শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোম্পানি

উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোম্পানি
Remove ads

ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি যেটি ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে হিসেবে কার্যরত (সংক্ষিপ্ত ইআইআর), পূর্ব ও উত্তর ভারতে রেলওয়ে ব্যবস্থা চালু করে। যেখানে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে, গ্রেট ইন্ডিয়ান উপদ্বীপ রেলওয়ে, সাউথ ইন্ডিয়া রেলওয়ে, বোম্বে, বারোডা এন্ড সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া রেলওয়ে এবং নর্থ ওয়েস্টার্ন রেলওয়ের মতো কোম্পানিগুলো ভারতের অন্যান্য স্থানে কার্যরত ছিল। এই কোম্পানিটি ১ জুন ১৮৪৫ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠা করা হয় যার মূলধন ছিল £৪,০০০,০০০, যেটির বেশিরভাগ অংশ লন্ডনেই তোলা হয়।[]

দ্রুত তথ্য ধরন, শিল্প ...
Thumb
ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ের মানচিত্র, ১৮৬৩
Remove ads

১৮৪৫-১৮৪৯

১৩জন সদস্য নিয়ে প্রথম পরিচালকের বোর্ড গঠিত হয় ১৮৪৫সালে। রোনাল্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিফেনসন সে কোম্পানির প্রথম ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন।

রোনাল্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিফেনসন (পরবর্তীতে স্যার রোনাল্ড, কিন্তু অধিক পরিচিত ম্যাকডোনাল্ড স্টিফেনসন[]) এবং ৩জন সহকারী ইংল্যান্ড থেকে যাত্রা করেন ১৮৪৫সালে এবং মির্জাপুর হয়ে কলকাতা (তখনকার ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী) থেকে দিল্লি পর্যন্ত রেলওয়ে পথের জন্য খরচ পর্যালোচনা করেন। [] তারা পর্যবেক্ষণ করে জানলো যে, জায়গার জন্য অতিরিক্ত কর না থাকলে প্রতি মাইলে একটি জোড়া-রাস্তা নির্মাণে £১৫০০০ এর বেশি খরচ হবেনা। তখনই ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং লন্ডনে এটির জন্য টাকা সংগ্রহ করা হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানির মাঝে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৮৪৯সালের ১৭আগস্ট, যার উদ্দেশ্য ছিল রাজমহল এবং কলকাতার মাঝে একটি পরীক্ষামূলক লাইন নির্মাণ ও পরিচালনা করা, যেটি ১৬১ কিমি (১০০ মাইল) দীর্ঘ ও £১ মিলিয়ন ব্যয়ের, এবং এটিকে পরবর্তীতে মির্জাপুর দিয়ে দিল্লি পর্যন্ত বর্ধিত করা হতে পারে।[]

Remove ads

১৮৫০-১৮৫১

১৮৫০সালের ৭মে, ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ম্যাকডোনাল্ড স্টিফেনসন, কোম্পানির প্রধান ইঞ্জিনিয়ার জর্জ টার্নবুল এবং ইঞ্জিনিয়ার স্লেটার হাওড়া (হুগলি নদী হতে), কলকাতা হতে রাণিগঞ্জের রাস্তা বুর্ধান পর্যন্ত একটি পর্যালোচনা চালান। জুনে, সরকার টার্নবুল এবং তার ইঞ্জিনিয়ারদের মাটিতে রাস্তার দাগ কাটার অনুমতি দেয়না। যদিও ১জুলাই থেকেই কাজের বিজ্ঞাপন দেয়া হয় এবং ৩১ জুলাই তারা ছয়টি চুক্তি পায় তখন ৮০ ফুট (২৪ মিটার) লম্বা বাঁশের খুঁটি শ্রীরামপুর এবং বালি খালে খেজুর গাছের উপর নির্মাণ করা হয়।

Remove ads

১৮৫১-১৮৫৩

১৮৫১ সালের ২৯ জানুয়ারি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের প্রথম জমির মালিকানা পায়। টার্নবুল এবং অন্যান্য ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়াররা রাস্তার জন্য ব্যাপক পর্যালোচনা শুরু করেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি তারা ৫,০০০-ফুট-প্রশস্থ (১,৫০০-মিটার) সান নদীতে (গঙ্গার বৃহত্তম অঙ্গ) থাকা একটি ক্রসিংকে নির্বাচন করে। মে এবং জুনে রানিগঞ্জ যাওয়ার সেরা রাস্তা নির্বাচন করা হয়। হাওড়া স্টেশনের জন্য ১৬ই জুন পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়।

১৮৫১ সালের ৩১ অক্টোবর ১১টি চুক্তি আসে। ডিসেম্বরে টার্নবুল তার পর্যালোচনা চালিয়ে যায়ঃ তিনি বুর্ধান থেকে রাজমহল যাওয়ার পথকে নির্দিষ্ট করেন।[]

গঠন

সারাংশ
প্রসঙ্গ

সকল স্থায়ী রাস্তা, রোলিং স্টককে উত্তমাশা অন্তরীপ (তখন সুয়েজ ক্যানেল ছিল না) দিয়ে জাহাজ দ্বারা ইংল্যান্ড থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। ১৮৫৪ সালের এপ্রিলে, গণনা করা হয় যে ১০০,০০০টনের বেশি রেইল, ২৭,০০০ টন চেয়ার এবং ৮০০০ টনের কিছু চাবি, পিন, ফিস-প্লেট, নাট এবং বোল্ট যুক্ত করা হয়।[]

রোলিং স্টক

১৮৫৯সালে, ৭৭টি ইঞ্জিন, ২২৮টি কোচ এবং ৮৪৮টি মালবাহী ছিল।[]

স্লিপার্স

যদিও স্লিপারের জন্য বিশাল পরিমাণ শাল কাঠ নেপাল থেকে আনা হয়, তবুও আরও স্লিপারের প্রয়োজন ছিল। এজন্য বাল্টিকের মনোহর স্লিপার ইংল্যান্ডে আনা হয় ও ভারতে পাঠানো হয়।[]

সেতু

পরিকল্পনা অনুযায়ী গঙ্গার শাখার উপর তৈরি সেতুগুলো ইটের তৈরি হবেঃ হাজার-হাজার ইটের প্রয়োজন ছিল। তখন ইট তৈরির জন্য দক্ষ ব্যক্তি খুবই কম ছিল এবং যেসকল কাদামাটি পাওয়া যেত সেগুলো ইট তৈরির জন্য অনুপযুক্ত ছিল। উপযুক্ত মাটিকে নদী দিয়ে পরিবহন করে আনা খুবই কষ্টসাধ্য ছিল।ইট পাওয়া বড় সমস্যায় পরিণত হয়, সেজন্য ইংল্যান্ড থেকে ব্যাপক পরিমাণে লোহা আমদানি করা হয় কারণ ভারতে সেসময় লোহার তেমন জিনিস ছিলনা। ১৮৫৭সালে ভারত থেকে বেশিরভাগ লৌহ উপাদান চুরি যায়।[]

দিল্লিতে পুরোনো যমুনা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৮৬৩সালে[] যেটি লোহে কা পুল (লোহার সেতু) হিসেবে পরিচিত ছিল[] আর এটির নির্মাণ শেষ হয় ১৮৬৬সালে। এটিতে ১২টি স্প্যান রয়েছে। সেতুর নির্মাণ খরচ ছিল ১৬,১৬,৩৩৫/-[] Initially it was made as single railway line and it was upgraded to double line in 1913[১০]

Remove ads

১৮৫৪-১৮৬৩

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ের প্রথম রেলগাড়ী, ১৮৫৪

সেতু, সুড়ঙ্গ এবং কলেরা

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সেতু ছিল সান নদীর (তখন ইরেজী সোয়ান নদী) উপরের সেতু, যেটি তখনকার সময় বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু ছিল। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সেতু ছিল কিউল ও হুল্লোহুর নদীর উপর সেতু এবং আদজাই নদীর উপর সেতু। মঙ্গীর সুড়ঙ্গটি খুবই কষ্টসাধ্য বিষয় ছিল। ১৮৫৯এর শেষের দিকে, রাজমহল জেলায় কলেরা আক্রমণ করে, যেটিতে ৪০০০শ্রমীক এবং অনেক ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার মারা যায়। [১১]

রেললাইন উন্মোচন

১৮৫৪ সালের ১৫ আগস্ট হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত (৩৭ কিমি অথবা ২৩ মাইল) যাত্রীদের জন্য রেলপরিষেবার উন্মোচন ঘটে । সেটি হাওড়া স্টেশন ছাড়ে ৮ঃ৩০ এ এবং হুগলিতে পৌঁছে ৯১মিনিটে।

হাওড়া থেকে বেনারস ৫৪১ মাইল (৮৭১ কিলোমিটার) লাইন উন্মুক্ত ছিল। উত্তর ভারতে প্রথম ট্রেনে উঠার জন্য ৩,০০০এর বেশি আবেদন পাওয়া যায়। প্রথম ট্রেনটি সেটির সর্বোচ্চ ক্ষমতায় চলেছিল। এটির তিনটি প্রথম-শ্রেণী ও দুটি দ্বিতীয়-শ্রেণীর বগী ছিল। তাছাড়া তৃতীয়-শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য এটিতে তিনটি ট্রাকও ছিল। এই সবগুলোই ভারতে তৈরি করা হয়েছিল, কেননা ইংল্যান্ড থেকে যেসকল বগী আনার কথা ছিল সেগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সমুদ্রে তলিয়ে যায়।

Thumb
১৫আগস্ট, ১৮৫৪সালপ হাওড়া স্টেশনে উত্তর ভারতের প্রথম ট্রেনের জন্য প্লাক

প্রথম ১৬সপ্তাহে, কোম্পানিটি ১০৯,৬৩৪জন যাত্রীকে পরিবহন করতে সক্ষম হয়ঃ ৮৩,১১৮জন তৃতীয় শ্রেণী, ২১,০০৫জন দ্বিতীয় শ্রেণী এবং ৫৫১১জন প্রথম শ্রেণী। কোম্পানির মোট আয় ছিল, £৬৭৯৩।[১২]

  • ১সেপ্টেম্বর, ১৮৫৪সালে হুগলির পান্ডুয়াতে।
  • ১৮৫৫সালের ফেব্রুয়ারিতে বুর্ধানে।
  • রানিগঞ্জে ৩ফেব্রুয়ারি ১৮৫৫সালে।[] ১৮৫৫সালে, ৬১৬,২৮১জন যাত্রীকে পরিবহন করা হয় এবং ১০০,০০০টন কয়লা রানিগঞ্জ থেকে হাওড়া নেওয়ার চুক্তি হয়।
  • ১৮৫৮সালে আদজাইতে।
  • রাজমহলে (গঙ্গা নদীতে) ১৮৫৯সালপর অক্টোবরে।
  • বেনারাে গঙ্গা নদী বরারব ১৮৬২সালের ডিসেম্বরে।[১৩]

শাখা লাইনগুলোকে ধরলে এটি সর্বমোট ৬০১ মাইল (৯৬৭ কিলোমিটার)।

উদ্‌যাপন

১৮৬৩সালের ৫ফেব্রুয়ারি, একটি বিশেষ ট্রেন জর্জ টার্নবুল, লর্ড এলজিন, সেসিল বিয়াডোন এবং অন্যান্যদেরকে নিয়ে হাওড়া থেকে বেনারস পর্যন্ত দুদিন ধরে নিয়ে যায় এবং তারা যাওয়ার পথের পর্যালোচনা করেন।[১৪] তারা প্রথম রাত মঙৃগীরের নিকট জামালপুরে থামে। তারা সান নদীতে থামে ও সেটিকে পর্যালোচনা করে।[]

প্রধান ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে জর্জ টার্নবুল ১৮৫১ থেকে ১৮৬২সাল পর্যন্ত সকল নির্মাণ কাজের দায়িত্বে ছিলেন। ৭ফেব্রুয়ারি ১৮৬৩সালে ভারতীয় অফিশিয়াল গ্যাজেটএ তাকে 'ভারতের প্রথম রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ার' বলা হয়।

Remove ads

উনবিংশ শতাব্দীর শেষে উন্নয়ন

কানপুর থেকে এলাহবাদ পর্যন্ত লাইনটি ১৮৫৯সালে খুলে দেয়া হয়। ১৮৬০সালপ, কানপুর-এতাওয়াহ অঞ্চল যাতায়াতের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ১৮৬২ ও ১৮৬৬সালে হাওড়া ও দিল্লির মাঝের সকল খালি জায়গা পূরণ করা হয় এবং আগ্রার সাথে সংযোগ স্থাপন করা হয়। এলাহবাদ ও দিল্লিতে যমুনার উপর সেতুগুলো যথাক্রমে ১৮৬৫ এবং ১৮৬৬সালে নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়। ১৮৬৭সালের জুনে এলাহবাদ-জবলপুর শাখাটি পূরণ হয় এবং পেনিনসুলা রেলওয়ের মাধ্যমে জবলপুরের সাথে সংযোগ স্থাপন হয়।[১৫] ৩১ডিসেম্বর ১৮৭৯সালে, ব্রিটিশ ভারত সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি কিনে নেয়।

Remove ads

সরকারের অধিগ্রহণ ও বিভাজন

১৯২৫ সালের ১লা জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারত সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ের ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করে এবং এটিকে ছয়টি বিভাগে ভাগ করেঃ হাওড়া, আসানসোল, দানাপুর, এলাহবাদ, লাকনো এবং মুরাদাবাদ

১৯৫২সালের ১৪এপ্রিল, ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহ্‌রু এই রেলওয়েকে ইন্ডিয়া রেলওয়ের প্রথম ছয়টি অঞ্চলের মধ্যে প্রধান দুটি অঞ্চলে বিভক্ত করে দেন । তাদের একটি, উত্তর রেলর ৩টি ভাগ ছিলঃ এলাহবাদ, লাকনো এবং মোরাদাবাদ। অপরদিকে, অন্যটি পূর্ব রেলর তিনটি ভাগ ছিলঃ হাওড়া, আসানসোল, দানাপুর এবং সম্পূর্ণ বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে।[১৬]

Remove ads

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads