শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

অ্যানাগ্রাম

উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

অ্যানাগ্রাম
Remove ads

অ্যানাগ্রাম বা বদলিরব (গ্রিক anagrammenos যার অর্থ নতুন করে লেখা) এক ধরনের শব্দ খেলা। একটি শব্দ বা বাক্যের বর্ণগুলোকে নতুনভাবে সাজালে অন্য শব্দ বা বাক্য পাওয়া যেতে পারে; পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে প্রাপ্ত নতুন শব্দ বা বাক্যটিকে মূল শব্দ বা বাক্যটির অ্যানাগ্রাম বলে। পুনর্বিন্যাসের সময় একটি বর্ণ কেবলমাত্র একবারই ব্যবহার করা যাবে এবং কোন বর্ণ বাদ দেয়া যাবে না।[] অ্যানাগ্রামের উদাহরণ দেয়া যেতে পারে: Silver-haired congenial scum বাক্যটিকে পুনর্বিন্যস্ত করে লিখা যায় Louise is clever and charming। আবার Abnormal intellect = Malcontent liberal। যিনি অ্যনাগ্রাম তৈরি করেন তাকে অ্যানাগ্রামবিদ বা অ্যানাগ্রামিস্ট বলা হয়।[]

Thumb
বাংলা মাননীয় শব্দটির অ্যানাগ্রাম গঠন প্রক্রিয়া
Thumb
ইংরেজি Listen শব্দটির অ্যানাগ্রামিক অ্যানিমেশন
Remove ads

শব্দ বিশ্লেষণ

অ্যানাগ্রাম শব্দটি ইংরেজিতে এসেছে ফরাসি anagramme শব্দ থেকে ষোড়শ শতাব্দীর শেষ দিকে। শব্দটি দু'টি গ্রিক শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। গ্রিক ভাষা থেকে এসেছে। গ্রিক ভাষায় ana শব্দের অর্থ নিচ থেকে উপরে এবং gramma শব্দের অর্থ বর্ণ[] এর বাংলা পরিশব্দ করা হয়েছে বদলিরব। বদলি হলো বর্ণগুলোর স্থান বদল করে নতুন তৈরী হওয়া রব বা শব্দ। []

ইতিহাস

অক্ষর পুনঃসজ্জার এই খেলাটি সর্বপ্রথম শুরু হয়েছিল প্রাচীন গ্রিসরোমে, গ্রিকলাতিন ভাষায়। সে সময় অ্যানাগ্রাম তৈরি হতো কিছুটা লাগামহীনভাবে। সপ্তদশ শতাব্দীর দিকে লাতিন ও গ্রিক ভাষার গণ্ডি পেরিয়ে ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষায় ছড়িয়ে পড়ে অ্যানাগ্রাম তৈরির কৌশল।[]

সাহিত্য

সারাংশ
প্রসঙ্গ

বাংলা

অ্যানগ্রামে শব্দের বা বাক্যের বর্ণগুলো স্থান বিনিময় কিংবা নতুন ভাবে সাজিয়ে নতুন শব্দ বা বাক্য গঠন করে।অ্যানাগ্রামিস্ট মনোরঞ্জন রায় অর্ধ অ্যানাগ্রাম ও পূর্ণ অ্যানাগ্রাম নামে দুটি বিভাগে ভাগ করে অ্যানাগ্রাম কবিতা/সনেট রচনা করেন। তিনি অ্যানাগ্রাম সনেট অভিন্ন বর্ণ এবং সমোচ্চারিত বর্ণ (স/শ/ষ, ন/ণ, জ/য, ত/ৎ, র/ড়/ঢ়) এর ভিত্তিতে সনেট রচনা করেন।পূর্ণ অ্যানাগ্রামে সম্পূর্ণ কবিতার উপরের দিক থেকে নিচের দিকে পঙ্ক্তি/চরণের বর্ণগুলো স্থান বিনিময় করে নতুন শব্দ গঠন করে কবিতা/সনেট রচনা করেন আর অর্ধ অ্যানাগ্রামে প্রতিটি পঙ্ক্তিতে মধ্যভাগ হতে বাম থেকে ডানে এবং ডান থেকে বামে বর্ণের স্থান বিনিময় করে নতুন শব্দ গঠন করে কবিতা/সনেট রচনা করেন।

অ্যানাগ্রামিস্ট মনোরঞ্জন রায় (তিনি বাংলা সাহিত্যে প্রথম অ্যানাগ্রাম কবিতা ও সনেট রচয়িতা) এর "পাতার প্রতিচ্ছবি" গাণিতিকধারার কাব্যগ্রন্থ থেকে সংগৃহীত একটি পূর্ণ অ্যানাগ্রাম সনেট  "ঝরা-মন"। তাঁর এ সনেটে প্রথম চরণের বর্ণগুলো (অভিন্ন বর্ণের ভিত্তিতে) পুর্নবিন্যাস করে চতুর্দশ চরণ গঠিত, এভাবে দ্বিতীয় চরণ থেকে ত্রয়োদশ চরণ গঠিত.....।

ঝরা-মন

সবারে মনে হীনতা নদীকূট, কবি!

সত্রাসে ভাবে রন্ধ্রের রঙ্গে অসি রত;

রতি ভাঙ্গে, হবি ধুধু, নব ভুলে রবি

নব পণে রহ নত, মন দিকে ক্ষত;

রশি খুলে মজ মন, জমে খাস রস।

নবজ নীড়ে পূবের বিকলি ধূসর

রথ পাপে; মান তত কে ঢাকে দিবস

সব দিকে ঢাকে তত ন মাপে পাথর

রস ধূলি কবি; রবে পুড়ে নিজ বন;

সরস খামে জনম জমলে খুশির

তক্ষকে দিন মতন; হরণে পবন

বিরলে ভুবন ধুধু বিহঙ্গে ভাতির।

তরসি অঙ্গের রন্ধ্রে রবে ভাসে ত্রাস,

বিকট কুদিন তান হীনে মরে বাস।

" তমসাচ্ছন্ন" সনেটটি কবির "পাতার প্রতিচ্ছবি " গাণিতিকধারার কাব্যগ্রন্থ থেকে সংগৃহীত একটি অর্ধ অ্যানাগ্রাম সনেট।কবি অর্ধ অ্যানাগ্রাম সনেটে প্রতিটি পঙ্ক্তিতে মধ্যভাগ হতে বাম থেকে ডানে এবং ডান থেকে বামে বর্ণগুলো (অভিন্ন বর্ণের ভিত্তিতে) পুনর্বিন্যাস করে নতুন শব্দ গঠন করে কবিতা/সনেট রচনা করেন।

তমসাচ্ছন্ন

সামতট কবি, ধুধু বিকট তমসা,

নত ঘাড়ে পঁচা জুজু চাঁপড়ে ঘাতন,

নব পাকে পাবি তত বিপাকে পাবন,

সাধনা দেবীর তত রবি দেনা ধসা;

সান মনে তপ জুজু পতনে মনসা,

নব জিয়ে লব তত বলয়ে জীবন

সাহস রচে, কানন কাচের সহসা

নব পশে রসে তত শ্বাসের পবন।

তার বাঁকে হারে তত রে হাঁকে বারতা,

থাক বিরসের জুজু রসে রবি কথা।

বাদিত রসের জুজু রসে রাত দিবা,

বিছরি বটের ধুধু রটে বরি ছবি,

বাকিতে চিত্ররা মম রাত্র চিতে কিবা,

বিসরি ভবের ধাঁধা রবে ভরি সবি।

" ভারাক্রান্ত" সনেটটি কবির "পাতার প্রতিচ্ছবি " গাণিতিকধারার কাব্যগ্রন্থ থেকে সংগৃহীত একটি পূর্ণ অ্যানাগ্রাম সনেট। তাঁর এ সনেটে প্রথম চরণের বর্ণগুলো (সমোচ্চারিত বর্ণের ভিত্তিতে) পুর্নবিন্যাস করে চতুর্দশ চরণ গঠিত, এভাবে দ্বিতীয় চরণ থেকে ত্রয়োদশ চরণ গঠিত.....।

ভারাক্রান্ত

নদীতে খালে কারণ রে ভরে তরস

সমানে হারে সমক্ষে; রে খুঁজে মনের

সকাণ্ড খরা ভয়ের; রে পাপে রোষের

নমিত মন; মজে কে, কে সাধে বিবশ;

কত চায়ে রাজ ধুধু রে তপ্ত দিবস;

কব পাখি দেনা তত তরাসে, ঘাটের

রস হরে ঝরে মম; তে ক্ষত জয়ের

রয়ে যত, ক্ষতে মম রে ঝরে হরষ।

রটে ঘাসে রাত তত, না দেখি পাবক;

শব দীপ্ত তরে ধুধু জড়ায়ে চাতক।

শব বিঁধে শাঁকে কে যে মন মত মীন,

রসে রোপে পাড়ে রয়ে ভরা খণ্ড কাশ,

রণে মজে খুঁড়ে ক্ষেম, শরে হানে মাস

শর তরে ভরে নর, কালে খাতে দীন।

" বিষাক্ত বেদন" সনেটটি কবির "পাতার প্রতিচ্ছবি " গাণিতিকধারার কাব্যগ্রন্থ থেকে সংগৃহীত একটি অর্ধ অ্যানাগ্রাম সনেট।কবি অর্ধ-অ্যানাগ্রাম সনেটে প্রতিটি পঙ্ক্তিতে মধ্যভাগ হতে বাম থেকে ডানে এবং ডান থেকে বামে বর্ণগুলো (সমোচ্চারিত বর্ণের ভিত্তিতে) পুনর্বিন্যাস করে নতুন শব্দ গঠন করে কবিতা/সনেট রচনা করেন।

বিষাক্ত বেদন

সত্রাসে পিষ্টক তত কষ্ট পিষে ত্রাস

দে নিভে লহর শেষে রহ লভে নিদে

দেহী শবে রণ জুজু, ন রবে শহীদে,

সবারে চরিত ধাঁধা তরী চরে বাস;

সদাই রত্নের ধুধু রত্নে রই দাস,

দেখিনু অজম ঘুঘু মজ অণু খিদে,

দেহীর নিখিল জুজু লখি নীড়ে হিদে

সনাথ মরণ ধাঁধা নর মথে নাশ।

তমস দাহের তেতে রহে দাস মত,

তক্ষক বনের নানা রণে বক ক্ষত।

শেবধি বাঁশির ঘুঘু রশি বাঁধি বশে

নর মনে রহ তত; হরণে মরণ

সেবক পীড়িত, মম তরী পিক বসে

নদ বেশে, বীরে তত রে বিষে বেদন।

Remove ads

উদাহরণ

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ইংরেজি

এখানে উদাহরণ হিসেবে কিছু অ্যানাগ্রাম উল্লেখিত হল। এগুলো একটি ওয়েবসাইটের কৌতুক পাতা থেকে নেয়া হয়েছে। ওয়েবসাইটটি GNU General Public License আওতায় রয়েছে

আরও তথ্য মূল শব্দ এবং ফ্রেজ, অ্যানাগ্রাম ...

বাংলা

বাংলায় দুই অক্ষর বা দুইবর্ণের তৈরি অসংখ্য অ্যানাগ্রাম রয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে বাংলা অ্যানাগ্রাম কয়েক ভাবে হতে পারে।

  • কারসহ বর্ণের স্থান বদল করে। উদাহরণ- দিশা>শাদি, কবিরাজ>রাজকবি
  • কার ও বর্ণের স্থান বদল করে। জীবন>বিজন, শানিত>শানতি
  • কার বা শুধু কার বদল করে। টাক>কাট, বিপনি>বিপিন
  • শুধু বর্ণের স্থান বদল করে।
  • উচ্চারণের উপর ভিত্তি করে।
  • যুক্তবর্ণ ভেঙ্গে দিয়ে আংশিক পাল্টিয়ে
আরও তথ্য মূল শব্দ ও বাক্যাংশ, অ্যানাগ্রাম ...

আরো একপ্রকার অ্যানাগ্রাম রয়েছে যদিও অনেকে সেটাকে অ্যানাগ্রাম বলতে নারাজ। যেমন- তবিয়ত>তবিয়ত, নতুন>নতুন, কদমকলি>কদমকলি

Remove ads

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads