |||||||||
অবস্থা | ব্রিটিশ আশ্রিত রাজ্য (১৯২১-১৯৩২) | ||||||||
রাজধানী | বাগদাদ | ||||||||
প্রচলিত ভাষা | আরবি এসিরিয়ান কুর্দি | ||||||||
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম শিয়া ইসলাম খ্রিষ্টান ইহুদি ধর্ম ইয়াজদানিবাদ | ||||||||
সরকার | ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র ও সেকুলার রাষ্ট্র | ||||||||
বাদশাহ | |||||||||
• ১৯৩২–১৯৩৩ | প্রথম ফয়সাল | ||||||||
• ১৯৩৩–১৯৩৯ | গাজি | ||||||||
• ১৯৩৯–১৯৫৮ | দ্বিতীয় ফয়সাল | ||||||||
প্রধানমন্ত্রী | |||||||||
• ১৯২০-১৯২২ | আবদুর রহমান আল গিলানি (প্রথম) | ||||||||
• ১৯৫৮ | আহমেদ মুখতার বাবান (শেষ) | ||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | যুদ্ধ মধ্যবর্তী সময়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, স্নায়ুযুদ্ধ | ||||||||
• যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা | ৩ অক্টোবর ১৯৩২ | ||||||||
• ১৯৪১ ইরাকি বিদ্রোহ | ১ এপ্রিল ১৯৪১ | ||||||||
• বাগদাদ চুক্তি | ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৫ | ||||||||
• আরব ফেডারেশন গঠন | ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৮ | ||||||||
আয়তন | |||||||||
১৯৫৮ | ৪,৩৮,৩১৭ বর্গকিলোমিটার (১,৬৯,২৩৫ বর্গমাইল) | ||||||||
জনসংখ্যা | |||||||||
• ১৯৫৮ | ৬৪৮৮০০০ | ||||||||
|
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রশিদ আলি আল-কাইলানির নেতৃত্বে গোল্ডেন স্কয়ার অফিসাররা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজার অভিভাবক আবদুল্লাহর শাসন উৎখাত করে। নাৎসিপন্থি ইরাক সরকার ১৯৪১ সালের মে মাসে ইঙ্গ-ইরাকি যুদ্ধে মিত্রশক্তির কাছে পরাজিত হয়। ইরাক এরপর মিত্রশক্তির ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার হতে থাকে। একই সময় কুর্দি নেতা মোস্তফা বারজানি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন। এটি ব্যর্থ হলে বারজানি ও তার অণুসারিরা সোভিয়েত ইউনিয়ন চলে যান।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে ইরাক জাতিসংঘে যোগ দেয় এবং আরব লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের সাথে সরকারের চুক্তির বিরুদ্ধে বাগদাদজুড়ে আল ওয়াসবাহ আন্দোলন নামক প্রতিবাদ শুরু হয়। কমিউনিস্টরা এতে সমর্থন দেয়। এতে সমর্থক বাড়তে থাকে। কিন্তু আরব লীগের অন্যান্য সদস্যদের সাথে ইরাকও ১৯৪৮ আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধে যোগ দেয়ার পর সামরিক আইন জারি হলে তা বাধাগ্রস্ত হয়।
১৯৫৮ সালের ফেব্রুয়ারি জর্ডানের বাদশাহ হুসাইন বিন তালাল ও আবদুল্লাহ বিন আলি মিশর ও সিরিয়ার নতুন গঠিত ইউনিয়নের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে দুই হাশিমি রাজতন্ত্রের মধ্যে ইউনিয়ন গড়ার প্রস্তাব করেন। এর ফলে সে বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি আরব ফেডারেশন গঠন করা হয়। একই বছর আবদুল করিম কাসেমের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থানে রাজতন্ত্র উৎখাত হলে আরব ফেডারেশনের সমাপ্তি ঘটে।