শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
আল কাজিনী
সেলযুক পারস্যের গ্রীক বংশদ্ভূত ইরানী জ্যোতির্বিদ। উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
আবু আল-ফাত আবদুল-রহমান মনসুর আল কাজিনী বা সাধারণভাবে আল-কাজিনী (أبوالفتح عبدالرحمن منصور الخازنی (ফারসি), বিকাশমান ১১১৫–১১৩০) ছিলেন সেলযুক পারস্যের গ্রীক বংশদ্ভূত[১] ইরানী[২][৩] জ্যোতির্বিদ।[৪] সুলতান সানজারির (জিজ আল-সানজারি, ১১১৫) পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর জ্যোতির্বিজ্ঞানের সারণীগুলি মধ্যযুগের গাণিতিক জ্যোতির্বিদ্যার অন্যতম প্রধান রচনা হিসাবে বিবেচিত হয়।[৫]:১০৭ তিনি স্থির নক্ষত্রের অবস্থান এবং তার জন্মস্থান মার্ভের অক্ষাংশের জন্য তির্যক অভিক্রমণ ও সময় সমীকরণ প্রদান করেন।[৬]:১৯৭ তিনি বিভিন্ন ক্যালেন্ডার পদ্ধতি এবং ক্যালেন্ডারের বিভিন্ন হেরফের নিয়েও ব্যাপকভাবে লিখেছেন।[৫] তিনি স্কেল এবং পানির-ভারসাম্য সম্পর্কিত একটি বিশ্বকোষের লেখক ছিলেন।[৭]
Remove ads
জীবন
আল-কাজিনী ছিলেন তৎকালীন খোরাসানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মারভের[৬]:১৯৭[৮] মুক্তি পাওয়া কৃতদাস। তিনি তার নামটি পেয়েছিন তাঁর মালিকের (আবু’ল হুসেন আলী ইবনে মুহাম্মদ আল-খাজিন আল-মারওয়াজি) কাছ থেকে, তার মালিক মারভের খাজাঞ্চি ছিলেন।[৫]:১০৭ খাজিন শব্দটি ইসলামের প্রাথমিক আমল থেকেই খাজাঞ্চির উপাধি ছিল।[৯] তাঁর মালিক আল-কাজিনী যাতে প্রথম শ্রেণির পড়াশোনা করতে পারে তার ব্যবস্থা করেছিলেন।[৫] কেউ কেউ মনে করেন যে আল-কাজিনী ওমর খৈয়ামের শিষ্য ছিলেন।[৮] যদিও এটি জানা যায়নি, তবে তিনি খৈয়াম সম্পর্কে লিখেছেন, বিশেষ করে তিনি তাঁর উদ্ভাবিত পানি-ভারসাম্যের বিবরণ দিয়েছেন (এবং আল-আসফজারি এটি উন্নত করেছেন)।[৬]:১৭৬ কিছু কিছু উৎস অনুসারে তিনি ১০৭৯ সালে ফার্সি ক্যালেন্ডারের সংস্কারে তাঁর সাথে সহযোগিতা করেছিলেন।[১০]:১৯৯
আল কাজিনী একজন নম্র মানুষ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি তার কাজের জন্য হাজারো দিনারকে অস্বীকার করে বলেছিলেন যে তাঁর বেঁচে থাকার খুব বেশি দরকার নেই কেননা তাঁর পরিবারে কেবল তাঁর বিড়াল এবং তিনি নিজে ছিলেন।[৭] আল কাজিনী ছিলেন ইসলামী যুগের কেবলমাত্র বিশজন জ্যোতির্বিদদের মধ্যে একজন যারা মূল পর্যবেক্ষণ ছিলেন।[৭] তাঁর কাজগুলি চতুর্দশ শতাব্দীতে বাইজান্টিয়ামে পৌঁছেছিল, বিশেষত তারা জর্জ ক্রিসোকোকেস এবং পরে থিওডোর মেলিটেনিয়টস এর মাধ্যমে অধ্যয়ন করেছিল।[৫]:১০৭
Remove ads
কৃতিত্ব
সারাংশ
প্রসঙ্গ
আল কাজিনী সানজার ইবনে মালিকশাহ এবং সেলযুক সাম্রাজ্যের সুলতানের অধীনে একজন উচ্চ সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন বলে মনে হয়। তিনি তার বেশিরভাগ কাজ মার্ভে করেছিলেন, মার্ভ তার গ্রন্থাগারের জন্য পরিচিত ছিল।[৭] তাঁর সর্বাধিক বিক্ষাত রচনাগুলি হল "জ্ঞানের দাঁড়িপাল্লার গ্রন্থ", "জ্যোতির্বিজ্ঞানসংক্রান্ত জ্ঞান শাস্ত্র", এবং "সানজারের জ্যোতির্বিজ্ঞানসংক্রান্ত সারণী"।[৭]
"জ্ঞানের দাঁড়িপাল্লার গ্রন্থ" হল মধ্যযুগীয় বলবিজ্ঞান এবং উদস্থিতিবিজ্ঞান এর একটি বিশ্বকোষ যা পঞ্চাশটি অধ্যায়ে বিভক্ত আটটি বই এর সমাহার।[৭] এটি উদস্থিতিবিজ্ঞানের ভারসাম্য এবং স্থিতিবিদ্যা এবং উদস্থিতিবিজ্ঞানের পিছনের ধারণার একটি অধ্যয়ন, এটিতে অন্যান্য অসম্পর্কিত বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।[৭] "জ্ঞানের দাঁড়িপাল্লার গ্রন্থ" এর চারটি পৃথক পান্ডুলিপি এখনো পর্যন্ত টিকে আছে।[৭] আল-কাজিনীর আগের প্রজন্মের আল-আসফিজারির দাঁড়িপাল্লা উন্নত করে সানজারের কোষাগারের জন্য দাঁড়িপাল্লা তৈরি করেন আল-কাজিনী।[৭] ভয়ে সানজারের খাজাঞ্চি আল-আসফিজারির দাঁড়িপাল্লা নষ্ট করে দিয়েছিল; তিনি এই খবর শুনে দুঃখে ভরে গেলেন।[৭] আল-কাজিনী আল-আসফিজারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে তাঁর দাঁড়িপাল্লাকে "সংযুক্ত দাঁড়িপাল্লা" বলেছেন।[৭] দাঁড়িপাল্লার অর্থ ছিল "সত্য বিচারের দাঁড়িপাল্লা"। খাজাঞ্চিখানা এই দাঁড়িপাল্লা দিয়ে কোন ধাতুগুলি মূল্যবান এবং কোনটি রত্নগুলি আসল বা জাল ছিল তা নির্ধারণ করতো।[৭] "জ্ঞানের দাঁড়িপাল্লার গ্রন্থ" -তে আল-কাজিনী কোরান থেকে বিভিন্ন উদাহরণসহ বর্ণনা করেছেন যে তার দাঁড়িপাল্লা ধর্মের সাথে খাপ খায়।[৭] আল-কাজিনী যখন তার দাঁড়িপাল্লার সুবিধাগুলি ব্যাখ্যা করেন তিনি বলেন যে এটি "দক্ষ কারিগরদের কাজ সম্পাদন করে", এর সুবিধা তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিকভাবে নির্ভুল।[৭]
"জ্যোতির্বিজ্ঞানসংক্রান্ত জ্ঞান শাস্ত্র" অপেক্ষাকৃত একটি সংক্ষিপ্ত রচনা।[৭] এটিতে সাতটি অংশ রয়েছে এবং প্রতিটি অংশে আলাদা আলাদা বৈজ্ঞানিক উপকরণ বরাদ্দ করা হয়েছে।[৭] সাতটি যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে: একটি ট্রাইকুয়েট্রাম, ডায়োপ্ট্রা, একটি "ত্রিভুজাকার যন্ত্র", একটি চতুর্ভুজ, প্রতিচ্ছবি যুক্ত যন্ত্র, একটি জ্যোতির্বিজ্ঞানাগার এবং খালি চোখে জিনিস দেখার সহজ কৌশল। গ্রন্থটিতে প্রতিটি উপকরণ এবং এর ব্যবহার বর্ণনা করা হয়েছে।[৭]
কথিত আছে যে মার্ভের শাসক সুলতান সানজার এর জন্য "সানজারের জ্যোতির্বিজ্ঞানসংক্রান্ত সারণী" রচনা করা হয়েছিল এবং তাঁর দাঁড়িপাল্লা সানজারের খাজাঞ্চিখানার জন্য তৈরি হয়েছিল।[৭] "সানজারের জ্যোতির্বিজ্ঞানসংক্রান্ত সারণী" এর সারণীতে ছুটির দিন, উপবাস ইত্যাদি যুক্ত ছিল।[৭] সারণীতে তেতাল্লিশটি ভিন্ন ভিন্ন তারার আপাত মান এবং (জ্যোতিষশাস্ত্র) প্রকৃতির পাশাপাশি অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ বর্ণনা করা হয়েছিল।[৭] কথিত আছে যে এই কাজের জন্য আল-কাজিনী মার্ভের বিভিন্ন উচ্চ মানের যন্ত্রপাতিযুক্ত মানমন্দিরে পর্যবেক্ষণ করেন।[৭]
Remove ads
আরও দেখুন
- আল-কাজিনী, জ্ঞানের ভারসাম্যের বই (ইংরেজি)। খানিকফের ইংরেজি অনুবাদের একটি উইকিমিডিয়া পিডিএফ এবং ১৮৫৯ সালে জার্নাল অব দ্য ওরিয়েন্টাল সোসাইটি-এর সম্পাদকদের একটি একক আরবি পাণ্ডুলিপি থেকে পুনর্গঠন করা হয়। ২০১৫ সালে একমাত্র ইংরেজি অনুবাদ পাওয়া যায়।
- আল-কাজিনী, জ্ঞানের ভারসাম্যের বই (ইংরেজি)। ইন্টারনেট সংরক্ষণাগারে এটির একটি লিঙ্ক।
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads