শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

আমলকী

উদ্ভিদের প্রজাতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

আমলকী
Remove ads

আমলকী (বৈজ্ঞানিক নাম: Phyllanthus emblica) ফাইলান্থাসি পরিবারের ফাইলান্থুস গণের একপ্রকার ভেষজ ফল।[] সংস্কৃত ভাষায় এর নাম 'আমলক'। ইংরেজি নাম amla বা Amloki,[][] Malacca tree, emblic myrobalan,[] বা emblic [][],myrobalan[] এরা রোমশ বিহীন বা রোমশ পর্ণমোচী বৃক্ষ। বাংলাদেশে সহ উপ ভারতীয় মহাদেশে বেশি পাওয়া যায়। এই ফলটির গুণ অপারেশন। এটি অনেক ধরনের উপকার করে শরীরের জন্য প্রায় সাতটির মত, এটিকে "মাদার অফ ফ্রুট" বা "Mother of Fruit" বলে।

Thumb
আমলকী

দ্রুত তথ্য আমলকী Phyllanthus emblica, সংরক্ষণ অবস্থা ...
Remove ads

বর্ণনা

Thumb
আমলকীর আচার, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
Thumb
আমলকী ফল ও আমলকীর ভিতরের অংশ।

আমলকী গাছ ৮ থেকে ১৮ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট হতে পারে, পাতা ঝরা প্রকৃতির। হালকা সবুজ পাতা, যৌগিক পত্রের পত্রক ছোট, ১/২ ইঞ্চি লম্বা হয়। হালকা সবুজ স্ত্রী ও পুরুষফুল একই গাছে ধরে। ফল হালকা সবুজ বা হলুদ ও গোলাকৃতি ব্যাস ১/২ ইঞ্চির কম বেশি হয়। কাঠ অনুজ্জ্বল লাল বা বাদামি লাল। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে ই দেখা যায়। গাছ ৪/৫ বছর বয়সে ফল দেয়। আগস্ট - নভেম্বর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। বীজ দিয়ে আমলকীর বংশবিস্তার হয়। বর্ষাকালে চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়।

Remove ads

বিস্তার

আমলকী গাছ প্রায় সারাদেশে দেখা যেতে পারে। এটি প্রধানত বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, সিরিয়া ইত্যাদি দেশে চাষ করা হয়। প্রাকৃতিক পরিবেশে অনেক স্থানেই এই গাছগুলি জন্মাতে দেখা যেতে পারে। পার্ক, উদ্যান, বাগান, প্রাকৃতিক অরণ্য ইত্যাদি স্থানে এই গাছগুলি চারা দেওয়া হয়। ফলে পার্ক, উদ্যান, বাগান গুলোতেও আমলকী গাছ পার্কের শোভা বৃদ্ধিতে দেখা যায়।

চিকিৎসা-গবেষণা

সারাংশ
প্রসঙ্গ

আমলকী নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। এতে দেখা গেছে যে, এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে পারে। [] প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওপোরোসিস রোগে আমলকির রস কিছু কাজ করে।[] কয়েক ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও এর কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। [] প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগেও আমলকি কার্যকর বলে ইঁদুরের উপর চালিত গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে। প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগের পরে ক্ষতিগ্রস্ত প্যানক্রিয়াস (অগ্ন্যাশয়) -এর ক্ষত সারাতে আমলকী কার্যকর। [] আমলকীর ফল, পাতা ও ছাল থেকে তৈরি পরীক্ষামূলক ওষুধে কিছু রোগ নিরাময়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে যেমন- ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, প্রদাহ এবং কিডনি-রোগ। [১০][১১][১২] আমলকি মানুষের রক্তের কোলেস্টেরল-মাত্রা হ্রাস করতে পারে বলে প্রমাণ রয়েছে [১৩]

ডায়াবেটিক ইঁদুরের উপর চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমলকির রস রক্তের চিনির মাত্রা কমাতে পারে এবং লিভারের কর্মক্ষমতা পুনরোদ্ধারে সাহায্য করতে পারে। [১৪] আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন-সি বা এস্করবিক এসিড থাকে (৪৪৫ মিগ্রা/১০০ গ্রাম) [১৫]। তা সত্ত্বেও আরো অন্যান্য উপাদান নিয়ে মতভেদ আছে এবং আমলকির 'এন্টি-অক্সিডেন্ট'রূপে কার্যকারিতার পেছনে মূল ভূমিকা ভিটামিন-সি এর নয়, বরং 'এলাজিটানিন' নামক পদার্থসমূহের বলে মনে করা হয়। [১৬] যেমন এমব্লিকানিন-এ (৩৭%), এমব্লিকানিন-বি (৩৩%), পানিগ্লুকোনিন (১২%) এবং পেডাংকুলাগিন (১৪%).[১৭] এতে আরো আছে পানিক্যাফোলিন, ফিলানেমব্লিনিন-এ, বি, সি, ডি, ই এবং এফ। [১৮] এই ফলে অন্যান্য 'পলিফেনল'ও থাকে। যেমন- ফ্ল্যাভোনয়েড, কেমফেরল, এলাজিক এসিড ও গ্যালিক এসিড। [১৬][১৯]

ব্যবহার

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
কাঁচা আমলকী

আমলকীর ভেষজ গুণ রয়েছে অনেক। ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয়। আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে।[] পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকীতে পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে ৩ গুণ ও ১০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। আমলকীতে কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।[] একজন বয়স্ক লোকের প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ দরকার। দিনে দুটো আমলকী খেলে এ পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়। আমলকী খেলে মুখে রুচি বাড়ে।[২০] স্কার্ভি বা দন্তরোগ সারাতে টাটকা আমলকী ফলের জুড়ি নেই। এছাড়া পেটের পীড়া, সর্দি, কাশি ও রক্তহীনতার জন্যও খুবই উপকারী।[২০]

লিভার ও জন্ডিস রোগে উপকারী বলে আমলকী ফলটি বিবেচিত। আমলকী, হরিতকীবহেড়াকে একত্রে ত্রিফলা বলা হয়। আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ত্রিফলা স্বাস্থ্যের জন্য বহুমাত্রিক উপকারী।[২১] এ তিনটি শুকনো ফল একত্রে রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা ছেঁকে খালি পেটে শরবত হিসেবে খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বিভিন্ন ধরনের তেল তৈরিতে আমলকী ব্যবহার হয়। কাঁচা বা শুকনো আমলকী বেটে একটু মাখন মিশিয়ে মাথায় লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম আসে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] কাঁচা আমলকী বেটে রস প্রতিদিন চুলে লাগিয়ে দুতিন ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এভাবে একমাস মাখলে চুলের গোড়া শক্ত, চুল উঠা এবং তাড়াতড়ি চুল পাকা বন্ধ হবে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ঔষধি গুণ

  • আমলকী কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে।
  • বমি বন্ধে কাজ করে।
  • দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি হতে উপকার পাওয়ার জন্য আমলকীর নির্যাস উপকারী।
  • এটি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক।
  • এটি দাঁত,চুল ও ত্বক ভাল রাখে।
  • এটি খাওয়ার রুচি বাড়ায়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথাব্যথা, অম্ল,রক্তশূন্যতা, বমিভাব দূর করতে সাহায্য করে।
  • বহুমূত্র রোগে এটি উপকারী।
  • চোখ উঠলে কাঁচা আমলকীর রস দিনে ২ ফোটা করে দুই বার দিলে ভাল আরাম পাওয়া যায়।
  • চুল ওঠা দূর করতে আমলকী বেশ উপকারী।[২২]
  • চুলের খুসকির সমস্যা দূর করে।

ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে

  • আমলকীর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণ। গবেষণায় বলা হয়, আমলকী ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
  • প্রতিদিন সকালে আমলকীর জুস খাওয়া পেপটিক আলসার প্রতিরোধে কাজ করে।[]
  • আমলকী শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং ওজন কমায়।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আমলকী খুব দ্রুত কাজ করে। আমলকীর গুঁড়ো মধু দিয়ে প্রতিদিন খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।[][২৩]
Remove ads

স্থানীয় নাম

halïlaj or ihlïlaj (اهليلج هليلج)

  • খাসি ভাষায় sohmylleng
  • তেলুগু ভাষায় rasi usiri ( రాశి ఉసిరి కాయ)
  • তামিল এবং কানাড়া ভাষায় nellikkaai or nellikaayi
  • থাই ভাষায় ma kham pom (มะขามป้อม)
  • চীনা ভাষায় anmole (庵摩勒)
Remove ads

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads